নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( নগর প্রতিনিধি ) : নারায়ণগঞ্জে চাঞ্চল্যকর ৭ হত্যার দুই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন সম্পন্ন হয়েছে। আসামীদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণ করতে সক্ষম হওয়ায় সর্বোচ্চ শাস্তিও দাবী করেছেন রাষ্ট্রপক্ষ। ২১ নভেম্বর সোমবার সকাল সাড়ে ৯ টা থেকে দুপুর ১ টা পর্যন্ত জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ এনায়েত হোসেনের আদালতে প্রধান আসামী নূর হোসেন, র্যাবের চাকুরচ্যুত সিইও তারেক সাঈদ মুহাম্মদ, কোম্পানী কমান্ডার এমএম রানা ও আরিফসহ গ্রেতারকৃত ২৩ আসামীর উপস্থিতিতে রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন রাষ্ট্রপক্ষের কৌসুলী এড. ওয়াজেদ আলী খোকন। এরপর ১৫ আসামীর পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন আসামীপক্ষের আইনজীবীরা। আদালত ২২ নভেম্বর মঙ্গলবার আসামীপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন সম্পন্নের লক্ষে পরবর্তী দিন ধার্য করেন।
এ বিষয়ে জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এড. ওয়াজেদ আলী খোকন জানান, সোমবার সাত খুনের দুটি মামলায় অভিযুক্ত ৩৫ আসামীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন সম্পন্ন হয়েছে। আসামীদের বিরুদ্ধে অপহরন, খুন অত:পর লাশ গুমের জড়িত থাকার বিষয়টি আদালতে সন্দেহাতীত ভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি। তাই আদালতে আসামীর সর্বোচ্চ শাস্তি দাবী করেছি।
তিনি আরও জানান, এদিন ১৫ জন আসামীর পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেছেন তাদের আইনজীবীরা। আদালত পরবর্তী দিন ধার্য করেছেন মঙ্গলবার।
জানা গেছে, সাত খুনের ঘটনায় দুটি মামলা হয়। একটি মামলার বাদী নিহত আইনজীবী চন্দন সরকারের মেয়ে জামাতা বিজয় কুমার পাল ও অন্য বাদী নিহত নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি। দুটি মামলাতেই অভিন্ন সাক্ষী হলো ১২৭ জন। তবে সাত খুনের দুটি মামলায় অভিন্ন ১২৭ সাক্ষীর মধ্যে ১০৭ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ সিটি করর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম, তার বন্ধু মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, লিটন ও গাড়ি চালক জাহাঙ্গীর আলম এবং আইনজীবী চন্দন কুমার সরকার ও তার গাড়ি চালক ইব্রাহীম অপহৃত হন। পরে ৩০ এপ্রিল শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ছয়জনের ও ১ মে একজনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তদন্ত শেষে প্রায় এক বছর পর গত ৮ এপ্রিল নূর হোসেন, র্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ ৩৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। গত ৮ ফেব্রুারী সাত খুনের দুটি মামলায় নূর হোসেন ও র্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ ৩৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। এ মামলায় নূর হোসেন ও র্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ মোট ২৩ জন কারাগারে আটক রয়েছেন। আর চার্জশীটভুক্ত আসামীদের মধ্যে এখনো ১২ জন পলাতক রয়েছেন।