নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( সৈয়দ সিফাত লিংকন ) : ফুটফুটে চার বছরের এক শিশু, নাম আলিফ। বাসার পাশেই নিজ বন্ধুদের সাথে খেলা করছিল। হঠাৎ করেই চকলেট দেওয়ার কথা বলে নিয়ে যায় প্রতিবেশী অহিদুল। এরপর থেকেই সে ছিল নিখোঁজ। পরে তার বন্ধু ফাহিমের তথ্যানুযায়ী আলিফের সন্ধান মিললেও তাকে আর জীবীত নয় পাওয়া যায় রাবিস (ইট ভাংগা) এর সাথে বস্তাবন্দি মৃত লাশ।
ঘটনাটি ঘটে গত বছর শহরের জল্লারপাড়া আমহাট্টা এলাকায়। ভাড়াটিয়া অহিদ মিয়ার তালাবদ্ধ রুম থেকে শিশু আলিফের দুই হাত বাঁধা ও মুখে রুমাল গুঁজে দেওয়া ছিল। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছিল আঘাতের চিহ্ন। আর এরআগের দিনই দেশে ফিরে আসা নিহতের বাবা সৌদি প্রবাসী আলমগীর হোসেন বাদী হয়ে পরে ১৭ আগষ্ট নিহত আলিফের বাবা নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় অহিদকে আসামি করে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করে। এরপর পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৩১ আগষ্ট আসামি অহিদকে ব্রাহ্মনবাড়িয়ার আখাউড়া এলাকা থেকে গ্রেফতার করে।
সোমবার (২২ জুলাই) শিশু শিহাব উদ্দিন আলিফ হত্যা মামলায় একমাত্র আসামি অহিদ মিয়ার মৃত্যুদন্ড প্রদান করেছেন আদালত। দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আনিসুর রহমান আসামির উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন।
এদিকে এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন নিহত শিশুর পরিবার। তবে প্রশ্ন ছুড়ে বলেন হত্যার দায়ে অহিদকেও মৃত্যুদন্ডাদেশ দেয়া হল। তাকেও মরতে হবে। কিন্তু আর কি ফিরে পাবো আমার সেই শিশু সন্তানটিকে? নিহত শিশু আলিফের মা সালমা বেগম কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, আমি এ রায়ে খুশি । মামলার রায় দ্রুত কার্যকর করার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ আদালতের পিপি ওয়াজেদ আলী খোকন বলেন, আমরা এই রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করছি। একই সঙ্গে এসব মর্মান্তিক খুন, বিবেচনায় স্পর্শকাতর। তাই হত্যাকান্ডের মামলাগুলো গুরুত্ব সহকারে পরিচালনা করছে রাষ্ট্রপক্ষ।
ঘাতক অহিদ আদালতকে জানান, তিনি পেশায় রাজমিস্ত্রি। তার অর্থের প্রয়োজন ছিল বিধায় তিনি আলিফকে অপহরণ করেছিলেন। কিন্তু পরে জানাজানি হওয়ার ভয়ে তিনি আলিফকে হত্যা করে লাশ বস্তায় ভরে রেখে পালিয়ে যান।