নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( ডেস্ক রিপোর্ট ) : বিদেশে যাওয়ার সময় সাধারণ জনগণ যাতে প্রতারিত না হয়, সেজন্য ব্যাপক প্রচারণা চালানো ও নজরদারি জোরদার করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
২৫ আগস্ট রবিবার সকালে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান নীতি ২০১৬-এর আলোকে গঠিত অভিবাসন বিষয়ক জাতীয় স্টিয়ারিং কমিটির প্রথম সভায় এ নির্দেশনা দেন তিনি।
তারা যেন অকালে হারিয়ে না যায় সেজন্য তাদের প্রতি বিশেষ দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন বলে মত দেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, তারা আমাদের দেশেরই নাগরিক। তাদের নিরাপত্তা ও কল্যাণের দিকে নজর দেওয়া আমাদের দায়িত্ব।
অভিবাসন বিষয়ক জাতীয় স্টিয়ারিং কমিটির সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, দেশে একশ্রেণীর দালাল ও প্রতারক চক্র রয়েছে যারা বিপুল অর্থের বিনিময়ে বিদেশে লোক পাঠায়। আর বিদেশে গমনেচ্ছুরা দিনবদলের আশায় তাদের সর্বস্ব বিক্রি করে, ঋণ করে তাদের টাকার জোগান দেয়। এমনও দেখা গেছে যে, এদের বিদেশে নিয়ে দালাল চক্র দেশে থাকা তাদের আত্মীয়-স্বজনের কাছ থেকেও চাপ প্রয়োগ করে অর্থ আদায় করে। কাজেই আমাদের এই পুরো প্রক্রিয়াটি সঠিকভাবে নজরদারিতে আনতে হবে।
সারা দেশে তার সরকার ৫ হাজার ২৭৫টি ডিজিটাল সেন্টার স্থাপনের পরও জনগণ এসব প্রতারকদের ফাঁদে পড়ছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমরা বিদেশে গমনেচ্ছু জনগণকে বোঝানোর চেষ্টা করছি যে, তারা দালালের কাছে না গিয়ে বিদেশ যেতে চাইলে এসব ডিজিটাল সেন্টারে গিয়ে যেন নাম রেজিস্ট্রেশন করান। এ বিষয়ে মিডিয়াকে কার্যকর ভূমিকা পালনের আহবান জানান প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের দেশের মহিলারাও কাজের জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যাচ্ছে এবং বিদেশে গিয়ে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। আমরা এখন তাদের জন্য স্মার্টকার্ড এবং মোবাইল ফোন দিচ্ছি, যাতে করে তারা এ ধরনের দুর্ভোগ থেকে বাঁচতে পারে।
বর্তমানে প্রায় এক কোটি বাংলাদেশি বিশ্বের প্রায় ১০০টি দেশে অবস্থান করে দেশে রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের দারিদ্র্য বিমোচন ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধিতে তা ভূমিকা রাখছে।
যারা কাজের জন্য বিদেশ যাচ্ছে তাদের জীবনবৃত্তান্ত সহযোগে একটি ডাটাবেজ প্রস্তুত করার জন্যও সংশ্লিষ্ট কতৃর্পক্ষকে নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। বিশেষ করে তারা কোন কাজের জন্য কোন দেশে যাচ্ছে তার বিবরণ থাকতে হবে ডাটাবেজে।
বিদেশে গমনেচ্ছুরা যে কাজের জন্য বিদেশে যাচ্ছে তার প্রশিক্ষণ এবং সে দেশের ভাষার ওপর দখল থাকার বিষয়ে গুরত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে আমরা যৌথভাবেই প্রশিক্ষণের আয়োজন করতে পারি, যেমনটি অতীতেও করা হয়েছে।
অভিবাসন বিষয়ক জাতীয় স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড.এ কে আব্দুল মোমেন, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক, প্রবাসীকল্যাণ এবং বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সাজ্জাদুল হাসানের সঞ্চালনায় বৈঠকে আরও ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক মো. আবুল কালাম আজাদ এবং প্রেস সচিব ইহসানুল করিম।