নারায়ণগঞ্জে গ্যাসের আগুনে দগ্ধদের মধ্যে আরো ১ জনের মৃত্যু

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় ভবনে গ্যাস সিলিণ্ডার বিস্ফোরণে দগ্ধ একই পরিবারের ৬ সদস্যের মধ্যে গৃহকর্তা মিশালের পর মারা গেল ১২ বছরের মাহফুজ। এ নিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা দাড়ালো ২ জন। ১১ই মার্চ বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। এ ছাড়া হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন আরো বাকি ৪ জন।

এর আগে ৯ই মার্চ মঙ্গলবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অবস্থায় গৃহকর্তা মিশাল মারা যান।

সেদিন ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক পার্থ শংকর পাল জানান, দগ্ধ ৬ জনের মধ্যে মিশালের অবস্থাই সবচেয়ে গুরুত্বর ছিল। তার শরীরের ৯০ শতাংশ পুড়ে যায়। শ্বাসনালীও পুড়ে গেছে তাঁর।

ওইদিন ঢাকা মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া জানান, ২৬ বছর বয়সী পোশাক শ্রমিক মিশালের শরীরের ৯০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল। তার স্ত্রী মিতা বেগম (২৩), তাদের মেয়ে আফসানা আক্তার (৪), দেড় বছরের ছেলে মিনহাজ এবং শ্যালক সাব্বির হোসেন (১৫) হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

চিকিৎসকের বরাত দিয়ে পরিদর্শক বাচ্চু বলেন, তাদের অবস্থাও আশঙ্কাজনক। ১০ থেকে ৮০ শতাংশ দগ্ধ তাদের শরীর।

সুলতান নামে একজন আত্মীয় জানান, মিশালের মৃতদেহ নারায়ণগঞ্জের মাসদাইরে নেওয়া হয়েছে, সেখানেই তাকে দাফন করা হবে।

প্রসঙ্গত, এর আগে ৮ই মার্চ সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় মাসদাইর পতেঙ্গার মোড় এলাকায় নাসরিন আক্তারের মালিকানাধিন ছয় তলা ভবনের হাজী ভিলার ষষ্ঠ তলায় ভাড়াটিয়ার একটি ফ্ল্যাটে এ অগ্নিকান্ড ঘটে। এতে দগ্ধদের প্রথমে শহরের নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হলে মেডিক্যাল অফিসার গেলাম মোস্তফা তাদের শেখ হাসিনা বার্ণ ইনস্টিটিউটে পাঠানোর নির্দেশ দেন। বর্তমানে আশংকাজনক অবস্থায় দগ্ধ সকলকে বার্ণ ইউনিটে চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে।

আগুনের দগ্ধরা হলো : গার্মেন্টস শ্রমিক মিশাল, তার স্ত্রী মিতা, তাদের দেড় বছর বয়সের শিশু সন্তান মিনহাজ এবং মিশালের দুই শ্যালক হোসিয়ারি শ্রমিক মাহফুজ ও সজীব। এদিকে আগুনের খবর পেয়ে মন্ডলপাড়া ফায়ার স্টেশনের দুইটি ইউনিট ঘটনাস্থলে যায়। তবে তার আগেই আগুন নিভিয়ে ফেলেন স্থানীয়রা। আগুনে ওই ফ্ল্যাটের অধিকাংশ আসবাবপত্র পুঁড়ে যায়। এ ঘটনায় তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা।

দগ্ধ মিতার মা রাহেলা বেগম বলেন, রাতে কাজ শেষে বাড়ি ফেরেন মিশাল। অন্যরা বাড়িতেই ছিল। কিছুক্ষণ পরই বিকট শব্দে বিস্ফোরণ হয়।

নারায়ণগঞ্জ শহরের মন্ডলপাড়া ফায়ার স্টেশনের স্টেশন অফিসার বেলাল হোসেন জানান, গ্যাসের চূলার লিকেজ থেকে গ্যাস নির্গত হয়ে ওই ফ্ল্যাটের বিভিন্ন রুমে তা জমাট বেঁধে থাকে। রাতে খাওয়ার পর পরিবারের কেউ গ্যাসের চুুুলা অথবা সিগারেট জ্বালানোর উদ্দেশ্যে আগুন জ্বালালে মূহুর্তের মধ্যে ঘরে আগুন ধরে যায় এবং অন্যান্য রুমে ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় পরিবারের ৬ জন দগ্ধ হন। তাদের ডাক চিৎকারে বাড়ির অন্যান্য ফ্ল্যাটের বাসিন্দারা এসে আগুন নেভিয়ে ফেলে।

add-content

আরও খবর

পঠিত