নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( নিজস্ব প্রতিবেদক ) : নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানায় দায়ের করা ধর্ষণ মামলায় হেফাজতে ইসলামের বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম-মহাসচিব মামুনুল হকের বিরুদ্ধে তৃতীয় দফায় সাক্ষ্য দিয়েছেন তিনজন। ২৫শে জানুয়ারি মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক নাজমুল হক শ্যামলের আদালতে এ সাক্ষ্য গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এই সাক্ষ্য গ্রহণকে কেন্দ্র করে আদালতপাড়াতে নেওয়া হয়েছিল বাড়তি নিরাপত্তা। আদালতের প্রবেশ ফটকে সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদ ও চেক করে প্রবেশ করানো হয়।
সাক্ষ্য দাতারা হলেন : সোনারগাঁ উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম নান্নু, রিসোর্টের আনসার গার্ড ইসমাঈল এবং রিশিপশন কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান। এরআগে সকাল ৯টায় কঠোর নিরাপত্তা বলয়ের মধ্য দিয়ে কাশিমপুর কারাগার থেকে মামুনুল হককে নারায়ণগঞ্জের আদালতে আনা হয়। পরে দুপুর ২টায় পর আবার তাকে কঠোর নিরাপত্তায় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) রকিব উদ্দিন আহমেদ এ বিষয়টি নিশ্চিত করে তিনি বলেছেন, মামুনুল হকের বিরুদ্ধে আজ তিনজন সাক্ষ্য দিয়েছেন। তারা সবাই মামুনুল হক ধর্ষণ কাজে জড়িত বলে জানিয়েছেন। তবে আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট একেএম ওমর ফারুক নয়ন বলেন, সাক্ষ্যদাতাদের সাক্ষীতেই প্রমাণিত হয় এই ঘটনা সাজানো ছিল। পরিকল্পিতভাবে এটি ঘটানো হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান জানান, মামুনুল হকের বিরুদ্ধে তিনজনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন আদালত। সকাল থেকে সাক্ষ্য গ্রহণকে কেন্দ্র করে আদালতপাড়ায় অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
এর আগে গত ১৩ই ডিসেম্বর দ্বিতীয় দফায় মামুনুলের বিরুদ্ধে রয়েল রিসোর্টের সুপারভাইজার আব্দুল আজিজ, রিসিপশন অফিসার নাজমুল ইসলাম অনিক ও আনসার গার্ড রতন বড়াল সাক্ষ্য দিয়েছিলেন।
এছাড়া তার আগে গত ২৪শে নভেম্বর প্রথম দফায় মামুনুল হকের উপস্থিতিতে কথিত দ্বিতীয় স্ত্রী জান্নাত আরা ঝর্ণার সাক্ষ্য নেন আদালত। একইসঙ্গে ৩ই নভেম্বর মামুনুল হকের বিরুদ্ধে করা ধর্ষণ মামলায় বিচার কাজ শুরুর আদেশ দেওয়া হয়।
প্রসঙ্গত, মামুনুল হক গত ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে রয়্যাল রিসোর্টে এক নারীর সঙ্গে অবস্থান করছিলেন। ওই সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এসে মামুনুল হককে ঘেরাও করেন। পরে ওই রিসোর্টে স্থানীয় হেফাজতের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা এসে ব্যাপক ভাঙচুর করে মামুনুল হককে ছিনিয়ে নিয়ে যান।
এ ঘটনায় গাড়ি ভাঙচুর, মহাসড়কে আগুন দিয়ে বিক্ষোভ, আওয়ামী লীগ অফিস, যুবলীগ, ছাত্রলীগ নেতার বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করা হয়। এক সাংবাদিককে পিটিয়ে আহত করা হয়। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে দুটি ও সাংবাদিক একটি মামলা দায়ের করেন। তার কিছুদিন পর স্থানীয়রা আরো তিনটি মামলা দায়ের করেন। ৬টি মামলার মধ্যে তিনটি মামলায় প্রধান আসামি মামুনুল হক।
পরে ৩০ই এপ্রিল সকালে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে দুই বছর ধরে ধর্ষণের অভিযোগে হেফাজত নেতা মামুনুল হকের বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও থানায় মামলা দায়ের করেন ওই নারী। যাকে মামুনুল হক তার দ্বিতীয় স্ত্রী দাবি করেছিলেন।