নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি ): নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থিতা বাতিল হওয়ার পর তা ফিরে পেতে মরিয়া হয়ে পড়েছে কথিত ক্যাসিনো সম্রাট সেলিম প্রধান।
এবার প্রার্থিতা ফিরে পেতে সেলিমের করা দুটি আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালতের মূল্যবান সময় নষ্ট করায় ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৬ মে) প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আট সদস্যের আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন। ক্যাসিনো কান্ডে আলোচিত সেলিমের করা দুটি আবেদনের বিপরীতে তাঁকে ৫ হাজার টাকা করে মোট ১০ হাজার টাকা খরচা (কস্ট) হিসেবে দিতে হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা। জানা গেছে, প্রার্থিতা ফিরে পেতে করা এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৩০ এপ্রিল রুল দিয়ে হাইকোর্ট সেলিমের মনোনয়নপত্র গ্রহণ করতে ও তাঁকে প্রতীক বরাদ্দ দিতে নির্দেশ দেন। ফলে তাঁর নির্বাচনে অংশ নেওয়ার পথ খোলে।
ওই উপজেলায় ২১ মে ভোট গ্রহণের তারিখ ধার্য রয়েছে। হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে উপজেলা পরিষদটির নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদের এক প্রার্থী ও নির্বাচন কমিশন আপিল বিভাগে পৃথক আবেদন (লিভ টু আপিল) করে। পৃথক আবেদনের ওপর শুনানি নিয়ে ৬ মে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত হাইকোর্টের আদেশ আট সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেন। ফলে সেলিমের নির্বাচনে অংশ নেয়া থেমে যায়। এরপর চেম্বার আদালতের দেওয়া স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার চেয়ে পৃথক দুটি আবেদন করেন সেলিম। যা চেম্বার আদালত হয়ে বৃহস্পতিবার আপিল বিভাগে শুনানির জন্য ওঠে। শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ সেলিমের আবেদন দুটি নিষ্পত্তি করে দিয়ে চেম্বার আদালতের দেওয়া স্থগিতাদেশ চলমান থাকবে বলে আদেশ দেন। একই সঙ্গে আদালত সেলিমকে পাঁচ হাজার টাকা করে মোট ১০ হাজার টাকা খরচা হিসেবে দিতে আদেশ দেন।
আদালতে সেলিমের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী এ কে এম নুরুল আলম। অপর প্রার্থী হাবিবুর রহমানের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশীদ আলম খান ও আইনজীবী মাহিন এম রহমান। নির্বাচন কমিশনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খান মোহাম্মদ শামীম আজিজ। পরে সেলিমের আইনজীবী এ কে এম নুরুল আলম বলেন, আবেদন দুটি তাঁর মক্কেল নিজে না চালানোর কথা জানান। শুনানি পর্যায়ে আসার পর আবেদন দুটি না চালানোর প্রেক্ষাপটে আদালতের মূল্যবান সময় নষ্ট করার দিক বিবেচনায় আপিল বিভাগ ৫ হাজার টাকা করে মোট ১০ হাজার টাকা খরচা হিসেবে সেলিমকে দিতে বলেছেন। নথিপত্র থেকে জানা যায়, নৈতিক স্খলনজনিত ফৌজদারি অপরাধে (দুর্নীতির মামলা) দোষী সাব্যস্ত হয়ে চার বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন সেলিম।
সেই দণ্ড থেকে মুক্তিলাভের পর পাঁচ বছর অতিবাহিত না হওয়ার দিক উল্লেখ করে গত ২৩ এপ্রিল সেলিমের মনোনয়নপত্র বাতিল করেন সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তা। এর বিরুদ্ধে সেলিম আপিল কর্তৃপক্ষের কাছে আপিল করেন। যা গত ২৮ এপ্রিল নামঞ্জুর হয়। আপিল কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে প্রার্থিতা ফিরে পেতে সেলিম হাইকোর্টে রিট করেন।