নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( বিশেষ প্রতিবেদক ) : শহর ও শহরতলীর আলোচিত মাদক স্পট হিসেবে এক সময় সুপরিচিতি ছিলো ফতুল্লা থানাধীন মাসদাইর বাজার, ভুইয়ারবাগ, গলাচিপা ও নন্দীপাড়া এলাকার কয়েকটি মাদক স্পট। এসব স্পটে চলতো ডিবি পুলিশের ক্রসফায়ারে নিহত মনিরুজ্জামান শাহীন ওরফে বন্দুক শাহীনের নেতৃত্বে মাদকের জমজমাট মাদক ব্যবসা। বন্দুক শাহীন ক্রসফায়ারে নিহত হওয়ার পর প্রায় বেশ কয়েক বছর চুপ ছিলো তার নিয়ন্ত্রনাধীন মাদক ব্যবসায়ীরা। স্থানীয় এলাকাবাসীর প্রতিরোধের মুখে অনেক মাদক ব্যবসায়ীরা এলাকা ছাড়াও হয়েছিলো। তাছাড়া মাদক নির্মূলে পুলিশ বাহিনীও নিয়মিতভাবে টহল দিতো ওইসব মাদক স্পটগুলোতে। যার ফলে মাদক ব্যবসায়ীদের অনেকটাই নির্মূল করা সম্ভব হয়েছিলো।
তবে বর্তমান সময়ে করোনা সংকটে যখন পুলিশ এবং অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী করোনা সংকট মোকাবেলায় এক গুচ্ছ মানবিক কাজে ব্যস্ত ঠিক তখনই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে আবারো মাথাচারা দিয়ে উঠেছে চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীরা। অনেকটা প্রকাশ্যেই ইয়াবা, গাজা ও ফেনসিডিলের খুল্লাম খুল্লা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে তারা। সবচেয়ে বেশি চলছে ইয়াবার রমরমা বানিজ্য। আকারে ছোট আর বহনে সহজ হওয়ায় দিন-রাত চলছে ইয়াবার বেচাকেনা।
সূত্রমতে এসব ইয়াবা ব্যবসায়ীদের মধ্যে মাসদাইর পাবনা পট্টি এলাকায় পাবেল, ফরহাদ, কসাই শাওন, কসাই সেলিম, কসাই রাসেল, পোড়া কাকন, স্বপন, লিচুবাগ এলাকায় মাসুদ ওরফে বেঙ্গা মাসুদ, বোয়ালিয়া খাল, ভুইয়ারবাগ ও নন্দীপাড়া মাউরা বাড়ির গলি এলাকায় দুলালের ছেলে শান্ত, মহেশ, অমিত ওরফে ড্যান্ডি অমিত, নন্দীপাড়া ২২ এর গলিতে বাপ্পি, গলাচিপা রুপার বাড়ির মোড় হতে চেয়্যারমান বাড়ি ১ ও ২ নাম্বার গলি, মসজিদ গলি, বন্ধুক শাহীনের গলিতে রিপন ওরফে ইট্টু রিপন, মাসুদ ওরফে বুইট্টা মাইচ্ছা, সীমান্ত, কালু, ডাকাত সোহেল উল্লেখযোগ্য। এদের প্রত্যেকের নামেই রয়েছে ফতুল্লা ও সদর থানায় একাধিক মাদকের মামলা।
অনুসন্ধানে আরো জানা গেছে, নিহত বন্দুক শাহীনের অনুগত গলাচিপা এলাকার এক সময়ের দুর্র্ধর্ষ মাদক ব্যবসায়ী মামুন ওরফে গুরু মামুন এবং নাসির ওরফে হান্ড্রেড নাসির বর্তমানে এলাকা থেকে পলাতক থাকলেও মূলত এ দুইজনের ছত্র ছায়াতেই উল্লেখিত এলাকাগুলোতে নতুন করে আবারো গড়ে উঠেছে ইয়াবার রমরমা ব্যবসা।
এদিকে এলাকাবাসীরা জানিয়েছেন, বন্দুক শাহীন ক্রসফায়ারে নিহত হবার পর দীর্ঘদিন মাদক ব্যাবসা বন্ধ থাকলেও বেশ কিছুদিন যাবত আবারো শুরু হয়েছে মাদক ব্যবসা। এতে করে স্থানীয় অভিবাবকগন তাদের সন্তানদের নিয়ে আবারও দু:শ্চিন্তায় পড়েছে। তারা আরো জানিয়েছেন, এতদিন যারা এলাকা ছাড়া ছিলো তারা আবার এলাকায় আসছে। এখন আবার তারা মাদক ব্যাবসা চালু করেছে।
এলাকাবাসির দাবী বর্তমানে গলাচিপা, মাসদাইর, নন্দীপাড়া ও এর আশেপাশের এলাকাগুলোর একটা সুনাম আছে। পুনরায় মাদক ব্যাবসার কারনে তা নষ্ট করতে চান না তারা। আর মাদকের কারণে এলাকার যুব সমাজ যেভাবে নষ্ট হয়েছিলো তার পুনরাবৃত্তি চান না এলাকাবাসি। তাই গলাচিপা ও মাসদাইর বাজারের আশপাশের স্থানীয় বাসিন্দাগণ পুনরায় প্রতিষ্ঠিত হওয়া মাদক স্পটগুলো বন্ধে এবং মাদক ব্যবসায়ীদের দ্রুত গ্রেফতারে মাননীয় পুলিশ সুপার মহোদয়ের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেন।