নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( রূপগঞ্জ প্রতিনিধি ) : নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার তারাব পৌরসভার বরাব (কবরস্থান রোড) এলাকায় একটি নির্মানাধীন বাড়িতে বিস্ফোরনের ঘটনায় দুই যুবক গুরুতর আহত হয়েছে। ৩১ই আগস্ট বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ৩ টার দিকে কুমিল্লা হাউজ নামে একটি দোতলা বাড়িতে এ ঘটনাটি ঘটে। বিস্ফোরণে ওই ভবনটির ছাদের একাংশ ও দেয়াল ধসে পড়াসহ আশপাশের বিভিন্ন ভবনের জানালার কাঁচ ভেঙে যায়। এ ঘটনার পর রূপগঞ্জে জঙ্গী আতংক ছড়িয়ে পড়ে।
পুলিশ, র্যাব ও ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকারী দল বিস্ফোরণের পর থেকেই বাড়িটি ঘিরে রাখে। তবে তিতাস গ্যাসের পাইপ ফেটে বিস্ফোরিত হয়ে দুই যুবক গুরুতর আহত হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন পুলিশ। পহেলা সেপ্টেম্বর শুক্রবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে তদন্ত শেষে তিনি বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসমাইল হোসেন।
গ্যাস লাইন বিস্ফোরণে ২ জন দগ্ধ হয়েছেন। দগ্ধরা হলেন, ওই বাড়ির মালিক আবুল খায়েরের ছেলে ইব্রাহীম মিয়া ও তার শ্যালক আয়নাল হক। দগ্ধ ইব্রাহিম ও আয়নালকে পুলিশের হেফাজতে রেখে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে বার্ণ ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে।
সকাল সাড়ে আটটায় বাড়িটি পর্যবেক্ষণের জন্য ডিএমপির বোমা ডিসপোজাল ইউনিট ও সিআইডির একটি বিশেষ দল পৌঁছে বাড়িটি পর্যবেক্ষন করে প্রাথমিক ভাবে বিস্ফোরণের বিষয়টি সন্দেহ জনক হলেও তল্লাশি ও পর্যবেক্ষণ করার পর নিশ্চিত হয়েছেন এটি কোন নাশকতা নয়। পুলিশ বাড়ির মালিক আবুল খায়ের এবং কেয়ারটেকার ও তার স্ত্রীকে আটক করেছে। এ সময় আবুল খায়েরের ছেলে ইব্রাহিমের ল্যাপটপ জব্দ করা হয়।
এ ঘটনার পর্যবেক্ষনে থাকা পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, আবুল খায়ের নামে এক কুয়েত প্রবাসী বেশ কয়েক বছর আগে বরাব কবরস্থান রোড এলাকায় জমি কিনে বাড়িটি নির্মাণ করেন। বাড়ির নাম কুমিল্লা হাউজ রাখা হয় । ওই বাড়িতে আবুল খায়ের ও তার স্ত্রীসহ ছেলে ইব্রাহীম মিয়া ও শ্যালক আয়নাল হক বসবাস করেন।
দ্বিতীয় তলার দুইটি ইউনিট রয়েছে। এক ইউনিটে আবুল খায়ের ও তার স্ত্রী থাকেন। অপর ইউনিটে থাকেন ইব্রাহীম ও আয়নাল হক। ভোর সাড়ে ৩টার দিকে ওই বাড়ির বিল্ডিংয়ের দ্বিতীয় তলায় হঠাৎ বিকট শব্দ হয়ে বিস্ফোরন হয়। বিস্ফোরণে ওই ভবনটির ছাদের একাংশ ও দেয়াল ধ্বসে পড়াসহ আশপাশের বিভিন্ন ভবনের জানালার কাঁচ ভেঙে যায়। এসময় ভেতরে থাকা ইব্রাহীম ও আয়নাল দগ্ধ হয়।এ বিষ্ফোরনে পুরো এলাকায় জঙ্গী আতংক ছড়িয়ে পড়ে। সকাল সাড়ে ৮ টায় বাড়িটি পর্যবেক্ষণের জন্য ডিএমপির বোমা ডিসপোজাল ইউনিট ও সিআইডির একটি বিশেষ দল পৌঁছে বাড়িটি পর্যবেক্ষন করেন।
ফায়ার সার্ভিসের জেলা কর্মকর্তা মামুনুর রশীদ জানান, প্রাথমিক ভাবে বিস্ফোরণের বিষয়টি সন্দেহ জনক হলেও তল্লাশি ও পর্যবেক্ষণ করার পর নিশ্চিত হওয়া গেছে এটি কোন নাশকতা নয়। এজন্য আতকিংত হওয়ার কিছু নেই।
এ ঘটনায় জেলা পুলিশ সুপার মঈনুল হক জানিয়েছেন, আতংকের কিছু নেই, এটি নাশকতার কোন ঘটনা নয়। গ্যাস লাইনের সংযোগ থেকে এ বিস্ফোরণ ঘটেছে। বিস্ফোরণের কারণ উদঘাটনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমানকে প্রধান করে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, এরআগে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থেকে বিপুল পরিমান অস্ত্র গুলাবারুদ সহ রকেট লাঞ্চার উদ্ধার করেছে জেলা পুলিশ প্রশাসন। এবং নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় অভিযানে জেএমবির (তামিম-সারোয়ার গ্রুপের) একাধিক সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। এছাড়াও আটককৃতদের তথ্যানুযায়ী প্রশাসনের বিশেষ তৎপরতা রয়েছে। অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে ব্যাবের কর্মকর্তারা।