নারয়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( সৈয়দ সিফাত আল রহমান লিংকন ) : পুলিশ সার্বক্ষনিক আপনাদের সেবায় নিয়োজিত থাকে। আর এই সেবার মানকে র্দীঘাযু করতেই গঠিত হয়েছে কমিউনিটি পুলিশ। পুলিশ যেমনি দেশ ও জনগনের নিরাপত্তার স্বার্থে সেবা দেয়, তেমনি কমিউনিটি পুলিশিং এর কাজ হচ্ছে সমাজের মানুষকে সেবা দেয়া। একটা সময় ছিলো পুলিশ জনগনের সর্ম্পক ভালো ছিলোনা। প্রায় ২০ বছর আগে যদি অতিত দেখি, তাহলে এর অবস্থা খুবই খারাপ। একটি গ্রামে যদি হাফ পেন্ট পড়া হাবিলদার যেত, তদাহলে গ্রামবাসী ভয়ে কাতর থাকতো। কিন্তু এখন বন্ধু সুলভ হয়ে গেছে। আর সামনে এই সর্ম্পক আরও ভালো হবে। দেখতে পারবেন পুলিশ ও জনগন তফাৎ থাকবেনা।
এই কমিউনিটি পুলিশ যারা ভালো কাজ করে তাদেরকে এভাবেই পুরস্কিত করে যাবে। আজকে ইউরোপ, আমেরিকা তারাও বাংলাদেশকে নিয়ে প্রশংসা করে। কেন করে, কারণ এটা আমদের সফলতা। আজকে পাকিস্তান, আফগানিস্তান, এসব দেশ যদি হতো এখানে এতো শান্তির্পূণ অনুষ্ঠান হতো না। সন্ত্রাসীদের হামলায় আমরা হাজার হাজার মানুষ মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তাম। কিন্তু আজ বাংলাদেশের আইন শৃঙ্খলা নিরাপত্তার চাদরে রয়েছে বলেই, আমরা শান্তিতে বসবাস করতে পারছি। তাদের উন্নত টেকনোলজী থাকলেও বাংলাদেশ প্রশংসায় পিছিয়ে নেই।
২৮ই অক্টোবর শনিবার দুপুরে কমিউনিটি পুলিশিং ডে- ২০১৭ উপলক্ষে মুখ্য আলোচকের বক্তব্যে এসব কথা বলেন অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ আলী মিয়া (পিপিএম, ডিআইজি বাংলাদেশ পুলিশ)। এর আগে নারায়ণগঞ্জের চাষাড়া থেকে র্যালি বের হয়ে বঙ্গবন্ধু সড়ক প্রদর্শন করে রাইফেল ক্লাবে এসে শেষ হয়। জেলা পুলিশ ও কমিউনিটি পুলিশিং কমিটির আয়োজনে নারায়ণগঞ্জ রাইফেল ক্লাব প্রাঙ্গনে এই অনুষ্ঠানটিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি এড.হোসনে আরা বাবলী, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক রাব্বী মিয়া।
জেলা পুলিশ সুপার মঈনুল হক এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনায় ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান। সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিউনিটি পুলিশের সাধারণ সম্পাদক ডা: শাহ নেওয়াজ, মহানগর কমিউনিটি পুলিশের সভাপতি সোলাইমান ও সাধারণ সম্পাদক শাহ্ নিজাম, শ্রমিক লীগের শ্রম ও কল্যান বিষয়ক সম্পাদক কাউসার আহম্মেদ পলাশ, ১৩ নং ওর্য়াড আওয়ামীলীগ এর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব সৈয়দ লুৎফর রহমান, বাংলাদেশ হোসিয়ারী এসোসিয়েশনের সভাপতি ও ১৫ নং ওর্য়াড কাউন্সিলর নাজমুল আলম সজল, প্যানেল মেয়র ও ৬নং ওর্য়াড কাউন্সিলর মতিউর রহমান মতি, প্রমুখ। সার্বিক তত্ত্বাবধায়নে ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্কেল-ক) মো: শরফুদ্দিন আহম্মেদ, ফারুক হোসেন, সদর মডেল থানা ভারপ্রাপ্ত ওসি মো: শাহীন শাহ পারভেজ, ফতুল্লা মডেল থানা ভারপ্রাপ্ত ওসি কামাল উদ্দিন, সদর মডেল থানা ওসি তদন্ত আব্দুর রাজ্জাক, সেকেন্ড অফিসার শফিক সাগর সহ জেলা গোয়েন্দা শাখা ও আইন শৃঙ্খলা নিরাপত্তা বাহিনীর অন্যান্য সদস্যবৃন্দ।
