নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( রূপগঞ্জ সংবাদ দাতা ) : নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার দাউদপুর ইউনিয়নের কলিঙ্গা এলাকায় শীতলক্ষ্যা নদীর তীরের জমিতে প্রাণ আরএফএল কোম্পানীর বালু ভরাটকে কেন্দ্র করে ঐ কোম্পানির কর্মচারীদের সঙ্গে ৮ই মার্চ সোমবার গ্রামবাসীর দফায় দফায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও রক্তক্ষয়ী সংঘর্র্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ৩৭ জন আহত হয়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শর্টগানের ২ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোঁড়ে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানায়, নরসিংদীর পলাশ থানার ডাঙ্গা কাজিরচর এলাকার শীতলক্ষ্যা নদীর পূর্ব পাশে প্রাণ আর এফ এল কোম্পানী অবস্থিত । আর এ কোম্পানির সীমান্তবর্তী এলাকা হলো নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থানার দাউদপুর ইউনিয়নের কলিঙ্গা গ্রাম। ওই কোম্পানির সুবিধার্থে কর্তৃপক্ষ কলিঙ্গা গ্রামের শীতলক্ষ্যা নদীর পশ্চিম পাশে গাড়ি পার্কিং ও ঝেটি নির্মাণের উদ্দেশ্যে বালু ভরাট শুরু করে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ অনেকের জমি না কিনেই বালু ভরাট করছিলো প্রতিষ্ঠানটি। সেখানে পুরো জমি না কিনে গাড়ি পার্কিং ও ঝেটি নির্মাণের লক্ষ্যে বালু ভরাট করতে গেলে সোমবার বিকালে গ্রামবাসীর বাঁধা দেয়। তখন গ্রামবাসীর বাঁধা না মেনে প্রাণ আরএফএল কোম্পানির নিয়োজিত কর্মচারী ও বহিরাগত সন্ত্রাসীদের নিয়ে বালু ভরাট করতে থাকেন। এ সময় গ্রামবাসীর সঙ্গে কোম্পানির কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা বাকবিতন্ডা ও তর্কবিতর্কে জড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে প্রাণ আরএফএল কোম্পানির কর্মকর্তা কর্মচারী ও পলাশ থানা থেকে দলবেঁধে লোকজন এসে গ্রামবাসীর উপর হামলা চালায়। তখন গ্রামবাসীও তাদের উপর পাল্টা হামলা চালায়। উভয় পক্ষ দফায় দফায় ধাওযা পাল্টা ধাওয়া, ইট পাটকেল নিক্ষেপ ও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে পথচারী কামাল হোসেনসহ কলিঙ্গা গ্রামের কাইযুম, ফোরকান, ফয়সাল মিয়া, সানি, বিপ্লব, বেলায়েত, ফয়সাল আহাম্মেদ, আল-আমিন, তপু, রাসেল এবং প্রাণ আরএফএল কোম্পানির আজিম, রাসেল, মাহমুদ, শিশিরসহ উভয় পক্ষের অন্তত ৩৭ জন আহত হয়। খবর পেয়ে রূপগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে দুই রাউন্ড শর্টগানের ফাঁকা গুলি বর্ষণ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
কলিঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা ও প্রান আরএফএল কোম্পানীর দখলে নেওয়া জমির মালিক নজরুল ইসলাম বলেন, কলিঙ্গা গ্রামের হারেছুল, জুলহাস, কাইয়ূম, খালেকসহ আমার জমি না কিনেই জোরপূর্বক বালু ভরাট করতে যায় প্রাণ আরএফএল কোম্পানির কর্মকর্তা কর্মচারীরা। বাঁধা দিতে গেলেই প্রান আরএফ এল কোম্পানির প্রশাসনিক কর্মকর্তা ফয়সাল আহাম্মেদের নেতৃত্বে গ্রামবাসীর উপর হামলা চালানো হয়। হামলায় অস্ত্রধারী বহিরাগতরা সন্ত্রাসীরা অংশ নেয়।
এ ব্যাপারে প্রাণ আরএফএল প্রশাসনিক কর্মকর্তা ফয়সাল আহাম্মেদ বলেন, আমাদের নিজের জমিতে বালু ভরাট করছিলাম। স্থানীয়রা অন্যায়ভাবে কাজে বাঁধা দেয়ায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহসিনুল কাদির বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিযন্ত্রণে আনতে দুই রাউন্ড শর্টগানের ফাঁকা গুলি বর্ষণ করে। এই ঘটনায গ্রামবাসীর পক্ষ তৌহিদ নামে একজন বাদী হয়ে অভিযোগ দায়ের করেছেন। তবে এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।