নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা মডেল থানায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আরেকটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। ওই মামলায় তিনি ছাড়াও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমানকেও আসামি করা হয়েছে।
বুধবার দুপুরে সাহিদা বেগম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। সাহিদার ছেলে বাসচালক আবুল হোসেন মিজি (৩১) গত ১৯ জুলাই বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালীন ঢাকায় যাবার পথে সাইনবোর্ডে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। আবুল হত্যা মামলায় ৮০ জনকে এজাহারনামীয় আসামি করা হয়েছে বলে জানান ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আযম।
তবে, এই মামলায় এখন পর্যন্ত কেউ গ্রেপ্তার হননি।
শামীম ওসমানের ছেলে ইমতিনান ওসমান অয়ন, ভাতিজা আজমেরী ওসমান, শ্যালক তানভীর আহমেদ টিটু, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত মো. শহীদ বাদল, মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক শাহ নিজাম, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের সদ্য সাবেক মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীর ছোটভাই মহানগর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আহাম্মদ আলী রেজা উজ্জ্বলও রয়েছেন আসামির তালিকায়।
এছাড়া, ২০০ থেকে ২৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন গত ১৯ জুলাই দিনভর ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের যাত্রাবাড়ি থেকে কাঁচপুর পর্যন্ত পুলিশ ও আওয়ামী লীগের লোকজনের সাথে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষ চলে। মামলার নথিসূত্রে জানা যায়, আবুল হোসেন মিজির গ্রামের বাড়ি চাঁদপুর সদরে। ঢাকার একটি পরিবহনের বাসচালক আবুল পরিবার নিয়ে নারায়ণগঞ্জ শহরের জল্লারপাড় এলাকায় থাকতেন। গত ১৯ জুলাই দুপুরে ঢাকার সদরঘাটে কর্মস্থলের দিকে যাচ্ছিলেন তিনি। সড়কে কোনো বড় যানবাহন না থাকায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় চড়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় সাইনবোর্ড এলাকায় আওয়ামী লীগের লোকজন আন্দোলনকারীদের উপর নির্বিচারে গুলি করলে একটি গুলি তার কোমরে এসে লাগে।
স্থানীয়রা তাকে দ্রুত পাশের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আবুল। পরদিন তাকে চাঁদপুরের গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয় বলে জানান তার মা সাহিদা।
উল্লেখ্য, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে হতাহতের ঘটনায় গত শনিবার থেকে বুধবার রাত পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জের পাঁচটি থানায় ছয়টি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। এরমধ্যে পাঁচটি মামলার প্রধান আসামি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।