অনুষ্ঠানে এমপি এড.হোসনে আরা বাবলী বলেন, সমগ্র দেশে সুনাম খ্যাত স্থান নারায়ণগঞ্জ। এখানেই র্বতমান সরকার আওয়ামীলীগ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ব্যবসা বানিজ্য সবকিছুই নারায়ণগঞ্জে রয়েছে। তাই অতিতের ইতিহাস ও ঐতিহ্য রক্ষার্থে বিশ্ব দরবারে নারায়ণগঞ্জকে ভালো স্থানে রাখতে হবে। আগের চাইতে এখন নারায়ণগঞ্জের ভাবমূর্তি অনেক ভালো এবং জনগনের মাঝে গ্রহণ যোগ্যতাও বৃদ্ধি পেয়েছে। আর যারা এর পিছনে কাজ করে যান তাদের একটি বড় অংশ জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার। দুজনেই নারায়ণগঞ্জের বাসীন্দা নন, কিন্তু দায়িত্বের কারণে নারায়ণগঞ্জের মানুষের সুখে দু:খে কাজ করে যাচ্ছেন। গতকাল বিভিন্ন কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে রোহিঙ্গাদের ত্রান দিতে গিয়ে দিখেছি নারায়ণগঞ্জের অনেক গুলো সংগঠন ত্রান দিচ্ছে। সেখানে মিনি একটি নারায়ণগঞ্জ সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া পুলিশও সেখানে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।
জেলা প্রশাসক রাব্বি মিয়া বলেন, আমাদের যে বেতন তা হয়ে থাকে বাংলার আপামর জনতার। একজন ভিক্ষুকও আমাদের বেতনের অংশ। কারণ একজন ভিক্ষুক যখন কোনও পন্য কিনে তাঁর কাছ থেকে পন্যেও সাথে একটি ভ্যাট আদায় করা হয়। আর তা থেকেই আমাদের বেতন হয়। পুলিশ জনতা, জনতাই পুলিশ এই স্লোগানকে বাস্তবায়ন করতে হবে। যে বাংলাদেশের স্বপ্ন বঙ্গবন্ধু দেখেছেন, যে বাংলাদেশ স্বাধীন করতে বীর মুক্তিযুদ্ধারা রক্ত ঝড়িয়েছেন। সেই স্বাধীন বাংলাদেশ সমৃদ্ধ করতে অর্থনীতি পরিবর্তন করতে হবে। তাই আমরা যে যেখানেই কাজ করছি না কেন, আমাদের সকলেরই উদ্দেশ্যে সমৃদ্ধ একটি বাংলাদেশ। আমি কি কাজ করছি সেটাই বিষয়। অন্যরা কি করছে তা নয়। আমার সবচেয়ে বড় পরিচয় আমি সরকারী কর্মচারী। তাই আমরা নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন স্তরে উন্নয়ন করে যাচ্ছি। ইতোমধ্যেই আমরা নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগারের প্রায় ৬ হাজার বর্গ ফুটের একটি গার্মেন্ট নির্মাণ করছি। যেখানে বন্দিরা কাজ করে অর্থ উপার্জন করতে পারবে। আগামী মাসেই এর উদ্বোধন করার চেষ্টা করছি। এটা হবে প্রিয় নারায়ণগঞ্জ।
সভাপতির বক্তব্যে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মঈনুল হক বলেন, একজন বক্তা বলেছেন আমরা বাহির থেকে এসে কাজ করে চলে যাই। আসলে আমরা নারায়ণগঞ্জেরই মানুষ। আমরা যেখানে কাজ করি সেখানকার নাগরিক হয়ে যাই। আর এই নারায়ণগঞ্জ আলীগঞ্জের মাঠে আমি ক্রিকেট খেলেছি। এখানেই আমার কলেজ আর কৈশর কেটেছে। গত বছর ২৩ আগস্ট আমি যোগদান করি, ২৭ আগষ্ট নব্য জেএমবি তামিম ও তার দুই সহযোগীকে মেরে ফেলা হয়। সেই দিন থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জের জঙ্গি দমন, সন্ত্রাস দমন ও মাদক সন্ত্রাসীদের দমনে আপনাদের সহযোগীতায় কাজ করে যাচ্ছি। তারই ধারাবাহীকতায় সন্ত্রাসী মাস্টার দেলু, মাদক স¤্রাট বন্দুক শাহীন ও কিলার মুক্তারকে ক্রস ফায়ারের মাধ্যমে বিদায় করেছি।