যেসব সুযোগকে কাজে লাগিয়েছে খুনি পিন্টু!

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( স্টাফ রিপোর্টার ) : নারায়ণগঞ্জ শহরের আলোচনায় মূল কেন্দ্রবিন্দু এখন স্বর্ণ ব্যবসায়ী প্রবির চন্দ্র ঘোষের নির্মম হত্যাকান্ড। বন্ধুর হাতে বন্ধুর এমন নৃশংস পরিকল্পিত হত্যার ঘটনা গাঁ শিউরে উঠার মতই। যাকে নিখোঁজের ২২ দিনের মাথায় বস্তায় ভর্তি টুকরো করা লাশ একটি বাড়ির সেপটিক টাংকি থেকে উদ্ধার হয়। আর এই ২১ দিন যাবত যেসকল সুযোগকে কাজে লাগিয়ে সামনে এগিয়েছে খুনি পাষন্ড বন্ধু পিন্টু তা নিতান্তই ভাবিয়ে তুলে।

বাড়ির মালিকের অনুপস্থিতি :

স্থানীয়দের কাছে জানা যায়, র্দীঘ ২২ বছর পিন্টু ভাড়া বাসা নিয়ে বসবাস করত আমলাপাড়াস্থ রাশেদুল ইসলাম ওরফে ঠান্ডু মিয়ার বাড়িতে। চার তলা ভবনের দ্বিতীয় তলায় ছিলো তার কক্ষ। তবে এই ভবনের মালিক থাকে বর্তমানে ঢাকায়। ভাড়াটিয়াদের কাছেই ছিলো নিজস্ব ক্ষমতা। যে সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ভাড়াটিয়ারা ছিলো অনেকটাই উন্মুক্ত।

ছিলনা কোন নিরাপত্তা কর্মী :

ব্যবসা কেন্দ্রীক গুরুত্বপূর্ণ এলাকা হলেও এই বাসায় নিযুক্ত ছিলোনা কোন নিরাপত্তা কর্মী। যে যার মত প্রবেশ ও বাহির হওয়া ছিলো সহজ বিষয়।

তৎপর খুনি :

র্স্বণ ব্যবসায়ী প্রবির নিখোঁজের পর থেকেই খুব তৎপর ছিলো খুনি বন্ধু পিন্টু। সন্ধানের দাবিতে বিক্ষোভ, মানববন্ধন এমনকি জেলা প্রশাসক ও প্রশাসনকে দিয়েছে স্মারকলিপিও। মানবিক দৃষ্টিতে এটাকে সমর্থনে রাজপথে সরব দেখা গেছে ব্যবসায়ী, রাজনৈতিক সহ বাম ঘরানার অনেককেই। এ ঘটনাকে ভিন্নখাতে নেয়ার জন্য প্রশাসনের কার্যক্রম নিয়েও প্রশ্ন উঠায়। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে পরিবার ও প্রশাসনকে ধুলো দেয়া ছিলো খুনি পিন্টুর র্ব্যাথ প্রচেষ্টা।

সেপটিক টাংকি :

নিখোঁজ হওয়া স্বর্ণ ব্যবসায়ী প্রবিরের লাশটি উদ্ধার হয় নিচতলায় সেপটিক টাংকিতে।  প্রতিনিয়তই চলাচল থাকলেও সকলের দৃষ্টিকোণের বাহিরে ছিলো এটি। তাই বাড়ি থেকে বের হওয়ার পথটি সরু হওয়ার সুযোগকে কাজে লাগাতে এখানেই মরদেহটির গন্তব্য করা হয়।

সিমেন্টের বস্তা ও ব্যাগের ব্যবহার :

সেপটিক টাংকি থেকে ৩টি সিমেন্টের বস্তায় লাশকে টুকরো করে ব্যাগে ভর্তি করে রাখা  হয়। পুলিশের ধারণা খুনির উদ্দেশ্য ছিলো লাশ গুমের। মরদেহের টুকরো করা লাশের অবশিষ্ট দেহাংশ মিলে ওই ভবনেরই উত্তর দিকের একটি আবর্জনার স্তুপে। স্থানিয়দেরও ধারনা গুমের উদ্দেশ্যেই পিন্টু বাকি অংশ অন্যত্রে সরিয়ে ফেলেিেছল। মানুষের চোখে ধুলো দেয়ার সুযোগ হিসেবে ব্যবহার হয়েছে সিমেন্টের বস্তা ও ব্যাগের ব্যবহার। যেন কেউ সন্দেহের চোখে না দেখে।

মোবাইলে ব্যবহৃত সিম :

র্স্বণ ব্যবসায়ী প্রবির চন্দ্র ঘোষের ব্যবহৃত সিমটি ফেলে দিলেও রেখে দেয় মোবইল সেট। সিমটি দূরবর্তী কোথাও ফেলে দেয়ার সুযোগকে কাজে লাগালেও অবশেষে র্ব্যাথ হয় পিন্টু। চৌকশ পুলিশ সদস্যরা প্রযুক্তির ব্যবহারে মোবাইল সেটটির অনুসন্ধানের মাধ্যমেই অবশেষে বের করে প্রবিরের মরদেহ।

পরিশেষে বুঝা যায়, অন্যায়কারী যতই সুযোগ সন্ধানি হোকনা কেন। সত্যের কাছে মিথ্যার পরাজয় অনিবার্য। তাই খুনি পিন্টু যতগুলো সুযোগই ব্যবহার করে আগাতে চেষ্টা করুকই না কেন। অবশেষে সবকিছুতেই র্ব্যাথ হলো পিন্টু দেবনাথ।

add-content

আরও খবর

পঠিত