প্রেমিকাকে তুলে নিতে র্ব্যাথ হওযায় প্রেমিকার বাবাকে হত্যা

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : নারায়ণগঞ্জ ফতুল্লায় প্রেমের উন্মাদনায় প্রেমিকাকে তুলে নিতে র্ব্যাথ হওযায় প্রেমিকার বাড়িতে হামলা ও প্রেমিকার বাবাকে হত্যা করেছে প্রেমিক ও তার সহযোগীরা। প্রেমিকসহ তার বন্ধুরা। বুধবার ১৬ মার্চ ফতুল্লা প্রেমিকসহ তার বন্ধুরা। বুধবার ১৬ মার্চ ফতুল্লা থানাধীণ ভুঁইগড় রঘুনাথপুর এলাকায় ভোর ৩ টায় মেয়েকে ঘর থেকে তুলে নেয়ার সময় বাধা দিতে গেলে বাবা মনিন্দ্র অধিকারীকে (৫০) কুপিয়ে হত্যা করেছে প্রেমিকসহ তার সহযোগী সন্ত্রাসীরা।

নিহত মনিন্দ্র অধিকারী লালমনিরহাটের কালিগঞ্জ থানার কৃজ্ঞদিশা এলাকার মৃত উতিন্দ্র অধিকারীর ছেলে। তিনি বাড়ির কেয়ারটেকার এর দায়িত্ব পালন করতেন ও রিকশা চালাতেন।

এ ঘটনায় সম্পৃত্ত দুইটি মাইক্রোবাস, হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত রক্তমাথা ছুরিসহ সাতজনকে আটক করেছে পুলিশ। ঘটনাস্থালে ফতুল্লা মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুর রাজ্জাক জানান, প্রেমিক তুহিনের সহযোগীসহ দুইটি হাইচ মাইক্রো (ঢাকা-মেট্রো-চ,১৫-৯৫৬৭, ঢাকা মেট্রো-ম, ০০-০৪৩৪) আটক করা হয়েছে। আটকৃতরা হলেন- নজরুল ইসলাম (৩৫), মনির হোসেন (৩৪),এসএস  পিটার ওরফে জাহিদ (২০),আলবার্ড সুশান্ত (১৯), জুয়েল (২৫), বাবু (২১) ও হৃদয়সহ (২৬) ৭ জনকে আটক করে পুলিশ।

ঝর্ণা রানী স্থানীয় হাজী পান্ডে আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির ছাত্রী আর তার ছোট এক মেয়ে ও এক ছেলে সন্তানও রয়েছে। তিনি জানান, গত বছর কালীপূজায় রাজধানী ঢাকার শ্যামপুর থেকে তুহিনের ডিজিটাল সাউন্ড সিন্টেম ভাড়া এনে রগুনাথপুরে কালিপূজায় উৎসব করেন। ওই উৎসবেই তুহিনের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। আর ওই দিনই তুহিন প্রেমের প্রস্তাব দেয় তাকে। এতে ঝর্ণা রানী তার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। কারণ তুহিন মুসলিম আর ঝর্ণা রানী হিন্দু ধর্মের। এরপর ঝর্ণার মোবাইল নম্বার সংগ্রহ করে তুহিন প্রায় সময় তাকে উত্যক্ত করত। নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ এর প্রতিবেদককে ঝর্ণা রানী আরো জানায়, তুহিনের হুমকিতে এক পর্যায়ে তার সঙ্গে প্রথম সোনারগাঁওয়ে বাংলার তাজ মহলে ঘুরতে যায়। পরে দ্বিতীবার শ্যামপুর ইকোপার্কে বেড়াতে যায়। সর্বশেষ ৮ ফেব্রুয়ারি পাগলা মেরিএ্যান্ডারসন তুহিনের সঙ্গে দেখা করি। এরপর থেকে মোবাইল ফোন বন্ধ করে রাখি। এতে তুহিন তার বন্ধু তানভিরকে আমাদের বাসায় পাঠায়। তানভির আমাদের বাসায় এসে অনেক উচ্চবাচ্চ্য করে। এসময় স্থানীয় লোকজন বিষয়টি জানতে পেরে তানভিরকে মারধর করে। ওই সময় তানভিরের পরিবারের লোকজন পুলিশ নিয়ে আমাদের এলাকায়ও গিয়েছিলেন।

ঝর্ণা আরও জানান, সম্প্রতি ভারতে বসবাস করেন এক ছেলের সঙ্গে আমার বিয়ে কথাবার্তা চলছে। বিষয়টি তুহিন জানতে পেরে আমাকে অনেক হুমকি দেয় এবং আমার বাবাকে হত্যা করে আমাকে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়ার হুমকিও দেয়। এরপর ভোরে লোকজন নিয়ে এসে আমার বাবাকে এলোপাথারী ছুড়িকাঘাত করে আমাকে মাইক্রোতে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে তাদের ধাওয়া করে আটক করেন।

ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল উদ্দিন নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ এর প্রতিবেদককে জানান, ভুইগড় রগুনাথপুর এলাকায় এনামুল হকের বাড়িতে পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন মনিন্দ্র অধিকারী। ওই বাড়িতেই কেয়ারটেকারের কাজ করতেন তিনি। মনিন্দ্র অধিকারীর তিন মেয়ের মধ্যে মেঝ মেয়ে ঝর্না অধিকারী (১৭) ঢাকার ছেলে তুহিন নামে এক যুবকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। তাদের প্রেমের সম্পর্ক পরিবারের লোকজন জানতেন না। ঝর্নার পরিবার তার বিয়ে ঠিক করে পাগলা এলাকার এক ছেলের সঙ্গে। ঝর্না এ বিয়েতে রাজি না হয়ে তার প্রেমিক তুহিনকে বিষয়টি অবগত করেন। পরে দুটি মাইক্রোবাসে তুহিনসহ তার বন্ধুরা বুধবার ভোরে রগুনাথপুরের বাড়ি থেকে ঝর্নাকে তুলে নিয়ে যাওয়ার সময় বাবাসহ পরিবারের লোকজন বাধা দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ঝর্নার বাবা মনিন্দ্র অধিকারীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে তারা।

তিনি আরো জানান, মনিন্দ্র অধিকারীকে হত্যা করে পালিয়ে যাওয়ার সময় নিহতের স্ত্রীসহ প্রতিবেশীরা সাতজনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। এ সময় তাদের ব্যবহৃত দুটি মাইক্রোবাসও জব্দ করা হয়। মনিন্দ্র অধিকারীর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

add-content

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও খবর

পঠিত