নারায়ণগঞ্জে যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতির চেষ্টা, গ্রেফতার ১

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( নিজস্ব প্রতিনিধি ) : নারায়ণগঞ্জে যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতি করতে গিয়ে জনতার হাতে আটক হয়েছেন নেছার উদ্দিন (৩২) নামে এক ডাকাত। পরে তাকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে দিয়েছে জনতা। ৪ঠা আগস্ট বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের ভূইগড় রঘুনাথপুর এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ওই দিনে দুপুরে বাসটির সুপার ভাইজার হাফিজুল ইসলাম উজ্জল বাদী হয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা করেছেন।

গণপিটুনিতে আহত নেছার সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি কান্দাপাড়া এলাকার নুরুল হকের ছেলে। তাকে প্রথমে নারায়ণগঞ্জের খাঁনপুর হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে সেখান থেকে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

তাৎক্ষণিক ২ ডাকাত বাস থেকে লাফিয়ে পালাতে সক্ষম হলেও ডাকাত দলের এক সদস্য নেছার উদ্দিনকে আটক করে যাত্রীরা। যাত্রীরা ডাকাত নেসার উদ্দিনকে উত্তম মাধ্যম দিয়ে চাঁনমারি রেললাইন আর্মি মার্কেটের বাস টার্মিনাল নিয়ে আসা হয়। পরে তাকে ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশের নিকট সোপর্দ করে। নেছার উদ্দিন (৩২)

স্থানীয়রা জানায়, নারায়ণগঞ্জ-জামালপুর রুটে চলাচল করা বুড়িগঙ্গা স্পেশাল পরিবহনের ঢাকা মেট্রো-ব-১১-৩৫৮১ এর দূরপাল্লার একটি বাস ভোর ৪ টায় যাত্রী নিয়ে জামালপুর থেকে নারায়ণগঞ্জে আসে। সকালে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের ফতুল্লার ভূইগড় রঘুনাথপুর এলাকায় যাত্রী নামানোর সময় ৩ জন যাত্রী বেশে বাসে উঠেন। গাড়ী কিছুটা পথ অতিক্রম করলে হঠাৎ তাদের মধ্যে একজন বাসের চালকের গলায় ছুরি ধরে এবং বাকি ২ ডাকাত পুরো বাসটি তাদের নিয়ন্ত্রণে নেয়ার চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে তারা দেশীয় অস্ত্র দেখিয়ে যাত্রীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে চুপ থাকতে বলেন। ওই সময় বাসে যাত্রীর সংখ্যা ছিল অন্য দিনের চেয়েও একটু বেশি। ২ থেকে ৩ জন সাহসী যাত্রী ডাকাতদেরকে বাঁধা দিলে ডাকাতরা এক পর্যায়ে নাজেহাল হয়ে পড়ে।

এসময় বাসের যাত্রীরা চিৎকার শুরু করলে তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। পরে তাদের মধ্যে ডাকাত নেছার উদ্দিনকে আটক করে গণপিটুনি দেওয়া হয়। তবে তার সঙ্গে থাকা আরও ২ ডাকাত বাস থেকে লাফিয়ে পালিয়ে যান। ওই সময় যাত্রীরা ডাকাত নেসার উদ্দিনকে আটক করে গণপিটু দিয়ে চাঁনমারি রেললাইন আর্মি মার্কেটের বাস টার্মিনাল নিয়ে আসেন। পরে ওই ডাকাতের আটকের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ডাকাত নেছারকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।

ঘটনাস্থলে আটক ডাকাত নেছার জানান, তাদের ৫ সদস্যের একটি গ্রুপ রয়েছে। এই গ্রুপের অন্য সদস্যরা হলেন : সেন্টু, আলমগীর, সৈকত ও সমীর। ঘটনার সময় তার সঙ্গে সমীর ও আলমগীর ছিলেন। এরআগে গত ২রা আগস্ট তারা একটি বাস থামিয়ে ১৪ হাজার টাকা ডাকাতি করে নিয়ে গেছেন বলেও জানায় ডাকাত নেছার উদ্দিন।

এসময় বাস, মিনিবাস ও দূরপাল্লা পরিবহন নেতারা জানান, প্রতি নিয়ত এধরনের হয়রানীর স্বীকার হচ্ছি আমরা। ডাকাতরা গাড়ীর চালক ও যাত্রীদের কাছ থেকে সর্বস্ব কেড়ে নিচ্ছে। আমরা এর আগেও র‍্যাব ও পুলিশের নিকট একাধিকবার অভিযোগ করলেও তারা কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এবার আমরা এর থেকে পরিত্রাণ চাই। নতুবা আমরা বাস মালিক ও শ্রমিক নেতা সকলে মিলে কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে পরিবহন ডাকাতদের বিরুদ্ধে রাজপথে নামতে বাধ্য হবো।

এ বিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ রিজাউল হক দিপু বলেন, ঘটনাস্থল থেকে আটক ডাকাত পুলিশ প্রহরায় পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে। এই ঘটনায় মামলা হয়েছে। সেই সঙ্গে আটক ডাকাত নেছার উদ্দিনের সহযোগীতায় বাকিদেরও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

add-content

আরও খবর

পঠিত