মদনপুর ইউপি নির্বাচনের দলীয় সমর্থন কারা পাচ্ছেন?

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক সিদ্ধান্ত মোতাবেক পৌরসভা নির্বাচনের পর সকল ইউপি নির্বাচন জাতীয় নির্বাচনের আঙ্গিকে হওয়ার ঘোষণা আসার পর থেকে সমগ্র দেশেই ভোটার ও প্রার্থীদের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে কে পাচ্ছেন কোন দলের মনোনয়ন। আসন্ন বন্দর উপজেলাধীন মদনপুর ইউপি নির্বাচনেও আ’লীগ ও বিএনপি থেকে কে মনোনয়ন পাচ্ছেন সে বিষয়ে ভোটারদের মধ্যে কৌতুহলের শেষ নেই। আগামী নির্বাচনে বিএনপি থেকে কাবিল হোসেন, মাজহারুল ইসলাম হিরণ, রুহুল আমিন, জাতীয় পার্টি থেকে খায়রুল বাশার ভূঁইয়া ও আ’লীগ থেকে আব্দুল হাই ভূঁইয়া, আব্দুল আজিজ দেওয়ান, বর্তমান চেয়ারম্যান এম এ সালাম ও আলী আজগর ভূঁইয়ার নাম শোনা গেলেও, বিগত কয়েক দিনে বেশ কিছু সংখ্যক ভোটারদের ও বিএনপি’র তৃণমূল নেতাকর্মীদের সাথে কথা বলে জানা যায় মাদক-সন্ত্রাস দূরীকরণ, পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তি ও দলের প্রতি আস্থাভাজন একজন প্রার্থী হিসেবে কাবিল হোসেনকে চেয়ারম্যান পদে যোগ্য বলে মনে করছে সবাই এবং দলীয় বিবেচনায় তাকে মনোনয়ন দেয়া হলেই দলের তৃণমূলের নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের নির্বাচনের মাঠে কাজ করা সফলদায়ক হবে বলে মনে করে তারা। নতুবা অন্য কোন প্রার্থীকে দলের ব্যানারে ধানের শীষ প্রতীক দেয়া হলে মাঠে ক্ষমতাশীল দলের একাধীক শক্তিশালী প্রার্থী থাকায় নির্বাচনে বিএনপি’র প্রার্থীর ভরাডুবি ঘটবে বলেও আশংকা করেছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলের একাধীক নেতা-কর্মী। বিএনপি’র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন প্রত্যাশি মাজহারুল ইসলাম হিরণ গত নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার দরুন নির্বাচনের মাঠে কতটা উত্তাপ ছড়াতে পারবেন তা নিয়ে সন্দিহান ইউনিয়নবাসী।

