নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : প্রায় দুই মাস নিখোঁজ থাকার পর ৮ই অক্টোবর রোববার সন্ধ্যায় বস্তাবন্ধি অবস্থায় যুবলীগ নেতা মনির হোসেনের ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করেছে রূপগঞ্জ থানা পুলিশ। মামলার অন্যতম গ্রেপ্তারকৃত আসামী আজিজুল হকের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির ভিত্তিতে কাঞ্চন পৌরসভার বিরাব খালপাড় এলাকা থেকে তার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। উল্লেখ, যুবলীগ নেতা মনির হোসেন গত ৯ আগষ্ট নিখোঁজ হন।
ভোলাব তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ ইন্সপেক্টর সেলিম মিয়া জানান, গত ৯ আগষ্ট রাতে কাঞ্চন পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ড যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও মৃত সিরাজুল হকের ছেলে মনির হোসেন নিখোঁজ হয়। বহু খোঁজাখুজির পর তার সন্ধান না পেয়ে তার স্ত্রী নাসিমা বেগম গত ১২ আগষ্ট রূপগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরী করেন। এরপর গত ৭ সেপ্টেম্বর বিরাব খালপাড় এলাকার তাহাজ উদ্দিনের ছেলে আজিজুল হক, শান্তিপুর এলাকার মজিবুর রহমানের ছেলে সিয়েম, বোরহান উদ্দিনের ছেলে বাদল, লতিফ মিয়ার ছেলে জসীম ও বিরাব এলাকার খালেক মিয়ার ছেলে মামুনকে আসামী করে রূপগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলার ভিত্তিতে রূপগঞ্জ থানা পুলিশ মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে গত ৭ অক্টোবর শনিবার রাতে মামলার প্রধান আসামী আজিজুল হককে হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং উপজেলার বড় বাজার এলাকা থেকে গ্রেফতার করে। পরে আজিজুলের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির ভিত্তিতে খালপাড় এলাকার পুকুরের সামনে মাটির নিচে পুতে রাখা বস্তাবন্দি অবস্থায় মনির হোসেনের লাশ উদ্ধার করে। আজিজুল হকের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির বরাত দিয়ে ইন্সপেক্টর সেলিম মিয়া আরো জানান, পুর্ব শত্রুতার জের ধরে মনির হোসেনকে জবাই করে হত্যা করেছে তারা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, নিহতের স্ত্রী নাসিমা বেগম বিলাপ করছেন। চৌদ্দ বছর বয়সের ছেলে মঈনুল ইসলাম মায়ের পাশে বসে ফুপিয়ে-ফুপিয়ে কান্নাকাটি করছে। আর বিরবির করে বলছে, আমার বাবাকে যারা মেরেছে তাদের বিচার চাই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার প্রশ্ন-আর কতো সন্তানের বুক এভাবে খালি হবে। এসময় সাত বছর বয়সের অবুঝ মেয়ে মানুষের ঢল আর মা-ভাইয়ের কান্না দেখে ফ্যাল-ফ্যাল করে চেয়ে থাকে। স্ত্রী, মা আর দু’সন্তানের কান্নার রোলে আশপাশের এলাকা ভারী হয়ে পড়ে। স্ত্রী নাসিমা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, যারা আমার স্বামীকে খুন করেছে আল্লাহ তাদের বিচার করবে। আমার স্বামী কারো ক্ষতি করেনি। যারা আমার ছেলে মেয়েকে এতিম করেছে তাদের ফাঁসি চাই।
রূপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ ইসমাঈল হোসেন বলেন, খুব দ্রুত বাকী আসামীদের গ্রেপ্তার করা হবে। ইতিমধ্যে পুলিশ আসামীদের গ্রেপ্তারে অভিযানে নেমেছে।