বন্দরের ৫ ইউনিয়নে আচরণ বিধি লংঘনের হিড়িক

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : আসন্ন ইউপি নির্বাচনকে সামনে রেখে বন্দরের ৫ ইউনিয়নে নির্বাচনী আচরনবিধি লংঘনের হিড়িক পড়েছে। প্রতিক বরাদ্দ না পেয়েও অনেকে প্রতিক দেখিয়ে ভোট প্রার্থনা, উঠান বৈঠক, বহিরাগত লোক এনে শো-ডাউন, রঙ্গীন পোষ্টার ব্যানার ফেষ্টুন ব্যবহার এমনকি প্রতিশ্রতির ফুলঝুড়ি দিচ্ছেন ভোটারদের। উল্লেখিত সবগুলো কর্মকান্ডই নির্বাচনী আচরনবিধির সুস্পষ্ট লংঘন হলেও নির্বাচন অফিস বা প্রশাসন কোন ব্যাবস্থা নিচ্ছেনা বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে বন্দর উপজেলার নবনিযুক্ত নির্বাহী কর্মকর্তা মৌসুমী হাবিব বলেন, প্রতিক বরাদ্দের পরই একাধিক ভ্রম্যমান আদালত মাঠে নামবে। আচরন বিধি লংঘনকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল কালাম বলেন, পুলিশ সর্বদা প্রস্তুত রয়েছে। জেলা প্রশাসন থেকে ম্যাজিষ্ট্রেট নিয়োগ দেয়ার পরই অভিযান শুরু হবে। একটি অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে প্রশাসন বদ্ধ পরিকর। বন্দরের ৫টি ইউনিয়নেই আচরন বিধি লংঘনের অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কলাগাছিয়ায় লাঙ্গলের প্রার্থী দেলোয়ার প্রধান উঠান বৈঠকের নামে সমাবেশ করছেন বহিরাগত লোক এনে। মুছাপুরের লাঙ্গল প্রতিকের চেয়ারম্যান প্রার্থী মাকসুদ হোসেন নির্বাচিত হতে বিভিন্ন প্রলোবন দেখাচ্ছেন ভোটারদের। গত ১৮ মে বুধবার তিনি একটি এম্বুলেন্স দেয়ার ঘোষনা দেয়ার পর নৌকার প্রার্থী কাদিও ডিলার এনিয়ে তীব্র আপত্তি প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দেবেন বলে জানিয়েছেন।

বন্দর ইউনিয়নে নৌকার প্রার্তী রফিকুল ইসলামও বহিরাগত লোক এনে উঠান বৈঠকের স্থলে জনসভা করেছেন কয়েকটি। এছাড়া চৌধুরীবাড়ী এলাকায় পাশাপাশি কয়েকটি নির্বাচনী ক্যাম্প করায় আচরন বিধি লংঘনের অভিযোগ উঠেছে। মদনপুরে ইউপি নির্বাচনে আচরন বিধি লংঘনের হিড়িক চলছে। বিভিন্ন এলাকায় শোভা পাচ্ছে রঙ্গীন পোষ্টার ব্যানার ফেষ্টুন। বিশেষ করে নব্য গডফাদার খলিল মেম্বার ও তার সন্ত্রাসী বাহিনীর বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরনবিধি লংঘনের অভিযোগ সবচেয়ে বেশী। এছাড়া সতন্ত্র প্রার্থী শাকিল ভূইয়া, বিএনপির প্রার্থী মাজহারুল ইসলাম হিরন রঙ্গীন ব্যানার ফেষ্টুনসহ বহিরাগত লোকজন নিয়ে শোডাউন করায় একদিকে নির্বাচনী আচরনবিধি লংঘন হচ্ছে অপরদিকে এলাকায় বিরাজ করছে আতংক। নির্বাচনী আচরন বিধি লংঘনের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে এলাকাবাসী। জানা গেছে, বন্দরের উত্তরাঞ্চলের আন্ডারওয়ার্ল্ডের নিয়ন্ত্রক ও মাদকের শেল্টারদাতা খলিল মেম্বার নিজেকে ১নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি দাবি এবং মেম্বার পদকে পুজিঁ করে বিগত ৫ বছর নানা অপকর্ম করে আসছে। দিনে সমাজসেবক আর রাতের বেলায় অন্ধকার জগতের নিয়ন্ত্রণ করে গোটা মদনপুর এলাকাকে জিম্মি করে রেখেছে।

স্থানীয়রা জানায়, একসময় ভয়ানক সন্ত্রাসের জনপদ হিসেবে পরিচিত মদনপুরে র‌্যাব ও পুলিশের যৌথ অভিযানে ক্রসফায়ার এবং পরস্পর বিরোধে দেড়ডজন সন্ত্রাসী নিহত হয়। সন্ত্রাসী বাহিনীর প্রধানরা ক্রসফায়ারে নিহত এবং প্রতিপক্ষের হাতে খুন হলেও এসব সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যদের একত্রিত করে এখন নেতৃত্বে দিচ্ছে দেশজুড়ে আলোচিত ৭ খুনের মামলার প্রধান আসামী নুর হোসেনের সহযোগী ও নব্য গডফাদার স্বঘোষিত ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি খলিল মেম্বার। বিতর্কিত নব্য গডফাদার খলিল মেম্বার ওরফে শরিয়তপুইরা খলিল আবারও মেম্বার পদে পুনরায় নির্বাচন করতে প্রস্তুতি নিচ্ছে। নির্বাচনকে ঘিরে এসব সন্ত্রাসী বাহিনীকে মাঠে নামিয়েছে। নির্বাচনের তফসিল ঘোষনা না হতেই এসব সন্ত্রাসীরা মাঠে নেমে হুমকী ধমকীসহ নানা অপতৎপরতা শুরু করেছে নির্বাচনে জয়লাভের জন্য। সন্ত্রাসীরা মাঠে নামায় মদনপুরে বিরাজ করছে আতংক। এলাকাবাসী আরও জানায় একজন চিহিৃত মাদকের গডফাদার খলিলুর রহমান এলাকার মেম্বার নির্বাচিত হলে গোটা এলাকা মাদকের আখড়ায় পরিণত হবে। সম্প্রতি খলিল মেম্বারের শ্যালক বিপুল পরিমান ইয়াবাসহ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের হাতে গ্রেফতারের পর মাদকের মূল হোতা খলিল মেম্বারের মুখোশ উন্মোচিত হয়েছে। তারপরও খলিল মেম্বার গ্রেফতার না হওয়ায় জনমনে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

add-content

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও খবর

পঠিত