নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( মিলন হোসেন ) : নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার ভূগর্ভস্থ পানিস্তর কমে যাওয়ায় স্বল্প সময়ে কম পানিতে কৃষকদের রবিশস্য আবাদের জন্য উৎসাহ দিন দিন বাড়ছে। স্বল্প সময়ে ও কম পরিশ্রমে এ উপজেলায় ভুট্টা চাষে উজ্জল সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। সে কারনে লক্ষ্য মাত্রার প্রায় অধিক পরিমান জমিতে ভূট্রা চাষ হতে পারে । আবহাওয়া অনূকুলে থাকায় দিগন্ত মাঠ জুড়ে ভুট্টার গাছে সবুজ পাতা ঝলমল করছে। বাজার দর ভাল পেলে আগামীতে ভুট্টার চাষ আরো বৃদ্ধিপাবে এমনটাই জানিয়েছেন কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এবার ১২০ শত হেক্টর জমিতে ভুট্রা চাষের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে। ইতিমধ্যে লক্ষমাত্রা ছারিয়ে প্রায় ১৫০ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। আশা করা হচ্ছে আলু উত্তলনের শেষ হলে আরও ভূট্রা চাষ হবে।এতে ভূট্রা চাষ আরও বাড়বে বলে আশা করছে তারা। এনকে-৪০, সানসাইন, ৯৮১,সুপার সাইন ২৭৬০ ভুট্টা সহ আরও বিভিন্ন জাতের ভূট্রার চাষ হয়েছে। এ উপজেলায় প্রধান অর্থকারী ফসল ধান। গত কয়েক বছর থেকে কৃষকরা ধানের আবাদ করে ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছেন। সরকার ধানের মূল্য নির্ধারন করে দিলেও কিছু ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কারণে কৃষকরা ধানের নায্যমূল্য পাননা। আবার সরকারি গুদামেও ধান দিতে গেলে বিভিন্ন সমস্যায় পড়তে হয়। গুদামে নির্দিষ্ট পরিমাণ ধান দেওয়ার পর বাজারে খুরচা ভাবে বিক্রি করে মূল্য পাওয়া যায়না। দেখা যায় ধান উৎপাদন করতে যে টাকা খরচ হয় সবকিছু বাদ দিয়ে কৃষকদের হাতে কোন টাকা থাকেনা। এতে করে কৃষকদের লোকসানে পড়তে হয়। কৃষকরা এখন ধানের প্রতি আগ্রহ কমিয়ে দিয়ে স্বল্প পরিশ্রমে ও অল্প খরচে অধিক লাভের আশায় ভুট্টা চাষের প্রতি ঝুঁকে পড়েছেন।
বদলগাছী উপজেলার আধাইপুর ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামের কৃষক শ্রী বিনয় চন্দ্র বলেন, এবার ৫০ শতক জমিতে উন্নজাতের সুপার সাইন২৭৬০ ভুট্টার চাষ করেছেন। বিঘা প্রতি খরচ হয় ৪-৫ হাজার টাকা। আর ফলন হয় প্রায় ১৫- ২০ মণের মতো। ভুট্টার চাষে খরচও কম আবার পরশ্রিমও কম। দাম ভাল পেলে আগামীতে আরো বেশি পরিমাণ জমিতে ভুট্টার চাষ করবেন তিনি।
কৃষক নয়ন হোসেন ১০ কাঠা জমিতে সানশাইন ও আব্বাস ২২শতক জমিতে ৯৮১ জাতের ভুট্টার চাষ করেছেন। তারা বলেন, ধানের চাষে পরিশ্রম বেশি। সে তুলনায় দাম পাওয়া যায়না। কিছু সিন্ডিকেটের কারণে মাঝখান থেকে লাভবান হয় মধ্যস্তভোগীরা। আর প্রতিবছরই কৃষকদের লোকসান গুনতে হয়। গত বছর কাঁচা ৪শ’ থেকে ৪৫০ টাকা এবং শুকনা ৫৫০-৬৫০ টাকা পর্যন্ত ভুট্টা বিক্রি হয়। এবার ভাল দাম পেলেই হয়।
কৃষক নান্টু আলী বলেন, ভুট্টার আবাদে রোগবালাই তেমন নাই। বোরো ধানের চাষ কিছুটা কমিয়ে দিয়ে ওইসব জমিতে ভুট্টা চাষের দিকে কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে। ভুট্টার দাম সরকারি ভাবে নির্ধারন করা হলে কৃষকরা নায্য মূল্য পাবে এমনটাই জানান তারা।
বদলগাছী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাসান আলী বলেন, বোরো চাষে প্রচুর পানির প্রয়োজন হয়। বোরো চাষ কমাতে হবে অন্য ফসল বাড়াতে। ভূগর্ভস্তরের পানি সঞ্চয় করার জন্য কৃষকদের রবিশষ্যসহ স্বল্প পানি দিয়ে স্বল্প সময়ে ফসল চাষের জন্য উদ্বদ্ধ করা হচ্ছে। উপজেলার বেশ কিছু কৃষককে ভুট্টা চাষের জন্য প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। আগামীতে ভুট্টার আবাদ আরো বৃদ্ধি পাবে এমনটাই আশা করছেন তিনি।