নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( নগর প্রতিনিধি ) : অপরাধীর সাথে আতাঁত, নিরীহ সাধারণকে জিম্মি এবং বিভিন্ন মামলায় রিমান্ডে এনে আসামীকে মারধর না করার শর্তে ঘুষ বনিজ্য, পুলিশী ক্ষমতায় ব্লাকমেলিং করে নারী ধর্ষণ এবং পুলিশী অপকর্মের তথ্য সংগ্রহ এবং সংবাদ পরিবেশনকারী গনমাধ্যম কর্মীদের ওপর নির্যাতনসহ লাগামহীনভাবে চরম বিতর্কের সৃষ্টি করে চলেছে নারায়ণগঞ্জের বেপরোয়া পুলিশ। টাকার লোভে এবং ক্ষমতার দাপটে একের পর এক অনাকাঙ্খিত ঘটনার জন্ম দিয়ে তারা এটাই প্রমান করছে যে, হেন অপকর্ম নেই যা পারেনা নারায়ণগঞ্জের পুলিশ প্রশাসন। পুলিশের ভাবমূর্তি নিয়ে এসব মন্তব্য শোনা যাচ্ছে এখন নারায়ণগঞ্জের সর্বসাধারনের মাঝে। এ নিয়ে বোদ্ধা সমাজের প্রশ্ন, নারায়ণগঞ্জের বেপরোয়া পুলিশকে থামাবে কে ?
জানা গেছে, গত ১লা সেপ্টেম্বর রাতে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানার দুই সোর্সসহ দারোগা আতাউর রহমানের বিরুদ্ধে ওঠেছে নারী ধর্ষণের অভিযোগ। ডাকাতি মামলায় রিমান্ডে থাকা দুই আসামীকে শারিরীক নির্যাতনের ভয় দেখিয়ে আসামীদের দুই স্ত্রীর কাছে প্রথমে নগদ ২৫ হাজার টাকা দাবী করা হয়। তারা মাত্র ৬ হাজার টাকা নিয়ে থানার কাছে এলে সোর্স নজরুলের নিকটস্থ ফ্ল্যাটে নিয়ে বাকি টাকা না দেয়ায় প্রথমে দুই সোর্স নজরুল ও শুভ দুই নারীকে এবং পরে দারোগা আতাউর এসে এক নারীকে ধর্ষণ করে। (সূত্র অনলাইন পোর্টাল বিডি মর্নিং ডট কম)
এদিকে ডাকাতি মামলার আসামী বিধায় এই ঘটনাকে ষড়যন্ত্র তথা সাঁজানো নাটক উল্লেখ করে পুলিশের এ নারী কেলেঙ্কারীকে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা চলছে বলেও অভিযোগ করছেন সিদ্ধিরগঞ্জের সচেতন মহল।
এ ঘটনার আগের দিন তথা গত ৩১ আগস্ট রাত ১০টায় নারায়ণগঞ্জ চাষাড়া খাজা সুপার মার্কেটের সামনে নারায়ণগঞ্জ থেকে প্রকাশিত দৈনিক ভোরের কথা পত্রিকার সম্পাদক মোঃ আরিফুজ্জামান আরিফকে সদর থানার দারোগা বাসার অযথাই লাঞ্ছিত করে। নিজের পরিচয় দিয়ে এর প্রতিবাদ জানালে আরও মারমুখী হয়ে ওঠে দারোগা। এ নিয়ে নারায়ণগঞ্জের সাংবাদিক সমাজ তাৎক্ষনিকভাবে এর প্রতিবাদে বিক্ষোভ এবং সড়ক অবরোধ করে। সে সময় সদর থানার প্রকাশ্যে তার দারোগার পক্ষ থেকে উপস্থিত সাংবাদিক সমাজের কাছে থানার অফিসার ইনচার্জ্জ আসাদুজ্জামান ক্ষমা চাইলেও ক্ষুব্দ সাংবাদিকরা তার ঘটনার হোতা বাসার দারোগাকে সাসপেন্ড করার দাবী জানান। জেলা পুলিশ সুপার মঈনুল হকের নির্দেশে যা এখন রয়েছে তদন্তাধীন।
আর এ ঘটনার পরের রাতেই ওঠে সিদ্ধিরগঞ্জের দারোগা আতাউর কর্তৃক রিমান্ডে আনা দুই আসামীর স্ত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ। এ ব্যাপারে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার দারোগা আতাউরের সাথে তার মুঠো ফোনে বারবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি বরং ইচ্ছে করে কলটি বারবার কেটে দেন।
