নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( সৈয়দ সিফাত লিংকন ) : নগরীর অন্যতম ব্যস্ততম সড়ক হিসেবে পরিচিত এ সড়কটি। প্রতিদিন নানা পেশার লোকের চলাচল এ পথেই। সড়কে প্রবেশ করতেই বিশাল জটলা। সড়কজুড়ে বসে আছে টুকরী ওয়ালা ও ভ্যান চালক। যে পথে চলাচলকারী যানবাহনও অসহায়! প্রাইভেট কার, রিক্সা, মোটর সাইকেল সহ অন্যান্য ভারি যানবাহনও লাইনে দাড়িয়ে থাকে। এই চিরচেনা রূপ ঐতিহ্যবাহী দিগুবাবু বাজার সংলগ্ন বেদখল শায়েস্তা খান সড়কের।
যে পথে চলাচলে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে র্সবসাধারণের। বেশ বিরক্ত গণপরিবহনে চলাচলকারী যাত্রী এবং বাসের হেল্পারও। সময় তখন সকাল পৌণে ৯টা। অনেক ক্ষোভ নিয়েই এক বাসের হেল্পার চিৎকার করে বলে উঠল, মামা আওগান যাইবো না, সামনে বাজাইরা রাস্তা । টুকলী ওয়ালারা মাল নিতাসে। আর ভ্যান চালকরা পুইশাক, ডাটা শাক, বেগুন, কাঁচকলা লইয়া বইয়া রইসে। যামু কোন দিয়া। আধা ঘন্টার আগে এই জ্যাম ছুটতোনা। আপনি আগে বাড়াইয়া বামে গিয়া আবার পিছন দিয়া হাইট্টা বাজারের পিছন দিয়া যান। ওইহান দিয়া এহন পুরা খালি। এভাবেই বৃহষ্পতিবার কলেজে পড়ুয়া এক শিক্ষার্থীকে কথাগুলো বলছিল বাসের হেল্পার।
পথচারীরা ক্ষোভ নিয়ে বলছেন, শুধু শিক্ষার্থীরাই নয়, কাঁচাবাজারে ক্রেতা-বিক্রেতাদের দখলে থাকা সড়কে প্রতিদিন হাজারো জনসাধারণের ভোগান্তির সৃষ্টি হয়েছে। সড়কের দুই দিক সহ তাদের দখলে যেন পুরো সড়ক পাইকারি ও খুচরা বাজারে পরিণত হয়ে গেছে। মাঝ রাতে তো চলেই তা মেনে নেয়া যায়, তবে সকালের অফিস, কলেজের ব্যস্তসময় তাদের অত্যাচার মেনে নেয়ার মত নয়।
সরজেমিনে দেখা যায়, সড়কের দুপাশ তো দখল আছেই। ক্রেতা-বিক্রতাদের উপচে পড়া ভিড় থাকায় এই পথে চলাচলে পথচারী, যাত্রী ও যানবাহনগুলোর ব্যঘাত ঘটে। জানা গেছে, মধ্য রাত থেকেই পার্শবর্তী জেলা মুন্সিগঞ্জ সহ বিভিন্ন স্থান থেকে এসব কাঁচামাল বড় বড় ট্রাকে করে এখানে নিয়ে আসা হয়। এরপর দিগু বাবুর বাজার সহ অন্যান্য বাজারের পাইকারী ও খুচরা বিক্রেতারা এখান থেকে সস্তায় কিনে নিতে ভিড় জমায়। যেখানে টমেটো, কাঁকরোল, শশা, ঢেঁড়স, পেঁপে ও বেগুন থেকে শুরু করে সব ধরনের সবজি পাওয়া যায়। তবে সড়কে এ ধরনের বাজার বসায় চরম বিপাকে পড়তে হচ্ছে জনসাধারণের। ঘণ্টার পর ঘণ্টা গাড়িতে বসে থাকতে হয় যাত্রীদেরও।
সড়কের মধ্যেই কর্ভাডভ্যান গাড়ি থেকে পাইকারিতে কাঁচাতরকারী ক্রয় করছেন ইসমাঈল। নিজের ভ্যান গাড়ি নিয়ে সড়ক দখল করা ইসমাঈল এর কাছ থেকেও আবার কয়েকজন ক্রেতা পাইকারিতে পণ্য কিনে তা নগরীর অন্যান্য বাজারে নিয়ে যাচ্ছেন খুচরা বিক্রেতারা। তার সাথে কথা হলে সে জানায়, গাড়ি কি এমনি রাখসি? টেহা (টাকা) দিয়াই রাখসি। মাল কিনসি, এহন দুই তিন ঘন্টা বেইচ্চা যামু গা। তাও ১শ’ টাকা দিতে হয়! কিসের জন্য বা কেন, কাকে টাকা দেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন যারা ইজারা লয়, হেগো লোকই নেয়। নাম কওন যাইবোনা!
অন্যপাশে জমজমাট ব্যবসায় ব্যস্ত খুচরা বিক্রেতা নিতাই, জলিল। বিক্রি কেমন জানতে চাইলে নিতাাই বলেন, সকালের দুই তিন ঘন্টাই তো বেঁচি। রাতে আইয়া মাল নেই। দিনেই শেষ। এরপর বাইত য্ইাগা। জলিল বলেন, ক্রেতা ভালোই পাই। দিনে প্রতিদিন ৪শ থেকে ৫ শ কেজি সবজিতো অনায়াশে বিক্রি করি। ভালোই লাভ হয়। সড়ক দখলের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, হগলতোইতো বইসে। আমি তো একা না!