নারাণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( রূপগঞ্জ প্রতিনিধি ) : রোববার রাতে মুড়াপাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থী হোসেন আহম্মেদ রুবেল হত্যার নেপথ্যে আইপিএল জুয়াই অন্যতম কারণ বলে জানা গেছে। নিহতের খবর জানার পর উৎসুক জনতা রাত ১১ টার দিকে ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়ন মিয়ার বাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করে।
ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহে পুলিশ নুরা মিয়া নামে একজনকে আটক করেছে। হত্যার ঘটনায় মুড়াপাড়াসহ আশপাশের এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। বর্তমানে আসামীদের বাড়িঘরসহ আশপাশে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েত করা হয়েছে। হত্যাকান্ডকে ঘিরে বড় ধরণের সংষর্ষের আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। রাত ৯টার দিকে প্রতিপক্ষের সন্ত্রাসীরা হোসেন আহাম্মেদ রুবেলের ছুড়িকাঘাত করে পেটের ভুরি বের করে দেয়।
নিহতের পরিবার, প্রত্যক্ষদর্শী এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার দুইদিন আগে নিহত হোসেন আহম্মেদ রুবেলের বড় ভাই মোমেন মিয়ার সঙ্গে মঙ্গলখালী এলাকার মাদক কারবারী সুরুজ মিয়ার আইপিএল জুয়া নিয়ে ৪০ হাজার টাকা বাজি হয়। বাজিতে মোমেন মিয়া পরাজয় হয়। রোববার সন্ধ্যায় সুরুজ মিয়া ও তার সহযোগী নয়ন ও কাজল তার পথরোধ করে বাজির টাকা দাবী করে। পরে দেওয়ার কথা বলে মোমেন চলে আসে।
নিহতের ভাবী হালিমা আক্তার জানান, রাত ৮ টার দিকে সুরুজ মিয়া, নয়ন মিয়া, কাজল মিয়াসহ প্রায় ১০ জন মোমেন মিয়ার বাড়িতে গিয়ে টাকা দাবী করে। টাকা দিতে অস্বীকার করলে সন্ত্রাসীরা তাকে বেধড়ক পেটাতে থাকে। এসময় সে কৌশলে দৌড়ে পালিয়ে যায়। পরে হোসেন আহম্মেদ রুবেল ঘটনার কারণ জিজ্ঞেস করতে এগিয়ে আসলে সন্ত্রাসীরা তাকে বেধড়ক পেটায়। একপর্যায়ে তাকে উপর্যপুরি ছুরিকাঘাত করে বীরদর্পে চলে যায়। স্থানীয় স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে মুমূর্ষ অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে, রাত ১১ টার দিকে স্থানীয় অতি উৎসাহী লোকজন নয়ন মিয়ার বাড়িতে অতর্কিত হামলা ও ভাংচুর করে। পরে বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। আগুনে সেমিপাকা বাড়ি পুড়ে ছাঁই হয়ে গেছে।
স্থানীয় এলাকাবাসী ও বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলখালী এলাকার মৃত চাঁন মিয়ার ছেলে সুরুজ মিয়া এখন মুড়াপাড়া এলাকার ত্রাস। সে দুই বছর আগে নিহত হওয়া তারা মিয়ার ছোট ভাই। তারা মিয়া নিহত হওয়ার পর থেকেই সুরুজ মিয়া এলাকায় অপরাধের সা¤্রাজ্য গড়ে তুলে। গড়ে তোলে নিজস্ব সন্ত্রাসী বাহিনী। তার বাহিনীর অন্যতম সদস্য নগড় এলাকার আজিমউদ্দিন বোবার ছেলে নয়ন ও মঙ্গলখালী এলাকার বাদল মিয়ার ছেলে কাজল। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বলেন, মুড়াপাড়া ইউনিয়নের মাদক ব্যবসার বড় ডিলার সুরুজ মিয়া। এছাড়া জমি দখল, পরিবহনে চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্ম করে বেড়ায় এ বাহিনী।
রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান মনির বলেন, হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত কাউকে ছাড় দেয়া হবেনা। সন্দেহজনকভাবে একজনকে আটক করা হয়েছে। হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িতদের আটকের চেষ্টা চলছে।