তাছাড়া তিনি নানাবিধ রাজনৈতিক মামলার আসামী হওয়ায় প্রার্থীতা বাতিল বা নির্বাচনে আদৌ মাঠে থাকতে পারবেন কিনা তাও যথেষ্ঠ সংশয়ের বিষয়ে পরিণত হয়েছে ভোটারদের মনে।  বিএনপি’র অপর নতুন প্রার্থী রুহুল আমিন দলের দুর্যোগ মুহুর্তেও দলের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন এবং এ অঞ্চলের নেতা-কর্মীদের সংগঠিত রেখেছেন। একজন প্ররিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির নেতা হিসেবে তিনি সকলের নিকট সমাদৃত। প্রার্থীতার বিষয়ে তার সাথে কথা বললে তিনি জানান ‘দল যাকে মনোনয়ন দিবে তার পক্ষেই আমরা কাজ করে তাকে জয়ী করতে চাই। তবে যার ইমেজ ভাল, ভোটাররা যাকে চায়, তাকেই মনোনয়ন দেয়া বুদ্ধিমানের কাজ হবে’।  অন্যদিকে জাতীয় পার্টির একমাত্র প্রতিদ্বন্দি হিসেবে মদনপুর ইউনিয়ন জাপা’র সভাপতি খায়রুল বাশার ভূঁইয়ার প্রার্থীতার বিষয়ে জোড়ালো আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। তিনি গত নির্বাচনেও চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছিলেন বলে জানা যায়। অপরদিকে আ’লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশি হিসেবে মদনপুর ইউনিয়নের সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আব্দুল হাই ভূঁইয়া, আ’লীগ নেতা আব্দুল আজিজ দেওয়ান, বর্তমান চেয়ারম্যান এম এ সালাম ও আলী আজগর ভূঁইয়ার নাম শোনা গেলেও মনোনয়ন পাবার বিষয়ে শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে ভোটারদের। বর্তমান চেয়ারম্যান সালামের বিষয়ে জানা যায়-গত নির্বাচনে দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে ও দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে প্রার্থীতা করেন বর্তমান চেয়ারম্যান এম এ সালাম। তিনি পাশ করলেও মূলত জনগণ তাকে ভোট দেয়নি, দিয়েছে মদনপুরের আদি নিবাস ভূঁইয়াবাড়ী, সাহেব বাড়ীর বিরুদ্ধে। জনগণ চেয়েছিল চেয়ারম্যান যাতে অন্য এলাকার হয়, আর সে জন্যই সালামের জয়ী হওয়া সহজতর হয়। মদনপুর সহ আশপাশ এলাকায় মাদক ব্যবহার ও বিক্রি বেড়ে যাওয়া, সন্ত্রাসী কর্মকান্ড, নিয়মিত চাঁদাবাজী, সিএনজি ছিনতাই, নিরাপরাধ অপহরণ সহ একটি অস্থির পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। আগামী নির্বাচনে আবারও চেয়ারম্যান পরিবর্তন চান এলাকাবাসী। দলের নির্দেশ অমান্য করে উপজেলা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিতা করে আবারও সমালোচনার জন্ম দেন এম এ সালাম।

অনেক নেতা কর্মীরা এও বলেছেন যে, যদি এতকিছুর পরও সালামকে মনোনয়ন দেয়া হয় তাহলে এ অঞ্চলে আওয়ামী লীগ করার আর কোন মানে হয়না।  প্রক্ষান্তরে কোন প্রকারের জনপ্রতিনিধি না হয়েও কাবিল হোসেন অত্র অঞ্চলের চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী কর্মকান্ড সহ সকল অপকর্ম বন্ধে জিহাদ ঘোষণা করেছেন এবং তার এ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ায় তার প্রশংসা সর্বদিকে শোনা যাচ্ছে। ভবিষ্যতেও মাদক, সন্ত্রাস, দুর্নীতি ও ভূমিদস্যুতার বিরুদ্ধে আজীবন কাজ করার প্রত্যয় ও সুশিক্ষিত একটি সচেতন নাগরিক সমাজ গড়ে তোলার লক্ষ্যে মসজিদ, মাদ্রাসা, কররস্থান, স্কুল, কলেজ সহ সকল শিক্ষামূলক ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে কাজ করে অত্র ইউনিয়নের উন্নয়নে ও আদর্শ ইউনিয়ন হিসেবে গড়ে তুলতে চান, এমনকি ইউনিয়নবাসীর সম-সুবিধা নিশ্চিত করণ, ন্যায়বিচার ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা করার অঙ্গিকার নিয়ে গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। এ ধরণের বিভিন্ন জনহিতকর কাজের মাধ্যমে তিনি নিজেকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন এবং এ সকল কারণে ভোটররা তার মত একজন বুদ্ধিদীপ্ত আধুনিক মনের ও সাবলীল চিন্তার প্রার্থীকে আগামী নির্বাচনে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করার বিষয়ে বদ্ধপরিকর। তাই অত্র মদনপুর ইউপি নির্বাচনে কাবিল হোসেন এবার একটি বড় ধরণের ফ্যাক্টর হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করেন নির্বাচন ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তাই বিএনপি থেকে দলীয় বিবেচনায় চেয়ারম্যান পদে কাবিল হোসেনকে ধানের শীষ প্রতীক দেয়া হলে দলকে তথা ভোটারদের তিনি নিরাশ করবেন না বলে দাবী সকল সচেতন ভোটারের।

add-content

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও খবর

পঠিত