নারায়ণগঞ্জ আড়াইহাজারে শাকিল হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন করলো পি.বি.আই

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ (নিজস্ব প্রতিনিধি) :  নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে বালিয়াপাড়া এলাকার অটোরিক্সা চালক শাকিল (১৮) হত্যাকান্ডের মূল রহস্য উদ্ঘাটন সহ ঘটনার সাথে জড়িত অজ্ঞাতনামা আসামীদের গ্রেফতার করেছে নারায়ণগঞ্জ জেলা পি.বি.আই। বৃহস্পতিবার ( ২০ আগস্ট ) দুপুর ১টায় পি.বি.আই নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখা এক সংবাদ সম্মেলনে গণমাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

এসময় পিবিআই পুলিশ সুপার মনিরুল ইসলাম জানান , দীর্ঘ ০১ বছর ০৭ মাস পর চাঞ্চল্যকর ও নির্মম অটো রিক্সা চালক শাকিল (১৮) হত্যাকান্ডের মূল রহস্য উদ্ঘাটন সহ ঘটনার সাথে জড়িত অজ্ঞাতনামা আসামীদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি। তথ্য প্রযুক্তি ও স্থানীয় সূত্রকে কাজে লাগিয়ে মোবাইল ব্যবহারকরীর নিকট মোবাইল বিক্রেতা আসামী মো. আমিনুল ইসলামকে গতকাল রূপগঞ্জ থানা এলাকা হতে গ্রেফতার করা হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে তার সংগীয় আসামী মো. আরিফ চৌধুরীকে একই তারিখে রূপগঞ্জ থানা এলাকা হতে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত আসামী মো. আমিনুল ইসলাম ও মো. আরিফ চৌধুরীকে জিজ্ঞাসাবাদে তাদের নিকট হতে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ডিসিস্ট শাকিলের ব্যবহৃত অটোরিক্সাটি আসামী মো. আরব আলীর হেফাজত হতে উদ্ধার সহ গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃত আসামী মো. আমিনুল ইসলাম ও আরিফ চৌধুরীকে জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায়, ঘটনার ৭/৮ দিন পূর্বে সোনারগাঁ থানাধীন গাউছিয়া স্ট্যান্ডে অটোরিক্সা চালক শাকিলের সাথে পরিচয় হয় এবং শাকিলের মোবাইল নম্বর তারা সংগ্রহ করেন। শাকিলের সাথে তারা মাঝে মধ্যেই মোবাইলে কথা বলত। আসামীরা উভয়ই যুক্তি করে যে, শাকিলের ব্যবহৃত অটোরিক্সাটি তারা চুরি করে অন্যত্র বিক্রি করে দিবে। আসামী আরিফ চৌধুরী প্রেম করে বিবাহ করায় তার পরিবারের লোকজন তাকে বাসা হতে বের করে দেয়ায় আর্থিক সংকটে পড়ে। এছাড়া আসামী আমিনুল ডিসিষ্ট শাকিলের অটোরিক্রাটি দেখে লোভ সামলাতে না পারায় উভয় মিলে শাকিলের ব্যবহৃত অটোরিক্সাটি যে করেই হোক ছিনিয়ে নেয়ার জন্য পরিকল্পনা করতে থাকে। একপর্যায়ে মামলার ঘটনার দিন আসামী আরিফ তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর দিয়ে (ডিসিস্ট) শাকিলের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে ফোন করে গাউছিয়া আসতে বলে।শাকিল তার অটোরিক্রা নিয়ে মামলার ঘটনার দিন সন্ধ্যায় গাউছিয়া আসার পর তারা দুইজন যাত্রীবেশে শাকিলের অটোরিক্সা উঠে তাকে নিয়ে সোনারগাঁ থানাধীন তাজমহল এলাকায় যাওয়ার কথা বলে রওয়ানা করে।

মামলার ঘটনাস্থলে গেলে আসামীরা পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী ডিসিস্ট শাকিলকে অটোরিক্সা থেকে নামিয়ে ডিসিস্ট শাকিলের গলায় থাকা মাফলার ধরে আসামীরা ফাঁস দিয়ে শ্বাসরোধ করে অটোরিক্সা থেকে ফেলে দিয়ে নাকে মুখে আঘাত করে তাকে হত্যা করে। হত্যা নিশ্চিত করার জন্য ডিসিস্ট শাকিলের দুই চোখে রক্তাক্ত আঘাত করে। গ্রেপ্তারকৃত আসামী মোঃ আমিনুল ইসলাম ও আরিফ চৌধুরী ডিসিস্ট শাকিলের পকেটে থাকা টাকা, মোবাইল এবং শাকিলের ব্যবহৃত অটোরিক্সা নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল হতে পালিয়ে যায়। আসামী আমিনুল ইসলামের চাচাতো ভগ্নিপতি আসামী আরব আলী পেশাগতভাবে চোরাই অটোরিক্সা কম দামে ক্রয় করে বিক্রি করে থাকে তাই আসামী আমিনুল ও আসামী আরিফ চৌধুরী ডিসিস্ট শাকিলের ব্যবহৃত অটোরিক্সা টি বিক্রির উদ্দেশ্যে নিয়ে আসলে আসামী আরব আলীর চোরাই অটোরিক্সা জানা সত্বেও ক্রয় করে। আসামী আরব আলী ডিসিস্ট শাকিলের অটোরিক্রাটি নতুন হওয়ায় কারো কাছে বিক্রি না করে নিজেই ব্যবহার করতে থাকে।

উল্লেখ্য, এজাহার থেকে জানা যায় পিবিআই কর্তৃক মামলা গ্রহন করে ১৩/০১/১৯ খ্রিঃ। মামলার বাদী নিহতের ভাই আড়াইহাজারের বালিয়াপাড়া এলাকার মো.আবু বকর সিদ্দিকের ছেলে মো. সজিব (২৮) । এজাহার নামীয় আসামীর সংখ্যা অজ্ঞাতনামা।সন্দিহান আসামী মো. বিপ্লব (৩৮) কে সোনারগাঁ থানা পুলিশ গ্রেফতার করে। বর্তমানে জামিনে আছে। ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৬৪ ধারায় জবানবন্দীকৃত আসামীরা হলেন, তারাব পৌরসভার কান্দাপাড়া এলাকার হারিচ চৌধুরীর ছেলে মোঃ আরিফ চৌধুরী, সরাইল থানার বড়ইছড়া এলাকার মৃত- মুর্তুজা আলীর ছেলে মোঃ আমিনুল ইসলাম (২৫), একই থানার বৈসর এলাকার মৃত- মারুল্লা ছেলে মোঃ আরব আলী (২৩)।তাদের দুই জনের বর্তমান ঠিকানা তারাব পৌরসভার আটিপাড়া। ভিকটিমের ব্যবহৃত লুন্ঠিত মোবাইল ও অটোরিক্সা উদ্ধার করা হয়েছে।

add-content

আরও খবর

পঠিত