নাসিম ওসমানের ৯ম মৃত্যুবার্ষিকীতে মনির হোসেনের দোয়া

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( স্টাফ রিপোর্টার ) : নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের চারবারের নির্বাচিত সাংসদ প্রয়াত জননেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব নাসিম ওসমানের ৯ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে মো: মনির হোসেনের উদ্যোগে দোয়া মাহফিল ও রান্না করা খাবার বিতরণ করা হয়েছে। দোয়া মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন প্রয়াত নাসিম ওসমান এর সহধর্মিনী জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য পারভীন ওসমান এবং পুত্র আজমেরী ওসমান।

৩০ই এপ্রিল রবিবার বাদ আছর ডিআইটি করীম মার্কেট এলাকায় এ দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। এ সময়ে প্রয়াত নাসিম ওসমানের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত ও ওসমান পরিবারের সকল সদস্যের সু- স্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে মোনাজাত পরিচালনা করা হয়। এর আগে দিনব্যাপী পবিত্র কোরআন খতম দেয়া হয়।

দোয়া মাহফিলের পূর্বে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে পারভীন ওসমান বলেন, নারায়ণগঞ্জের মাটি ও মানুষের নেতা ছিলেন আপনাদের নাসিম ওসমান। তিনি ৪ বারের সংসদ সদস্য। কিন্তু কখনো ক্ষমতার জন্য রাজনীতি করেন নাই। রাজনীতি করতেন নারায়ণগঞ্জের মানুষের জন্য। তার মন্ত্রী হওয়ার কোন শখ ছিলো না। তার একটি ইচ্ছে ছিলো,  নারায়ণগঞ্জের মানুষের জন্য কিছু করবে। শুধু তার আসনের জনগনের কথাই চিন্তা করতেন না; তার চিন্তায় ছিলো নারায়ণগঞ্জের মানুষের কথা। একজন রাজনীতিবিদ কতটা মানুষের জন্য করতে পারেন তা আমি নাসিম ওসমান এর পাশে থেকে দেখতে পেরেছি। তার মতো কর্মীবান্ধব একজন রাজনীতিবিদ আমি কখনো দেখিনি। আমি নারায়ণগঞ্জের সর্বস্তরের মানুষের কাছে বলতে চাই দল মত নির্বিশেষে আপনারা আপনাদের নাসিম ভায়ের জন্য দোয়া করবেন। আল্লাহর কাছে দোয়া করবেন যাতে তার কবরকে জান্নাতের বাগান বানিয়ে দেন।

এর আগে দুপুরে নাসিম ওসমানের ৯ম মৃত্যুবাষির্কী পালনে ছেলে আলহাজ্ব আজমেরী ওসমান বাবার আত্মার মাগফিরাত কামনায় কবর জিয়ারত করেন। এসময় আজমেরী ওসমান পরিবারের সদস্য সহ নেতাকর্মীদের নিয়ে নাসিম ওসমানের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে আজমেরী ওসমান তার মা এবং একমাত্র পুত্র সন্তানকে নিয়ে শত শত নেতাকর্মীর গাড়ি বহর নিয়ে নারায়ণগঞ্জের শহর, সিদ্ধিরগঞ্জ, ফতুল্লা এবং বন্দরের যেসকল এলাকায় নাসিম ওসমানের মৃত্যুবার্ষিকী পালন করা হয়েছে সেসব এলকায় দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে যোগদান করেন।

প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের ৩০ এপ্রিল ভারতের রাজধানী দিল্লীর দেরাদুন শহরে থাকা অবস্থায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরন করেন তিনি। আর ১৯৫৩ সালের ৩১ জুলাই তিনি জন্মগ্রহণ করেন। প্রয়াত নাসিম ওসমান নারায়ণগঞ্জের অন্যতম রাজনৈতিক ওসমান পরিবারের বড় সন্তান। তার পিতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর, আওয়ামী লীগের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম সংগঠক, ভাষা সৈনিক ও স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত (মরণোত্তর) প্রয়াত সাংসদ এ.কে.এম শামসুজ্জোহা ও মা ভাষা সৈনিক ও রত্মগর্ভা নাগিনা জোহা। প্রয়াত এ.কে.এম সামসুজ্জোহার পাঁচ সন্তানের মধ্যে জেষ্ঠ্য সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত নাসিম ওসমান। তিনি ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে সুইসাইড স্কোয়াডে যুদ্ধ করেছেন। পরবর্তীতে ১৯৭৫ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বপরিবারে নিহত হওয়ার পর নববিবাহিতা বধূকে রেখে বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিশোধ নিতে সশস্ত্র যুদ্ধে অবতীর্ণ হন এবং কাদেরিয়া বাহিনীতে যোগদান করেন। পরবর্তীতে ১৯৮১ সালে তিনি দেশে ফিরে আসেন। প্রয়াত নাসিম ওসমান ১৯৮৪ ও ১৯৮৬ সালে জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী এবং ২০০৮ ও ২০১৪ সালে মহাজোট প্রার্থী হিসেবে জাতীয় সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০১৪ সালের ৩০শে এপ্রিল নাসিম ওসমান এর আকস্মিক মৃত্যুতে পরবর্তী সংসদ অধিবেশনে শোক প্রস্তাব রাখতে গিয়ে অঝোড়ে কেঁদেছিলেন সংসদ নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই নেতা নাসিম ওসমানের মৃত্যুবাষির্কীতে নারায়ণগঞ্জে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করা হয়।

add-content

আরও খবর

পঠিত