নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( ডেস্ক রিপোর্ট ) : পদ্মা সেতুর ৩৬ ও ৩৭ নং পিলারের ওপর ষষ্ঠ স্প্যানটি বসানো হয়েছে। ফলে সেতুর মূল কাঠামোর ৯০০ মিটার দৃশ্যমান হলো। ২৩ জানুয়ারি বুধবার সকাল সাড়ে ৯টায় জাজিরা পয়েন্টে ওই স্প্যানটি বসানো হয়। সেতু বিভাগের প্রকৌশলী মো. হুমায়ুন কবীর এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, পদ্মা সেতুর ৩৬ ও ৩৭নং পিলারের ওপর ষষ্ঠ স্প্যানটি বসানো হয়েছে। স্প্যানটি বসানোর মধ্য দিয়ে পদ্মা সেতুর কাজ আরও একধাপ এগিয়ে গেছে। দৃশ্যমান হয়েছে সেতুর ৯০০ মিটার। সংযুক্ত হয় সেতুর দক্ষিণাংশ জাজিরার পাড়ের সঙ্গে।
এর আগে মঙ্গলবার সকালে শক্তিশালী একটি ভাসমান ক্রেন মুন্সীগঞ্জের কুমারভোগের বিশেষায়িত জেটি থেকে স্প্যানটি নিয়ে জাজিরার উদ্দেশে রওনা দেয়।
সেতু কর্তৃপক্ষের দাবি, ইতিমধ্যে সেতুর প্রায় ৭২ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। চলতি বছরের মধ্যে স্প্যান বসানোর কাজ শেষ করে সেতু দৃশ্যমান করা হবে।
উল্লেখ্য, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৮ সালে পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেন। ২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্মা সেতুর নকশা প্রণয়নে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান চূড়ান্ত করে। এর আগে পদ্মা সেতু বাস্তবায়নে ২০০৭ সালে একনেকে ১০ হাজার ১৬১ কোটি ৭৫ লাখ টাকার প্রকল্প অনুমোদিত হয়। ২০১৮ সালের ৫ জানুয়ারি দ্বিতীয় দফা ব্যয় বাড়িয়ে সংশোধিত ব্যয় নির্ধারণ করা হয় ২৮ হাজার ৭৯৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা।
২০১২ সালের জুনে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে পদ্মা সেতু প্রকল্পের ১২০ কোটি ডলারের ঋণচুক্তি বাতিল করে বিশ্বব্যাংক। যদিও দুদকের তদন্তে বাংলাদেশে বিরুদ্ধে এ অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হয়।
এরপর ২০১৫ সালের ১২ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন। ‘পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প’র মূল সেতুর দৈর্ঘ্য ৬.১৫ কিলোমিটার। সংযোগ সেতু (ভায়াডাক্ট) ৩.১৮ কিলোমিটর। সেতুর প্রস্থ হবে ৭২ ফুট, এতে থাকবে চার লেনের সড়ক। সংযোগ সড়ক দুই প্রান্তে (জাজিরা ও মাওয়া) ১৪ কিলোমিটার।
পদ্মা সেতুর মোট পিলারের সংখ্যা ৪২টি। প্রতি পিলারের জন্য পাইলিং হবে ৬টি। মোট পাইলিংয়ের সংখ্যা ২৬৪টি। দ্বিতলবিশিষ্ট এই সেতুটি কংক্রিট আর স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে। এর ডিজাইন করেছে নিউজল্যান্ডভিত্তিক কোম্পানি এইকম। ২০১৪ সালের ১৮ জুনে প্রকল্পে চুক্তিবদ্ধ কোম্পানির নাম চায়না রেলওয়ে গ্রুপ লিমিটেড। নদী শাসনের কাজ করছে চায়নিজ সিনোহাইড্রো করপোরেশন লিমিটেড। সংযোগ সড়কসহ বাকি কাজ করছে দেশীয় বিভিন্ন কোম্পানি। পুরো প্রকল্পে প্রায় ৪ হাজার জনবল কাজ করছে। এর মধ্যে দেশীয় ৩ হাজার ও চীনের ৯০০।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর সেতুর ১ম স্প্যান, ২০১৮ সালের ২৮ জানুয়ারি দ্বিতীয় স্প্যান, ১০ মার্চ তৃতীয় স্প্যান, ১৩ এপ্রিল ৪র্থ স্প্যান এবং ২৯ জুন ৫ম স্প্যান বসানো হয়।