নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( রূপগঞ্জ প্রতিনিধি ) : কয়েক দিন থেকেই থেমে থেমে হওয়া বৃষ্টিতে রূপগঞ্জ উপজেলার গোলাকান্দাইলবাসী পানিতে তলিয়ে গেছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে গোলাকান্দাইল, বলাইখাঁ, ইসলামবাগ কালী, আমলাব মুসলিমপাড়াসহ রূপগঞ্জে বিভিন্ন এলাকার প্রায় কয়েক সহস্রাধিক পরিবার। কোথাও কোথাও বসত বাড়িতেই পানি, আবার কোথাও রাস্তার উপরে।
এছাড়াও গাউছিয়া মার্কেট, তাঁতবাজার, নুর ম্যানশন, আব্দুল হক মার্কেটেও পানি ঢুকে পড়েছে। টানা এক সাপ্তাহ বৃষ্টি, কখনো ঝিরিঝিরি, গুঁড়ি গুঁড়ি আবার কখনো অবিরাম। বৃষ্টি এলেই প্রতি বছর গোলাকান্দাইল ও বলাইখা এলাকা তলিয়ে যায়। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। বাড়ি ঘর তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা নিয়েই পানিবন্দি অবস্থায় উপজেলার গোলাকান্দাইল ও বলাইখাঁ এলাকার মানুষের দিন কাটছে। এই অবস্থায় ঘর থেকে বের হওয়ার জো নেই পানিবন্দি এলাকার বাসিন্দাদের। এই বৃষ্টিতে পানিবন্দি এলাকায় দেখা দিচ্ছে খাবার পানির সংকট। এমতাবস্থায় অনেকেই বৃষ্টির পানি দিয়ে রান্না ও থালা-বাসন ধোঁয়ার কাজ করছে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, গোলাকান্দাইল নতুন বাজার মূল সড়কে বৃষ্টির পানি জমে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র জলজট। মূল সড়কে এক হাঁটু পানি মাড়িয়ে চলতে হচ্ছে স্থানীয়দের। সেখানে কোনো গাড়ি চলাচলও করতে পারছেনা।
এক রিকশা চালক বলেন, আমরা দিন আনি, দিন খাই। রাস্তায় এমন জলাজট থাকলে আমরা রাস্তায় গাড়ি চালাতে পারি না। কারণ জলাবদ্ধতায় সড়কের গর্তে পড়ে গাড়ির চাকা ভেঙ্গে যায়।
গোলাকান্দাইল এলাকার বাসিন্দা বলেন, প্রতি বছরই বৃষ্টির পানিতে এই এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এবারও হয়েছে, তবে এবারের বৃষ্টির পানির সাথে বিভিন্ন ডাইং কারখানার বর্জ্যের পানি মিশিত হওয়ায় জলাবদ্ধ পানিতে ভীষণ দুর্গন্ধ এবং চারদিকে ডেঙ্গু মশার ছড়াছড়ি লক্ষ করা যাচ্ছে।
গোলাকান্দাইল বিজয়নগর এলাকার বাসিন্দা নাম না বলার শর্তে বলেন, গত ১০বছরে একাধিক জলাশয় ও খাল ভরাট করে নিমার্ণ করা হয়েছে মিলকারখানা, বাসা-বাড়িসহ নানা স্থাপনা। ফলে বৃষ্টির পানি যাওয়ার পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে এছাড়াও বৃষ্টির পানিতে থৈ থৈ গোলাকান্দাইল তাঁতবাজার, নুর ম্যানশন মার্কেট, আব্দুল হক সুপার মার্কেটের দোকানগুলোও। জলাবদ্ধতার কারণে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। তাঁতবাজারের দোকানদাররা বলেন, পানি নিষ্কাষণের ব্যবস্থা করছেন না মার্কেট মালিক।
গোলাকান্দাইল ৬নং ওয়ার্ডের বর্তমান মেম্বার নাসির বলেন, এই বৃষ্টির জলাবদ্ধ পানি নিষ্কাষণের জন্য আমি রীতিমত বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছি। আমার এলাকায় বিভিন্ন জায়গায় জলাবদ্ধ পানি নিষ্কাষণের জন্যে পাইপ বসিয়েছি। এছাড়াও ছোট ছোট খালগুলো লোক দিয়ে পরিষ্কার করেছি। যাতে জলাবদ্ধ পানি সহজে নদীতে নামতে পারে।
এ ব্যাপারে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, এই বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে। আর সে ক্ষেত্রে পানি নিষ্কাষণের ব্যবস্থা না করলে এই এলাকার পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।