নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( ফতুল্লা প্রতিনিধি ) : নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় প্রথম স্ত্রীর ধাক্কায় ইজিবাইক থেকে স্বামী ইয়াসিন আরাফাত দুলাল (২৫) নামে যুবক ফেলে হত্যার ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। ২রা জুন বুধবার সন্ধ্যায় নিহত ইয়াসিন আরাফাত দুলালের পিতা আব্দুল হাফিজ রাড়ি বাদী হয়ে নিহতের প্রথম স্ত্রীর বিরুদ্ধে ফতুল্লা মডেল থানায় একটি মামলাটি দায়ের করেন। নিহত ইয়াসিন আরাফাত দুলাল ফতুল্লার ভুইগড়ে এয়ারটেল কর্মকর্তা ছিলো। তিনি ফতুল্লা থানা গেইট সংলগ্ন ইস্রাফিল সরকার রোডে দারোগার বাড়ীতে বাড়ায় বসবাস করতো বলে জানা যায়।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালের এপ্রিল মাসের ৪ তারিখে বরিশাল জেলার মেহেন্দিগঞ্জ থানার বাহেরচরের ওয়াজেদ গাজীর কন্যা ও ঢাকার মুগদা হাসাপাতালের আয়া আয়েশা আক্তার কেয়া (২৬) কে বিয়ে হয়। তার ছেলের সাথে বিয়ের পূর্বেও আরো একটি বিয়ে হয়েছিলো ঘাতক আয়েশা আক্তার কেয়ার। সেই ঘরে একাধিক সন্তানাদি রয়েছে। বিয়ের পর থেকে তার ছেলের সংসারে স্ত্রীর সহিত বনিবনা হচ্ছিলো না। তার ছেলের সাথে সংসার করাকালীন সময়েও ঘাতক আয়েশা আক্তার কেয়া তার পূর্বের স্বামীর সাথে যোগাযোগ অক্ষুন্ন রেখেছিলো। সেই স্বামীর সাথে যোগাযোগ অক্ষুন্ন করে নিহত ইয়াসিন আরাফাত দুলালের সাথে খারাপ আচরন ও নির্যাতন করতো।
এতে করে নিহত ইয়াসীন দুলাল তার স্ত্রীর বিরুদ্বে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসের ২২ তারিখে ফতুল্লা মডেল থানায় একটি সাধারন ডায়েরী করে। এক পর্যায়ের সাধারন ডায়েরীর ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসের ২৭ তারিখে তাদের ছেলেকে ঘাতক স্ত্রী আয়েশা আক্তার কেয়া কে তালাক দিতে বাধ্য করলে সে তালাক প্রদান করে। এরপর থেকে বিবাদী ও তার স্বজনেরা ছেলে ইয়াসীন দুলাল কে হত্যা করার ফন্দি করতে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে চলতি বছরের ৩০ই মে রাতে বিবাদী আয়েশা আক্তার কেয়া তার ছেলেকে ফতুল্লার ভুইগড় কড়ইতলাস্থ ঢাকা- নারায়ণগঞ্জ মহাসড়কের উপর ইজিবাইক থেকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয়। এমন সময় পেছন থেকে আসা একটি কাভার্ড ভ্যানের চাপায় ঘটনাস্থলেই তার ছেলের মৃত্যু হয়। এ সময় ইজিবাইকে থাকা নিহতের প্রথম স্ত্রী দৌড়ে পালিয়ে যায়।
এ বিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানার ইনচার্জ রকিবুজ্জামান জানান, নিহত ইয়াসিন আরাফাত দুলাল এর পিতা বাদী হয়ে নিহতের প্রথম স্ত্রী আয়েশা আক্তার কেয়াকে আসামী করে ২রা জুন বুধবার সন্ধ্যায় মামলা দায়ের করেছেন। আসামীকে গ্রেফতার করার চেস্টা চলছে।
উল্লেখ্য ৩০ই মে রবিবার রাত সাড়ে ১০ টার দিকে ইয়াসিন দুলাল ও তার স্ত্রী আয়েশা আক্তার শিবু মার্কেট থেকে ইজিবাইকে হয়ে উঠে। পথিমধ্যে তারা একে অপরের মধ্যে ঝগড়ায় লিপ্ত হয়। এক পর্যায়ে ঝগড়া হাতাহাতির পর্যায়ে পৌছালে ইজিবাইক চালক তাদেরকে বাধা প্রধানসহ নামিয়ে দেয়ারও কথা বলে। কিন্তু ইজিবাইকটি ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডে ফতুল্লার ভুইগড় কড়ইতলা এলাকায় পৌছামাত্র আয়েশা আক্তার ধাক্কা মেরে দুলালকে রাস্তায় ফেলে দেয়। এ সময় পেছন থেকে আসা চলন্ত একটি কাভাডভ্যান দুলালকে চাপা দিয়ে চলে যায়। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
পরে ৩১ই মে সোমবার দুপুরে ফতুল্লা মডেল থানায় দুলালের মরদেহ শনাক্ত করেন ফতুল্লা এয়ারটেল ডিস্টিবিউশন ম্যানেজার কাউসার আহমেদ। নিহত দুলালের পকেটে থাকা ফতুল্লা শাখার ইসলামী ব্যাংকের ব্যাংক চেক থেকে পরিচয় জানতে পেরে বরিশালে নিহতের পরিবারকে বিষয়টি অবগত করে পুলিশ।