নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : ৪৮ ঘন্টার মধ্যে নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অপসারণ দাবিতে করা মিছিল সমাবেশ এবং স্মারকলিপি প্রদানের কয়েকঘন্টার মধ্যে তা প্রত্যাহার করে নিয়েছে কালেক্টরেট কর্মচারী সমিতি (কাকস) । ১১ জানুযারী সোমবার নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে তা প্রত্যাহার করে ইউএনও’র সরকারী বাসভবনে গিয়ে ক্ষমা চান তারা। ১১ জানুয়ারী সোমবার সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসকের কাছে গিয়ে ইউএনওকে প্রত্যাহারের জন্য প্রদানকৃত স্মারকলিপিটি লিখিতভাবে প্রত্যাহার করে নেন বলে সূত্র জানায়। জানা গেছে, বন্দরের ইউএনও মিনারা নাজমীন ছুটিতে থাকাবস্থায় গত ০৬ জানুয়ারী দিনে দুপুরে তার সরকারী বাসভবনে দুর্ধর্ষ চুরির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ঐ বাসভবনের পাহারার দায়িত্বে নিয়োজিত কয়েকজন কর্মচারীকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে থানায় নিয়ে যায়। পুলিশ তাদেরকে থানায় নিয়ে নির্যাতন করেছে বলে কর্মচারি সমিতির নেতৃবৃন্দের কাছে অভিযোগ করেন। এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে কর্মচারি সমিতি ৪৮ ঘন্টার মধ্যে নারায়ণগঞ্জ থেকে ইউএনও এবং ওসিকে প্রত্যাহারের জন্য আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করে। কর্মসূচির অংশ হিসাবে গত ১০ জানুয়ারী কালেক্টরেট কর্মচারী সমিতির (কাকস) ব্যানারে মিছিল সমাবেশ ও জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করে। কর্মচারী সমিতির নেতৃবৃন্দ জানান , এ স্মারকলিপি প্রদানের পর স্থানীয় সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানের নির্দেশে সমিতির নেতৃবৃন্দ প্রকৃত ঘটনা জানতে পেরে দুখ প্রকাশ করেন এবং স¥ারকলিপিটি লিখিতভাবে প্রত্যাহার করে নেন। কর্মচারী সমিতির সভাপতি আবদুস সামাদ জানান, এমপি সাহেব ৩০ মিনিট সময় বেধে দিয়ে নির্দেশ দেন প্রকৃত ঘটনা জানার জন্য। সূত্র জানায়, সেলিম ওসমান এম,পি কর্মচারী সমিতির নেতৃবৃন্দকে না জেনে না বুঝে, আবেগ তাড়িত হয়ে অহেতুক আন্দোলন করায় কৈফিয়ত চান। তিনি তাদের বলেন ” তোমরা কিভাবে নিশ্চিত হলে যে ইউএনও কর্মচারীদেরকে পেটানোর জন্য পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন? ইউএনও তো তখন ছুটিতে ছিলেন, ঘটনাস্থলে ছিলেননা।” তিনি তাদেরকে আগামী ১০ দিনের মধ্যে চুরির সাথে জড়িতদের সনাক্ত ও চুরি যাওয়া মালামাল যেকোন মূল্যে উদ্ধারের জন্য নির্দেশ দেন।
সমিতি সূত্রে জানা গেছে , নির্দেশ প্রাপ্তির কিছুক্ষনের মধ্যেই কাকস সভাপতি আবদুস সামাদ, সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন সিকদার, ৩য় শ্রেণী কর্মচারী সমিতির সভাপতি প্রাণ কৃঞ্ষ চন্দ্র চন্দ, ৪র্থ শ্রেণী কর্মচারী সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার ফিরোজ হোসেন, সাট মুদ্রাক্ষরিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফাহিম উদ্দিন সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ নারায়নগঞ্জ শহর থেকে বন্দরের ইউএনও’র সরকারী বাসভবনে হাজির হয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে ঘটে যাওয়া পূর্বাপর ঘটনা নিয়ে আলোচনা করেন। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তারা উপলদ্ধি করতে পারেন তাদের কাছে সঠিক ও প্রকৃত তথ্য না দিয়ে অসত্য ও খন্ডিত তথ্য দিয়ে কর্মচারী নেতৃবৃন্দকে বিভ্রান্ত করা হয়েছে এবং কর্মচারীদেরকে উত্তেজিত করা হয়েছে। কাকস সভাপতি আবদুস সামাদ জানান , তিনি সকল নেতৃবৃন্দকে নিয়ে রাতেই উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে গিয়েছিলেন। চুরির ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে কতিপয় অসাধু কর্মচারী সমিতির নেতৃবৃন্দকে মিথ্যা ও অতিরঞ্জিত তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করেছে। ইউএনও ম্যাডামকে আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করে ”সরি” বলেছেন, সোমবারই স্মারকলিপিটি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। এ ন্যাক্কারজনক ঘটনার সুষ্ঠ তদন্তে কাকস সহ সকল কর্মচারী সার্বিক ভাবে সহায়তা করবে এ আশ্বাস দেন । যারা দায়িত্ব পালনে অবহেলা করেছে এবং যাদের কারনে এ ঘটনা ঘটার সুযোগ তৈরি হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য জেলা প্রশাসক সহ কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানান। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিনারা নাজমীন জানান , নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানের নির্দেশে রবিবার রাতে আমার বাসায় কর্মচারী সমিতির নের্তৃবৃন্দ দুঃখ প্রকাশ করে গেছেন। তাদেরকে চোর ধরতে এবং চুরি যাওয়া মালামাল উদ্ধার করতে আইনশৃংখলা বাহিনী সহ প্রশাসনকে সহায়তা করতে বলেছি। তারা এ ব্যাপারে আশ্বস্থ করেছেন ।