নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( স্টাফ রিপোর্টার ) : একাদশ নির্বাচনে মনোনয়ন নিয়ে দেওয়ার কথা বলে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের প্রভাবশালী এমপি শামীম ওসমান ও ১ আসনের গোলাম দস্তগীর গাজীকে টার্গেট করেছে একটি প্রতারক চক্র। প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব, কখনো প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের পি এস পরিচয়ে শামসুল/মাসুদ/মনির নামে পরিচয় দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিতে শেষ প্রান্তে ছিলো তাদের প্রতারণার ফাঁদ।
তবে গত বুধবার (৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় গাজীপুরের বোর্ডবাজার এলাকা থেকে সজীব ওয়াজেদ জয়ের পি এস পরিচয়ের পিএস পরিচয় দানকারী প্রতারককে আটক করেছে র্যাব-১। আটককৃত ওই প্রতারকের নাম সাব্বির মন্ডল (২৭)। এসময় তার কাছ থেকে ২টি মোবাইল ফোন সেট ও ৮টি সিমকার্ড উদ্ধার করা হয়। সে গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার উত্তর গুটিয়া সরদারপাড়া এলাকার আইয়ুব আলীর ছেলে। বর্তমানে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের গাছা থানার হারিকেন রোড এলাকার সালাউদ্দিন প্লাজার সামনে জনৈক নাসির উদ্দিনের বাড়ির ভাড়াটিয়া।
জানা গেছে, এছাড়াও ৩০-৪০ জন এমপির কাছে মোবাইল ফোনে বা এসএমএসের মাধ্যমে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে প্রত্যেকের কাছে লাখ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। ওই সব এমপির অভিযোগের ভিত্তিতে বুধবার সন্ধ্যায় অবস্থান নিশ্চিত হয়ে সাব্বির মন্ডলকে আটক করা হয়। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে সাব্বির জানান, দীর্ঘদিন ধরে প্রধানমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের পি এস পরিচয় দিয়ে সচিবালয় সহ বিভিন্ন সরকারি সংস্থায় চাকরি দেওয়ার নামে বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
জিজ্ঞাসাবাদে সাব্বির মন্ডল স্বীকার করেন, দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন উপায়ে এ ধরনের প্রতারণা করে আসছেন। তিনি বিভিন্ন সময় প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব, কখনো প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের পি এস শামসুল/মাসুদ/মনির নামে পরিচয় দিয়ে বগুড়া-৫ আসনের এমপি হাবিবুর রহমান, গাইবান্ধা-৩ আসনের এমপি ডা. ইউনুস সরকার, বরিশাল-৫ আসনের এমপি জেবুন্নেছা আফরোজ, খুলনা-৩ আসনের এমপি মন্নুজান সুফিয়ান, কক্সবাজার-৪ আসনের এমপি আবদুর রহমান, সিলেট-৩ আসনের এমপি মাহমুদুস সামাদ, গাজীপুর-৫ আসনের এমপি মেহের আফরোজ চুমকি, গাজীপুর-৩ আসনের এমপি অ্যাডভোকেট মো. রহমত আলী, লালমনিরহাট-১ আসনের এমপি মোতাহার হোসেন, নারায়ণগঞ্জের এমপি শামীম ওসমান ও গোলাম দস্তগীর গাজী, ঢাকার এমপি অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুনসহ ৩০-৪০ জন এমপির কাছে মোবাইল ফোনে আবার কখনো কখনো এসএমএসের মাধ্যমে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে প্রত্যেকের কাছে লাখ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন।
এছাড়া বিভিন্ন মন্ত্রী, এমপি, সচিব, ব্যবসায়ীকে ফোন দিয়ে বিভিন্ন চাঁদা, ঘুষ দাবি ও চাকরির তদবির করে আসছিলেন। পাশাপাশি পি এস পরিচয় দিয়ে সচিবালয়সহ বিভিন্ন সরকারি সংস্থায় চাকরি দেওয়ার নামে মানুষের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে এই প্রতারকের বিরুদ্ধে।