নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( সংবাদ বিজ্ঞপ্তি ) : নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে বিয়ের দাবিতে অবস্থান নেয়া রোকসানা বেগম (৩২) নামে এক সন্তানের জননীকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামী সহ দুই জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব ১১ এর সদস্যরা। ২২ জুলাই শুক্রবার রাত ১০ টার দিকে মুন্সীগঞ্জ জেলার গজারিয়া থানার ভবেরচর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেস্খফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত আসামীরা হলো : প্রধান আসামী মো. মনির হোসেন (৪৫) এবং মো.আমির হোসেন (৪০)। ২৩ জুলাই শনিবার নারায়ণগঞ্জ বার্তাকে র্যাব ১১ এর লে: কর্ণেল (অধিনায়ক) তানভীর মাহমুদ পাশা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এরআগে ২০ জুলাই বুধবার সকালে নিহতের ছোট ভাই এনামুল হক (২৫) বাদী হয়ে ৯ জনের নাম উল্লেখ্যসহ ৪ থেকে ৫ জনকে অজ্ঞাত আসামী করে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
২৩ জুলাই শনিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ বার্তাকে র্যাব ১১ এর লে: কর্ণেল (অধিনায়ক) তানভীর মাহমুদ পাশা, পিএসসি বিষয়টি নিশ্চিত করে এক সংবাদ প্রেরিত বার্তায় তিনি জানান, ভিকটিম রোকসানা বেগম এর স্বামীর সাথে তার বিগত ৭ থেকে ৮ বছর পূর্বে নিয়ম মোতাবেক বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। তারপর থেকে ভিকটিম তার একমাত্র ছেলেকে নিয়ে ছোট ভাই মো. এনামুল হক (২৫) এর বাড়ীতে বসবাস করে আসছিল বলে প্রাথমিক অনুসন্ধান জানা যায়।
র্যাবের ওই কর্মকর্তা আরও জানান, জীবিকার জন্য উপজেলার সাদিপুর ইউনিয়নের বাইশটেকী গ্রামের দেওয়ান বাড়িতে জামদানী শাড়ী তৈরির কাজ করতেন রোকসানা বেগম। সেই সুবাদে উক্ত বাড়ীর মৃত রাজু মিয়ার ছেলে মনির হোসেন (৪৫) এর সঙ্গে ভিকটিম রোকসানা বেগম (৩২) এর দীর্ঘদিনের বিবাহ বহির্ভ‚ত সম্পর্ক গড়ে উঠে। একপর্যায়ে ভিকটিম বিয়ের ব্যাপারে মনির হোসেনকে চাপ দিলে আসামী মনির তার মেয়েকে বিয়ে দেয়ার পর ভিকটিমকে বিয়ে করবে বলে আশ্বাস দেয়।
এদিকে গত ১৫ জুলাই শুক্রবার আসামী মনিরের মেয়ের বিয়ে হলে, ভিকটিম গত ১৮ জুলাই সোমবার বিয়ের দাবিতে মনিরের বাড়িতে অবস্থান নেয়। এসময় মনিরের বাড়ির লোকজন তাকে একাধিকবার বাড়ির বাইরে টেনে হিঁচড়ে বের করে দেয়। ভিকটিম রোকসানার অবস্থানে অনড় থাকায় মনির হোসেন, তার ভাই গোলজার, খোকন ওরফে খোকা, ছেলে রানা, মনিরের স্ত্রীসহ অন্যান্য আসামীরা ভিকটিমকে লোহার পাইপ, লাঠিসোঠা দিয়ে পিটিয়ে মারাক্তকভাবে রক্তাক্ত করে আহত করে। মুমূর্ষ অবস্থায় ভিকটিমকে মনির হোসেন ও তার সহযোগীরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক ভিকটিমকে রোকসানাকে মৃত ঘোষণা করেন। এসময় ভিকটিমের মৃত্যুর সংবাদ জানার পর মনির ও তার সহযোগীরা লাশ রেখেই হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যায় বলে জানা যায়।
র্যাব ১১ এর লে: কর্ণেল (অধিনায়ক) তানভীর মাহমুদ পাশা জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামীরা রোকসানা হত্যাকান্ডের কথা স্বীকার করে। রোকসানা হত্যা মামলার অধিকতর তদন্তের জন্য গ্রেফতারকৃত আসামীরকে তদন্তকারী কর্মকর্তার নিকট হস্তান্তর কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এছাড়া র্যাব ১১ কর্তৃক রোকসানা হত্যাকান্ডে সাথে জড়িত অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।