নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( নিজস্ব সংবাদদাতা ) : নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে আওয়ামীলীগ ও জাতীয় পার্টির দুই গ্রুপের মাঝে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। ৫ জুলাই মঙ্গলবার রাতে ও ৬ জুলাই বুধবার সকালে পৌরসভা এলাকায় সংঘটিত এ সংঘর্ষে উভয় গ্রুপের কমপক্ষে ৮ জন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে।
স্থানীয়রা জানায়, সোনারগাঁ উপজেলাধীন পৌর এলাকায় অধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে পৌর ছাত্রলীগ নেতা নবনুর হোসেন সাবিক গ্রুপ ও জাতীয় পার্টির নেতা দুলাল মিয়া গ্রুপের মাঝে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় রোহান নামে এক ছাত্রলীগ কর্মীর বাড়িতে হামলা চালিয়ে ঘরবাড়ি ভাংচুর করা হয়েছে বলেও জানায় তারা।
জানা গেছে, গত মঙ্গলবার রাতে সোনারগাঁ পৌরসভা কার্যালয়ের সামনের পেয়ারা গাছ থেকে ছাত্রলীগ নেতা অরবিন একটি কাঁচা পোয়ারা পেড়ে খেতে থাকে। এ সময় জাতীয় পার্টি নেতা দুলাল মিয়া ও তার ভাগিনা কাওছার, পেয়ারা পাড়াকে কেন্দ্র করে অরবিনের সাথে ঝগড়ায় লিপ্ত হয়। এক পর্যায়ে জাতীয় পার্টি নেতা দুলালের নেতৃত্বে দেশীয় লাঠিসোটা ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে ছাত্রলীগ নেতা নবনুর হোসেন সাবিকসহ ছাত্রলীগের অন্যান্য নেতাকর্মীর উপর হামলা চালায়। এতে উভয় গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের শুরু হয়।
এতে ছাত্রলীগ নেতা নবনুর হোসেন সাবিক, রোহান, অরবিন, সানি, উজ্জল, পলাশ এবং জাতীয় পার্টি নেতা কাওছার ও শাহ আলীসহ উভয় গ্রুপের অন্তত ৮ জন আহত হয় বলে জানা গেছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ গেলে পরিবেশ শান্ত হয়। পরে আহতদের স্থানীয় হাসপাতাল ও বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়েছে।
এদিকে, এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আজ বুধবার সকালে জাতীয় পার্টি নেতা দুলাল মিয়ার নেতৃত্বে ৩৫ থেকে ৪০ জন মিলে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে লাহাপাড়া গ্রামের ছাত্রলীগ নেতা রোহানের বাড়িতে গিয়ে হামলা চালায়। রোহনকে বাড়িতে না পেয়ে বাড়িঘর ভাংচুর করে তারা।
আরও জানা গেছে, মঙ্গলবার রাতে সংঘর্ষের পূর্বে পৌরসভা কার্যালয়ে আসেন জাতীয় পার্টির যুগ্ম মহাসচিব ও নারায়ণগঞ্জ ৩ আসনের সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা। এসময় জাতীয় পার্টির নেতা কর্মীদের সঙ্গে একটি সভাও করেন তিনি। তিনি চলে যাওয়ার পরই এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে বলেও জানায় প্রত্যক্ষদর্শীরা।
পৌরসভা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নবনুর হোসেন সাবিক জানান, গত ৪ঠা জুন পৌরসভায় অস্থায়ী কোরবানীর গরুর হাট ইজারা পায় আওয়ামীলীগ নেতা জাহাঙ্গীর হোসেন। এই গরুর হাটের ইজারা নেয়াকে কেন্দ্র করে জাতীয় পার্টি নেতা দুলাল মিয়ার সঙ্গে বিরোধ চলছিল। তাই দুলাল মিয়ার নেতৃত্বে আমাদের উপর হামলা চালানো হয়।
এদিকে জাতীয় পার্টি নেতা দুলাল মিয়া জানান, গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা পৌরসভা কার্যালয়ে আসেন এবং জাতীয় পার্টির নেতা কর্মীদের সঙ্গে একটি সভা করেন। পরে রাত সাড়ে ৯টার দিকে এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা চলে যান। এরপর তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
এ ব্যাপারে সোনারগাঁও থানার অফিসার ইনচার্জ মো. হাফিজুর রহমান বলেন, শুনেছি গাছ থেকে কাঁচা পেয়ারা পাড়াকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ যাওয়ার পর পরিবেশ শান্ত রয়েছে। তবে এখনো পর্যন্ত কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে।