নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে ডিবি পুলিশের পরিচয়ে অস্ত্র ঠেকিয়ে এক সোনা ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ৩৮ লাখ টাকা লুট করে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। তবে এ ঘটনায় ভুক্তভোগী সোনা ব্যবসায়ী থানায় মামলা করলেও পুলিশ পুরো ঘটনাটি রহস্যজনকভাবে ধামাচাপা দিয়ে রাখে। যে কারণে গত ২০ ফেব্রুয়ারির ঘটনা ১৩ দিনেও কোনো গণমাধ্যমে প্রকাশ পায়নি।
এদিকে, লুণ্ঠিত টাকা উদ্ধারে পুলিশের ব্যর্থতা এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকে এখন পর্যন্ত গ্রেফতার করতে না পারায় পুলিশের ভূমিকা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রশ্ন তুলেছেন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী পরিতোষ চন্দ্র ধর (৫০)।
পরিতোষ জানান, তিনি তার শ্যালক জীবন ধর (২৮) ও ভায়রা শিলীপ কুমার ধর (৫৩) পার্টনারশিপে চট্টগ্রামের হাটহাজারী দারুস সালাম মার্কেটে রত্নশোভা শিল্পালয় নামে জুয়েলারি ব্যবসা করে আসছেন। ২০ ফেব্রুয়ারি ব্যবসায়িক কাজে তিনি ঢাকায় আসেন এবং ঢাকার তাঁতী বাজারস্থ রিজভী জুয়েলার্সে ব্যবসার ৬০ ভরি সোনা বিক্রির ৩৮ লাখ টাকা আদায় করেন। টাকাগুলোর মধ্যে ৩০ লাখ টাকা কালো রংয়ের একটি কাঁধ ব্যাগে এবং ৮ লাখ টাকা একটি লাল শপিং ব্যাগে নিয়ে চট্টগ্রামের উদ্দেশে যাওয়ার জন্য বেলা ৩টা ৫০ মিনিটে ঢাকার সায়েদাবাদ জনতার মোড়স্থ খাদিজা ভিআইপি সার্ভিসের এসি বাসে উঠেন পরিতোষ। বাস নাম্বার ঢাকা-মেট্টো-ব-১৫-২১০০।
ওই দিন বিকাল ৪টা ৩০ মিনিটে বাসটি নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের কাঁচপুর সেতুর পশ্চিম ঢালে পৌঁছালে অজ্ঞাত ৪ জন ব্যক্তি দুইটি মোটরসাইকেলে চড়ে বাসটির গতিরোধ করে নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয় দেয়। এ সময় বাসটি থামানো জন্য তারা সিগন্যাল দিলে ড্রাইভার বাসটি থামিয়ে দেয়।
পরিতোষ অভিযোগ করে বলেন, এ সময় ৩০ থেকে ৪০ বছর বয়সী ৩ জন লোক বাসে উঠে এবং আমার কাছে এসে বলে ব্যাগটি কোথায়? তখন আমি তাদের পরিচয় জানতে চাইলে তাদের দুইজনের হাতে ২টি পিস্তল ও আইডি কার্ড বের করে নিজেদের ডিবির লোক বলে পরিচয় দেয়। তাদের একজনের পরনে কালো রংয়ের ফুলহাতা শার্ট, অপরজনের পরনে এ্যাশ কালার টি-শার্ট। আরেকজন ড্রাইভারের কাছাকাছি ছিল। ডিবি পরিচয়ের ওই ব্যক্তিরা আমার দুটি টাকার ব্যাগ তাদের হাতে নিয়ে বলে তুই হুন্ডি ব্যবসা করিস, তোকে আমাদের সাথে থানায় যেতে হবে। এই কথা বলে তারা আমাকে বাস থেকে নামিয়ে বাসের ড্রাইভারকে বাস নিয়ে চলে যেতে বলে। বাসটি চলে যাওয়ার পর তারা আমার টাকার ব্যাগ দুটি নিয়ে আমাকে ব্রিজের ঢালে ফেলে দিয়ে দ্রুত মোটরসাইকেলে চড়ে চিটাগাং রোডের দিকে চলে যায়। পরে আমি মোবাইল ফোনে বিষয়টি তাৎক্ষণিক আমার ব্যবসায়িক পার্টনারসহ আত্মীয়-স্বজনদের জানালে তাদের পরামর্শে ২৩ ফেব্রুয়ারি সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় গিয়ে মামলা দায়ের করি।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) শরিফ আহমেদ জানান, মামলা গ্রহণ করে আসামীদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে।
এ বিষয়ে ৫ই মার্চ শুক্রবার রাতে জানতে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মশিউর রহমান বলেন, এ ঘটনায় মামলার কোনো অগ্রগতি হয়নি। তবে আমরা বিভিন্ন স্থানের সিসি টিভির ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করছি। ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করতে প্রযুক্তি ব্যবহারসহ নানাভাবে চেষ্টা করছি।