নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( সৈয়দ সিফাত লিংকন ) : রমজান শুরুর আগেই লাগামহীনভাবে বেড়েছে শহরের গরু, খাশির গোশতের মূল্য। কেজিতে বেড়েছে ৫০ থেকে ৭০ টাকা। মূল্য বৃদ্ধির কারণে ব্যবসায়ীরা নানা অজুহাত দাঁড় করালেও ক্রেতাদের অভিযোগ শুধু বেশি দাম নেওয়ার জন্যই এইসব বাহানা দাঁড় করাচ্ছেন গোশত ব্যবসায়ীরা। এছাড়াও বাজার তদারকির অভাবে কসাইরা সিন্ডিকেট করে গরু ও খাশির গোশতের দাম বৃদ্ধি করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
গত শুক্রবার সরেজমিনে দেখা গেছে, বিভিন্ন গোশতের দোকানে ছিল ক্রেতা সমাগম। ছুটির দিনকে কেন্দ্র করে মধ্যবিত্ত থেকে বিত্তবান পরিবারের সদস্যের সুস্বাদু খাবারের তালিকায় গোশতের ব্যপক চাহিদা রয়েছে। তবে মূল্য বৃদ্ধির কারণে চাহিদা থাকলেও পরিমানে কম নিতে হয়েছে ক্রেতাদের। প্রতি কেজি ষাড় গরুর গোশত বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ টাকা দরে, গাই গরুর গোশত ৫২০, এছাড়াও হাড় ছাড়া সলিট গোশত নিতে হলে যোগ হচ্ছে আরো শতখানিক টাকা। খাশি প্রতিকেজিতে ৮০০-৮২০, বরকি ৭০০ টাকা দওে বিক্রি হচ্ছে। এক লাফে গোশতের দাম কেজিতে বাড়ানো হয়েছে ৫০ থেকে ৭০ টাকা। এ দাম রমজানে আরো বাড়বে বলেও কয়েকজন গোশত ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন।
এদিকে হঠাৎ করেই কেজিতে ৫০ টাকা দাম বাড়ায় বিপাকে পড়েছেন সাধারণ মানুষ । দাম বেশি থাকার পরও বাসায় অতিথি আসায় জামতলার বাসিন্দা জাকিরে বাজারে গরুর গোশত কিনতে এসেছিলেন। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকুরিজীবী রাকিব বলেন, গরুর গোশতের দাম যেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে করে অনেক আগেই মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে চলে গেছে। অনেক আগে থেকেই গরুরর গোশত পরিহার করেছি কিন্তু বাসায় অতিথি আসাতে বাধ্য হয়ে কিনতে আসলাম। এক কেজি মাংসের দাম নিচ্ছে ৫৫০ টাকা। তাও হারযুক্ত। আর যদি সলিট নিতে চায় তাহলে গুনতে হবে আরো বাড়তি টাকা।
অন্যদিকে ক্রেতারা বলছেন এখন থেকেই যদি অসাধূ এসকল ব্যবসায়ীদের লাগাম না টানা হয় রমজান মাসে এর মূল্য আকাশ ছুবে। কালির বাজারে আগত ক্রেতা রফিক বলেন, আগে সপ্তাহে এক থেকে দুইদিন গরুর মাংস কিনতাম। কিন্তু ক্রমাগত দাম বৃদ্ধি পেয়ে নাগালের বাইরে চলে যাওয়ায় এখন হয়ত মাসে একবার কিনতে আসি। এবার একমাসের ব্যবধানে দাম ৫০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে।
জানা গেছে, সরকার গরু, খাসি, মহিষ ও ভেড়ার গোশতের একটি মূল্য র্নির্ধাণ করেছিল। সে হিসেবে গরুর গোশতের দাম নির্ধারণ করেছিল ৪৭৫ টাকা কেজি। তবে এ নিয়ম মানছেনা কোন বিক্রেতাই। ৫০০ টাকা দরে বিক্রি করা গরুর গোশত এখন বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ টাকা। কারণ এ নির্ধারিত মূল্য শুধু রমজাান মাসের জন্যই তারা গহন করে।
গোশত দাম বৃদ্ধির বিষয়ে জানতে চাইলে গোশত ব্যবসায়ী মো. বাদশা বলেন, হাট থেকে এখন গরু কিনে আনতে অধিক মূল্য পড়ে যায় তাই গোশতের দাম বাড়িয়ে নেওয়া হচ্ছে। আর সরকার গরুর মাংসের যে দাম নির্ধারণ করে তা রোজার জন্য। আবার রোজার আগে নির্ধারণ করা হলে আমরা সেভাবে বিক্রি করব।
সাধারণ মানুষের ন্যায্য দাবী আদায়ে সোচ্চার অরাজনৈতিক সংগঠন আমরা নারায়ণগঞ্জবাসীর সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন মন্টু বলেন, বাজারে গোশত সহ সকল পন্যের মূল্য বাড়ানো কমানো যদি বাজার মনিটরিং টিম পত্রিকার মাধ্যমে প্রচার করে তাহলে অসাধু ব্যবসায়ীদের হাত রেথকে রক্ষা পেতে পারে সাধারণ মানুষ। এছাড়াও হঠাৎ করেই গোশতের দাম এভাবে বাড়ানোটা কখনই ভালো নয়। এরজন্য সম্পূর্ণ দায়ী বাজার মনিটরিং কর্মকর্তারা। তারা যদি সঠিকভাবে বাজার মনিটরিং করত তাহলে একটি জবাবদীহীতা থাকতো। ইচ্ছেমত যখন তখন দাম বাড়াতে সাহস পেতনা। তাই এর প্রতিরোধে বাজার কমিটি ও বাজার মনিটরিং কমর্কতাদের সোচ্চার হতে হবে। তাছাড়া প্রতিনিয়ত মুল্য হার জনসাধারনের মাঝে প্রচারণার ব্যবস্থা করতে হবে।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী মো. এহতেশামূল হক জানায়, যখন তখন গোশত সহ যেকোন পন্যে এভাবে মূল্য বৃদ্ধি সাধারণ মানুষের জন্য অস্বস্তিকর। আমি ছুটিতে রয়েছি তবে অফিসে এসে অবশ্যই আমাদের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।