নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( ফতুল্লা সংবাদ দাতা ) : নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় চাঁদা না পেয়ে এক ব্যবসায়ীর উপর হামলা চালিয়েছে পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী মীর হোসেন মীরু এর লালিত বাহিনী। হামলার শিকার ব্যবসায়ী দেলোয়ার হোসেন লিটন (৪৩) কে নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আহত লিটন পূর্ব শাহী মহল্লা এলাকার মো. জিন্নত আলী মিয়ার ছেলে।
এ ঘটনায় সন্ত্রাসী মীরুসহ তার বাহিনীর ক্যাডার পশ্চিম শাহী মহল্লা এলাকার আ. খালেকের ছেলে শরীফ (২৫), আঃ হামিদ এর ছেলে রনি (৩২), নূর ইসলাম এর ছেলে শুভ (২৪), মৃত আনছার এর ছেলে সোহান (২৩), মৃত মোসলেম উদ্দিনের ছেলে সানজিদ ও মৃত শাহ-জাহানের ছেলে মিরাজ (২৪) সহ অজ্ঞাতনামা ৫-৬ জনের বিরুদ্ধে ফতুল্লা মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন আহত লিটন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘ দিন ধরেই স্বেচ্ছাসেবক লীগের ব্যানারে মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ, চাঁদাবাজী, ভূমিদস্যুতাসহ হত্যাকান্ডের মত ভায়ানক সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করে চলেছেন মীরু। এলাকায় আধিপত্য বিস্তার কে কেন্দ্র করে মীরুর লালিত সন্ত্রাসীদের একের পর এক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ও তান্ডবের ফলে কোণঠাসা হয়ে পরেছে এলাকার সর্বস্তরের বাসীন্দারা।
আহত লিটন পূর্ব শাহী মহল্লা ক্যানেলপাড় এলাকায় মেসার্স একতা ট্রেডার্স- নামক প্রতিষ্ঠানের ব্যবসা করে আসছে। অভিযুক্ত সন্ত্রাসীরা বেশ কিছুদিন ধরেই তার কাছে অযৌক্তিক ভাবে টাকা পয়সা তথা চাঁদা দাবী করে আসছিল। কিন্তু সেই দাবী পূরণ না করায় লিটনের প্রতি ক্ষুব্ধ হয় মীরু ও তার বাহিনী। এর জেরে আজ শুক্রবার (১৮ জানুয়ারী) বেলা ১২টার দিকে ফতুল্লার পূর্ব শাহী মহল্লা এলাকার ঈদগাহ মাঠের রাস্তার উপর পৌছালে মীরুর নির্দেশে তার শ্যালক সন্ত্রাসী শরীফসহ অন্যান্য অভিযুক্তরা দেশীয় ধারালো অস্ত্র, হকিস্টিক ও লোহার রড নিয়ে লিটনকে পথরোধ করে হত্যার উদ্দেশ্যে অতর্কিত হামলা চালায়। সন্ত্রাসীদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর রক্তাক্ত জখম হয় লিটন। একপর্যায়ে লিটনের সাথে থাকা ইট ক্রয়ের নগদ ২ লাখ ২০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয় এবং হত্যার হুমকি দেয় হামলাকারীরা।
এদিকে হামলার সংবাদ পেয়ে ফতুল্লা মডেল থানার এস.আই আসাদুর রহমানের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। এসময় সন্ত্রাসীরা পালিয়ে গেলেও হামলায় ব্যবহৃত একটি দেশীয় তৈরী ধারালো ছুরি উদ্ধার করেছে পুলিশ।
ফতুল্লা মডেল থানার ওসি এসএম মঞ্জুর কাদের সময় নারায়ণগঞ্জকে জানান, সন্ত্রাসীদের সাথে কোন আপোষ নয়। মীরুর বিরুদ্ধে থানায় বেশ কয়েকটি অভিযোগ রয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবসা নেয়া হবে।
সূত্র জানায়, ইতিপূর্বে চিতাশাল এলাকায় ডিশ ব্যবসা দখলে নিতে ব্যপক তান্ডব চালিয়েছিল মীরু বাহিনী। পুলিশের তোপের মুখে তাদের পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। এর আগে ডিএন রোডের ইজিবাইকের (অটো) সেক্টর নিয়ন্ত্রণ নিতে মরিয়া হয়ে উঠে মীরু। আওয়ামীলীগ ৪র্থ বারের মত ক্ষমতায় আসা মাত্রই মীরুর এহেন লাগামহীন কর্মকান্ডের ফলে চরম আতঙ্কে রয়েছে স্থানীয় বাসিন্দারা। এর প্রেক্ষিতে মাত্র কয়েক দিন আগে মীরুকে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে শাসিয়ে দেন এসপি হারুন উর রশিদ। এতেও নিজের লাগাম কষেনি মীরু। উল্টো আবারো রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে লিপ্ত হচ্ছে এই সন্ত্রাসী। তাই জনমনে প্রশ্ন উঠছে, মীরু প্রসঙ্গে এবার কি পদক্ষেপ নেবেন পুলিশ সুপার? সহযোগি সংগঠন স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা পরিচয়ে সন্ত্রাসী মীরুর এমন কর্মকান্ডে সাধারণ মানুষের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে আওয়ামীলীগ।