নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : ১০ বছর বয়সী স্কুলছাত্রকে অপহরণের পর হত্যার দায়ে ৪ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে নারায়ণগঞ্জের একটি আদালত। মঙ্গলবার (৫ মার্চ) দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ উম্মে সরাবন তহুরা এই রায় ঘোষণা করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুর রহিম।
২০১৮ সালের ৫ জুন অপহরণের শিকার হয় নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার বানিয়াদী এলাকার চৈতন্য চন্দ্র দাসের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র জয়ন্ত চন্দ্র দাস। পরদিন বিকেলে তার মরদেহ একই এলাকার একটি পরিত্যক্ত টিনের ঘরে তার মরদেহ পাওয়া যায়। এই ঘটনায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- উপজেলার মঙ্গলখালী এলাকার সিরাজুল ইসলামের ছেলে শাহীন (৩৫), বলাইনগর এলাকার জাহাঙ্গীরের ছেলে আলমগীর (২৭), বানিয়াদী এলাকার রাজকুমারের ছেলে অনিক চন্দ্র দাস (২৭) ও একই এলাকার সন্তোষ চন্দ্র দাসের ছেলে আশিক চন্দ্র দাস (৩০)।
আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. আসাদুজ্জামান জানান, রায় ঘোষণার সময় অনিক কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণার পর তাকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। পলাতক বাকি তিন আসামির বিরুদ্ধে আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন।
মামলার নথির বরাতে এই পুলিশ কর্মকর্তা জানান, ২০১৮ সালের ৫ জুন রাতে নিখোঁজ হয় রূপগঞ্জের বানিয়াদী এলাকার চৈতন্য চন্দ্র দাসের ১০ বছর বয়সী ছেলে জয়ন্ত চন্দ্র দাস। স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র ছিল জয়ন্ত। পরদিন সকালে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণের জন্য অজ্ঞাত নম্বর থেকে চৈতন্যের মুঠোফোনে কল আসে। ছেলের ব্যাপারে জানতে চাইলে কলটি কেটে দিয়ে নম্বরটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। ওইদিন বিকেলে পরিত্যক্ত একটি টিনের ঘর থেকে হাত, পা ও মুখ বাঁধা অবস্থায় শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
এই ঘটনায় চৈতন্য চন্দ্র দাস বাদী হয়ে রূপগঞ্জ থানায় ৩ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৫ জনের বিরুদ্ধে অপহরণের পর হত্যা ও লাশ গুমের অভিযোগে মামলা করেন। মামলার তদন্ত শেষে ৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ।
আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুর রহিম বলেন, ‘মুক্তিপণের টাকা না পেয়ে শিশুটিকে হত্যা করে আসামিরা। বিচার চলাকালীন অবস্থায় এক আসামি মারা গেছেন। বাকি চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত তাদের সকলকে মৃত্যুদ-ের আদেশ দিয়েছেন।’
এই মামলায় বাদী, তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ ১২ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন বলেও জানান রাষ্ট্রপক্ষের এই আইনজীবী।
রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে নিহতের পিতা ও মামলার বাদী চৈতন্য চন্দ্র দাস রায় দ্রুত কার্যকরের দাবি জানান।