এছাড়াও গত ১৮ আগস্ট রাত ৯টায় নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীণ পাঠানটুলী আইলপাড়া এলাকার সামসুদ্দিন ভূঁইয়ার ছেলে মাদক ও সন্ত্রাস বিরোধী সমাজকর্মী এবং সাংবাদিক আব্দুল মান্নান ভূঁইয়াকে এলাকার চিহ্নিত স্বরাষ্ট মন্ত্রণালয়ের গোয়েন্দা বিভাগের তালিকাভূক্ত মাদক বিক্রেতা চক্র গুলি ও ছুরিকাঘাত করে হত্যার চেষ্টা করে। এ ঘটনায় মামলা করার পর ১জন আসামীকে পুলিশের সাথে খারাপ আচরণ করার পর গ্রেফতার করলেও বাকি আসামীর ঘুরছে প্রকাশ্যে কিন্তু সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ তাদের ধরছে না। এমনকি মামলার বাদী আহত সাংবাদিক ও স্থানীয় সংগঠন মানব কল্যাণ পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান ভূঁইয়া তার নিজস্ব সোর্স লাগিয়ে গত ১লা সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার দুপুরে উল্লেখিত মামলার দুই আসামী শহীদুল্লাহ্ এবং সাইদুলের অবস্থান অবগত করান। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এস আই ওমর ফারুক বাদীর তথ্যমতে আসামীদেও অবস্থান নির্ণয় কওে তাদের দেখেছেন এবং গেফেতারের পদক্ষেপ নিচ্ছেন বলে বাদীকে আশ্বস্থ করেন কিন্তু পরবর্তীতে সেখানেও জানা যায় তিনি আসামীদের সাথে আতাঁত করে তাদের আত্মগোপন করতে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সহায়তা করেন। এভাবে ঘটনার ১৪ দিন অতিবাহিত হলেও রহস্যজনক কারনে প্রকাশ্যে থাকা আর কোন আসামীকেই তারা গ্রেফতার করেন নি।
এভাবে একের পর এক পুলিশী ক্ষমতার কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে নারায়ণগঞ্জের সাংবাদিকসহ সাধারণ জনতা। আর এসব কারনেই পুলিশের প্রতি দিন দিন আস্থা হারিয়ে ফেলছেন সাধারণ মানুষ। যে কারনে নারায়ণগঞ্জের এই বেপরোয়া পুলিশকে থামাতে জেলা পুলিশ সুপারসহ বাংলাদেশ পুলিশের ঊর্ধতন কর্মকর্তা ও স্থানীয় এমপিদের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করছেন ভুক্তভোগী জন সাধারণ।
ঐ আসামির বাবা ও দুই স্ত্রী জানান, রিমান্ডে নেওয়ার পর রাতেই সিদ্ধিরগঞ্জ থানার পাশে এসআই আতাউর রহমানের সোর্স নজরুল ইসলাম ও শুভ তাঁদের ফোন করে বলে, আসামিকে রিমান্ডে মারধর করা হবে না। এ জন্য স্যারের সঙ্গে দেখা করে ২৫ হাজার টাকা দিতে হবে। রাত সাড়ে ১০টায় দুই নারী থানার অদূরে গেলে নজরুলের ফ্ল্যাটে নিয়ে যাওয়া হয়। দেনদরবারের এক পর্যায়ে ছয় হাজার টাকাও দেন দুই স্ত্রী। কিন্তু বাকি টাকা দিতে ব্যর্থ হলে ভয় দেখিয়ে দুই সোর্স দুই নারীকে ধর্ষণ করে। রাত সাড়ে ১২টার দিকে এসআই আতাউর ঐ বাসায় গিয়ে এক নারীকে ধর্ষণ করে।