নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের শততম জন্মবার্ষিকী মুজিববর্ষ উদযাপনের লক্ষ্যে ১০দিনের কর্মসূচী হাতে নিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান। বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারী) রাত ৮ টায় বন্দরের ত্রিবেনী এলাকায় অবস্থিত শামসুজ্জোহা এমবি ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের অডিটরিয়ামে, আওয়ামীলীগ, জাতীয় পার্টি, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সাথে মত বিনিময় সভায় এ কর্মসূচীর কথা উল্লেখ্য করা হয়েছে। চলতি মাসের মধ্যে কর্মসূচীর বিস্তারিত ভাবে চূড়ান্ত ভাবে ঘোষণা করা হবে।
সেই লক্ষ্যে বন্দর উপজেলার চেয়ারম্যান ও থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি এম এ রশিদ এর নেতৃত্বে বন্দর উপজেলা প্রশাসন এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলরবৃন্দ ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানবৃন্দরা নিজ নিজ এলাকায় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের নিয়ে জাতীয় শিশু দিবস বঙ্গবন্ধুর শততম জন্মবার্ষিকী মুজিববর্ষ উদযাপনের মধ্য দিয়ে স্মরণীয় করে রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
সভায় বক্তব্যের শুরুতে সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান তার পিতা ভাষা সৈনিক মরহুম এ.কে.এম শামসুজ্জোহার ৩৩তম মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষ্যে পরিবারের পক্ষ থেকে ২০ ফেব্রুয়ারী হীরা মহল এবং ২২ ফেব্রুয়ার শামসুজ্জোহা এমবি ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ প্রাঙ্গনে আয়োজিত দোয়া অংশ নিতে সকলের প্রতি অনুরোধ রাখেন।
বন্দর উপেজলার চেয়ারম্যান ও থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি এম এ রশিদ এর এর সভাপতিত্বে উক্ত মত বিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানের সহ ধর্মিনী মিসেস নাসরিন ওসমান। আরো উপস্থিত ছিলেন, জেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক আবুল জাহের, মহানগর জাতীয় পার্টির আহবায়ক ও বন্দর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান সানাউল্লাহ সানু, বন্দর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা শুক্লা সরকার, বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম, জেলা সেচ্ছাসেবক পার্টির আহবায়ক গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী, জেলা যুব সংহতির আহবায়ক রাজা হোসেন রাজু, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ২০ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর গোলাম নবী মুরাদ, ২১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হান্নান সরকার, ২২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সুলতান আহম্মেদ, মুছাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেন, মদনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম এ সালাম, ধামগড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাসুম আহম্মেদ, বন্দর থানা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুর রহমান কমল, সহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ও গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গরা।
প্রসঙ্গত, সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানের বাবা ভাষা সৈনিক স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত (মরনোত্তর) মরহুম একেএম সামসুজ্জোহা ছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর। তিনি মহান ভাষা আন্দোলন, ১১ দফা, ৬ দফা, মহান স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম সংগঠক। তিনি ১৯৭০ সালে গণপরিষদ ও ১৯৭৩ সালে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে ছিলেন। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের বিজয় লগ্নে ১৯৭১ সনের ১৬ই ডিসেম্বর জাতির জনকের পরিবারকে (বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাসহ) বন্দী দশা থেকে মুক্ত করতে গিয়ে ঢাকায় হানাদার বাহিনী কর্তৃক গুলিবিদ্ধ হয়ে ছিলেন। নারায়ণগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী বায়তুল আমান- এ জন্ম হওয়া বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন। মহান ভাষা আন্দোলনে তাঁর পরিবারে ৫ জন সদস্য একসাথে কারাবন্দী হয়ে ছিলেন। স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে তিনি আদমজী জুট মিলসহ চিত্তরঞ্জন কটন মিলস্, আর্দশ কটন মিল লক্ষèী নারায়ণ কটন মিল, আহমেদ বাওয়ানী কটন মিল, ঢাকা কটন মিল পুনর্গঠন করেন। তিনি নারায়ণগঞ্জ টেক্সটাইল ম্যানেজমেন্ট বোর্ডের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু স্বপরিবারে নিহত হওয়ার পর তিনি খুনিচক্রের হাতে গ্রেপ্তার হয়ে দীর্ঘদিন কারাভোগ করেন। ১৯৭৭ সালে বাংলাদেশ ক্লথ মার্চেন্টস এসোসিয়েশন প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৭৮সালে তিনি নারায়ণগঞ্জ টাউন কে-অপারেটিভ ব্যাংকের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন।