নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : অসামাজিক কার্যকলাপের মিথ্যা অভিযোগ এনে ফতুল্লার কাশিপুরে এক প্রবাসীর স্ত্রীকে তার বসত ঘরে ঢুকে শ্লীলতাহানির চেষ্টা চালিয়েছে স্থানীয় ভারপ্রাপ্ত ইউপি সদস্যসহ কতিপয় বখাটে যুবক। এ সময় ঐ বখাটেদেরে অনৈতিক আবদার রক্ষায় অস্বীকৃতি জানালে ঐ বখাটেরা তাকে ৬ ঘন্টা আটক রেখে শারিরিক ও মানষিক নির্যাতন করে এবং ঘরের আসবাবপত্র ভাংচুরসহ নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার, ল্যাপটপ ও মোবাইল ফোন লুট করে নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বখাটেদের এহেন কর্মকান্ডের বিস্তারিত উল্লেখ করে থানায় অভিযোগ করা হলেও পুলিশ এ অভিযোগের কোনপ্রকার গুরুত্ব দেয়নি। করেছেন গড়িমসি আর ঘটনার শিকার ঐ অসহায় নারীকে দিয়েছেন আপত্তিকর অপবাদ। অবশেষে সাংবাদিক কর্তৃক উর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানালে পুলিশের টনক নড়ে ঘটনার ৩৩ ঘন্টা পর। মধ্যযুগীয় কায়দায় এই গ্রামীণ অসভ্যতার ঘটনাটি ঘটেছে গত মঙ্গলবার ৮টা থেকে ৬ ঘন্টা ব্যাপি থানার কাশীপুর কলেজ রোড মসজিদ সংলগ্ন চৌধুরী গাঁও এলাকায়।
জানা গেছে, ঘটনার শিকার ঐ গৃহবধূ মোর্শেদা একজন ব্যাংক কর্মকর্তা এবং তিনি সৌদি প্রবাসী মনির হেসেনের স্ত্রী। ৯ বছর বয়েসী এক শিশু সন্তানকে সাথে নিয়ে ৬ মাস যাবৎ ঐ বাড়িতে বসবাস করে আসছিল। অফিসে যাতায়াতকালে নিত্যদিনই ঐ বখাটেরা মোর্শেদাকে উক্ত্যক্ত করতো বলে এই প্রতিবেদককে জানান ঐ ভদ্র মহিলা।
ঘটনার তথ্য সংগ্রহকালে উপস্থিত সাংবাদিকদেরকে তিনি এবং ঐ বাড়ির অন্যান্য প্রত্যক্ষদর্শী ভাড়াটিয়ারা জানান, ঘটনার দিন সকাল ৮টায় হঠাৎ করে এলাকার মধ্য বয়েসী ইলিয়াস (৪৫), রতন (৪৮), রুবেল (৩৫) সহ কয়েকজন বখাটে হঠাৎ করেই দরজা ভেঙ্গে ঘরে ঢুকে পড়ে এবং ঘরে পর পুরুষ নিয়ে ফুর্তি করছিস বলে একের পর এক অশালীন মন্তব্য করতে থাকে। এক পর্যায়ে ওরা তাকে কু-প্রস্তাব দেয়। এতে অস্বীকৃতি জানালে ওরা প্রয়াত ইউপি সদস্য গোলাম মোস্তফার পুত্র পলাশসহ এলাকার আরও কয়েকজন বখাটেকে ফোন করে ডেকে পাঠায় এবং সকাল ৮টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত ঘরে আটক রেখে তাকে মারধর লুটপাট এবং শ্লীলতাহানীর চেষ্টা চালায়। এ সময় ঐ ১০/১২ জন বখাটে মিলে ঘরে থাকা নগদ ২২ হাজার ৫’শ টাকা, ৪ ভরি স্বর্ণালংকার, একটি ল্যাপটপ এবং ২টি মোবাইল সেট লুট করে নিয়ে যায়। যাওয়ার সময় ১’শ মূল্যের ২টি সাদা স্ট্যাম্পে জোড়পূর্ব্বক স্বাক্ষর নেয় এবং কোন প্রকার আইনানুগ ব্যবস্থা নিলে ভয়ঙ্কর ক্ষতি হবে বলে মহিলাকে শাসিয়ে যায়।
এ ব্যাপারে অভিযোগ করার ৩৩ ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও ফতুল্লা থানা পুলিশ এর কোন প্রকার তদন্তে আসেননি বরং ঘটনার শিকার ঐ গৃহবধূকে আজেবাজে মন্তব্য করেন। গৃহবধূর এহেন অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপস্থিত সাংবাদিকগন বিষয়টি পুলিশের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করার পর মাত্র ৪৫ মিনিটের মধ্যে এই আই আবু সাঈদ ও সুমন সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হন এবং অভিযোগের তদন্ত সম্পন্ন করেন।
তদন্ত শেষে ঘটনার সত্যতা পেয়েছে স্বীকার করে অপরাধীদেরকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে বলে তদন্তকারী কর্মকর্তারা উপস্থিত সাংবাদিকদেরকে আশ্বস্ত করেন।