নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : প্রায় আড়াই বছর অতিবাহিত হলেও এখন পূর্নাঙ্গ কমিটির রূপ দিতে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে যাচ্ছেন নিরবে নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের আহবায়ক কমিটি । তবে এ অভিযোগ মানতে নারাজ কমিটিতে অর্ন্তভূক্ত নেতারা, তাদের মতে আহ্বায়ক ও কয়েকজন যুগ্ম আহবায়কদের আগ্রহ থাকলেও বিগত দিনে সরকার পতন আন্দোলন ও মামলা হামলার দোহাই দিয়ে অনেকটাই এড়িয়ে যাচ্ছেন কেন্দ্রীয় কমিটি বলে দাবী আসছে তাদের কাছ থেকে। এছাড়াও নারায়ণগঞ্জ বিএনপির সহযোগী সংগঠন হিসেবে শক্ত অবস্থানে থাকা এই কমিটির নেতারা নিজেদের মধ্যে সুসর্ম্পকের কথা উপস্থাপন করে আসলেও, বিগত দিনে তাদের মধ্যে বিভক্তি ও অন্তর কোন্দলের বিষয়টি জনসম্মুখে উন্মোচিত হয়েছে কয়েক দফা।
এ ব্যপারে মহানগর যুবদলের আহবায়ক মাকসুদুল আলম খোরশেদ বলেন, মহানগরের আওতাধীন ২৭টি ওয়ার্ড ও ৭টি ইউনিয়নের কমিটি সম্মেলনের মাধ্যমে সফলভাবে সম্পূর্ণ করেছি। সেই সাথে আমি চেষ্টা করেছি সম্মেলনে কেন্দ্রীয় কমিটির নেতাদের উপস্থিত রাখার জন্য। তবে এখন পর্যন্ত ১৬ নং ওয়ার্ডে কমিটি গঠন করতে পারিনি।
তিনি আরও বলেন, মহানগর যুবদলের পূর্নাঙ্গ কমিটি করতে পারি নি সেই জন্য এর ব্যর্থতার দায় আহ্বায়ক হিসেবে আমার উপর বর্তায় এবং সেই অভিযোগের আঙ্গুল আপনারা আমার দিকেই রাখবেন সেটা অস্বাভাবিকের কিছুই নয়। কিন্তু মহানগর যুব দলের পূর্নাঙ্গ কমিটি ঘোষনা করার জন্য কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে আমি যে পরিমান তাগিদ দিয়েছি তা কমিটির অর্ন্তভুক্ত অনেকই জানেন। কিন্তু এই অবৈধ সরকারের কূটনৈতিক চালের বেড়া জালে আমাদের কেন্দ্রীয় নেতারা বন্দি হয়ে আছেন। বিগত দিনে সরকার পতন আন্দোলন এবং মিথ্যা মামলা ও হামলার কারনে কমিটি এখনো ঘোষনা করতে পারেনি কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা। তবে সময় সুযোগ মত কমিটি ঘোষনা করে দিবেন বলে আমাদেরকে আশ্বস্ত করেছেন।
তবে গুটি কয়েক নেতার বিভক্তিতে তেমন কোন ক্ষতি হয় নি বলে দাবী করে কমিটির কর্ণধাররা বলেন, আমরা পদ-পদবির আশায় রাজনীতি করি না, দেশ ও জনগনের অধিকার আদায়ে তাদের কর্মচারী হিসেবে কাজ করে আসছি। তবে সংগঠনকে এগিয়ে নেয়ার জন্য নেতৃত্বদানে অবশ্যই যোগ্য লোকের প্রয়োজন রয়েছে। অনেকেই বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের মধ্যে থেকে সরকার দলের এজেন্ডা বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে। তারা দলের দুঃসময়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে কোন্দল সৃষ্টি করে ফায়দা লুটার চেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে।
এ নিয়ে তৃনমূল পর্যায়ের কয়েকজন নেতা বলেন, জনগনের অধিকার আদায়ের কথা বলতে গেলে মামলা হামলা জেল জুলুমকে মাথা পেতে নিয়ে রাজনীতিতে অংশগ্রহন করতে হবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আমাদের মধ্যে কিছু নেতাকর্মী আছেন যারা পদ-পদবির ফায়দা হাসিলের আশায় রাজনীতি করেন এবং তারা সুযোগ পেলেই দলের মধ্যে কোন্দল সৃষ্টি করার পায়তারা করে বেড়ান। তাদের কে খুঁজে বের করবেন দলের সিনিয়র নেতারাই । আর যদি না পারে তাহলে এটা তাদের জন্য সব চেয়ে বড় ব্যর্থতার পরিচয় হবে। যারা দলের দুঃসময়ে আন্দোলন সংগ্রামে সক্রিয় ভাবে অংশগ্রহন করেছিলো আমরা আশা করবো তাদের মূল্যায়ন অবশ্যই সবার আগে হওয়া উচিত।
যুগ্ম আহবায়ক সরকার আলম বলেন, যারা কমিটি নিয়ে বিভিন্ন ধুম্রজাল সৃষ্টি করার চেষ্টা করছেন আগে দেখতে হবে বিগত দিনে সরকার পতন আন্দোলনে তাদের কতটুকু ভূমিকা ছিলো। এরপর আছে পুর্নাঙ্গ কমিটির কথা বিগত দিনে সরকারের মিথ্যা মামলায় জর-জড়িত হয়ে শুধু কেন্দ্রীয় কমিটিই নয় দেশের বিভিন্ন জেলার নেতাকর্মীরা বাড়িতে থাকতে পারেনি। তবে দল যেহেতু জাতীয় কাউন্সিলিং এর কাজে হাত দিয়েছেন। আশা করি পর্যায়ক্রমে আমাদের কমিটির কাজও সম্পূর্ন হয়ে যাবে।
যুগ্ম আহবায়ক জুয়েল রানা বলেন, সরকার কখনো চায়নি আমরা জনগনের অধিকার আদায়ে রাজপথে থাকি এবং বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনগুলো সক্রিয় অবস্থানে আসুক। যার ফলে মিথ্যা মামলা দিয়ে নেতা কর্মীদেরকে কোন্ঠাসা করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। ফলে কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারাও এই মিথ্যার শিকার হয়েছেন। যার ফলে ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও তারা কোন কমিটির ঘোষনা দিতে পারেনি। তবে আশা করছি জাতীয় কাউন্সিলিং এর পর এটা বাস্তবায়িত্ব হবে।
এ দিকে প্রায় আড়াই বছর পুর্বে মাকছুদুল আলম খোরশেদকে আহবায়ক এবং সানোয়ার হোসেন, আনোয়ার হোসেন, রানা মুজিব, আক্তার হোসেন খোকন সাহা, সরকার আলম, জুয়েল প্রধান, সাগর প্রধান, মোয়াজ্জেম হোসেন মন্তুু, মনোয়ার হোসেন মুকন, মমতাজ উদ্দিন মন্ঠুকে যুগ্ম আহবায়ক করে মহানগর যুবদলের আহবায়ক কমিটি ঘোষনা করা হয়েছিলো। রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক ভাবে কমিটি টি শক্ত অবস্থানে থাকলেও এখনো পুর্নাঙ্গ কমিটিতে রুপ নিতে পারেনি।