নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : নারায়ণগঞ্জ-৩ (সোনারগাঁ) আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা। এবারও জাতীয় পার্টি থেকে প্রার্থী হয়েছেন তিনি। সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে কপাল খুলে গেছে গত দুইবার মহাজোটের প্রার্থী হয়ে নির্বাচিত হওয়া এই এমপি ও তাঁর স্ত্রীর।
১০ বছর পূর্বে চাকুরিজীবী খোকার কাছে নগদ মাত্র ৩ লাখ টাকা থাকলেও বর্তমানে এই সংসদ সদস্যের নামে রয়েছে চারটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন তাঁর স্ত্রী ডালিয়া লিয়াকতও। দশম ও দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা হলফনামা বিশ্লেষণ করে এই তথ্য পাওয়া গেছে। যা এখন বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশের পর আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
বর্তমানে লিয়াকত হোসেন খোকার নগদ ও ব্যবসায় বিনিয়োগ মিলিয়ে প্রায় ৮৫ লাখ টাকার মালিক। পূর্বে তাঁর গৃহিণী স্ত্রী ডালিয়া লিয়াকতের নামে কোন টাকা বা সম্পদ না থাকলেও ১০ বছরে তিনি এখন কোটিপতি ব্যবসায়ী। বছরে সংসদ সদস্যের ভাতাসহ বর্তমানে খোকার আয় ৩৮ লাখ টাকা আর স্ত্রীর আয় সাড়ে ১৩ লাখ। শূন্য থেকে এই ১০ বছরে তাঁর স্ত্রীর নামে রয়েছে প্রায় ১ কোটি ২৫ লাখ টাকার অস্থাবর সম্পদ। আরও আছে উপহার হিসেবে পাওয়া ৮৪ ভরি স্বর্ণ।
১০ বছর আগে লিয়াকত হোসেন খোকার চাকরি ও দোকান ভাড়া থেকে বাৎসরিক আয় ছিল ৫ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। বর্তমানে বাড়ি-অ্যাপার্টমেন্ট-দোকান ভাড়া থেকে বাৎসরিক আয় ৪ লাখ ৯২ হাজার টাকা। গৃহিণী স্ত্রী ডালিয়া লিয়াকতের ১০ বছর আগে স্থাবর ও অস্থাবর কোন সম্পদ না থাকলেও বর্তমানে বছরে তাঁর আয় সাড়ে ১৩ লাখ টাকা।
বর্তমানে ডালিয়া লিয়াকতের নামে অস্থাবর সম্পদ রয়েছে ব্যবসায় নগদ টাকা ৮৫ লাখ ৬৩ হাজার, ব্যাংকে আছে ৮ লাখ ১৩ হাজার টাকা, একটি প্রতিষ্ঠানে ২ লাখ টাকার শেয়ার, নিজের একটি টয়োটা গাড়ি যার দাম দেখিয়েছেন ২৪ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। আছে উপহার হিসেবে পাওয়া ৮৪ ভরি স্বর্ণ ও ৩ লাখ টাকার আসবাবপত্র ও ইলেক্ট্রনিক্স সামগ্রী।
ডালিয়া লিয়াকতের স্থাবর সম্পদের তালিকায় আছে সদর উপজেলার সৈয়দপুর এলাকায় ৮ শতাংশ ও সোনারগাঁও পৌরসভার চিলারবাগ এলাকার ৮ শতাংশ জমি। এছাড়া এই দম্পতির নির্ভরশীলের নামে ১০ বছর আগে কোন টাকা না থাকলেও বর্তমানে একটি ব্যাংকে রয়েছে প্রায় ৪৮ লাখ টাকা।
লিয়াকত হোসেন খোকার ১০ বছর আগে কোন গাড়ি না থাকলেও বর্তমানে তাঁর নিজের নামে ৮৫ লাখ ২৭ হাজার টাকার একটি টয়োটা জিপ গাড়ি দেখানো হয়েছে। ১০ বছর আগে দায় দেনার মধ্যে মার্কেটের দোকান ভাড়া অগ্রিম হিসেবে নেয়া হলফনামায় দেখানো ১৬ লাখ টাকা বর্তমানে ৩১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা দেখানো হয়েছে। এছাড়া তাঁর কিংবা তাঁর স্ত্রীর নামে কোন ব্যাংকে ঋণও নেই।
১০ বছরে সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা ও তাঁর গৃহিণী স্ত্রীর এমন সম্পদ অর্জনকে অবিশ্বাস্য হিসেবে দেখছেন অনেকে। বিশেষ করে তাঁর স্ত্রী ডালিয়া লিয়াকত কোন জাদুবলে ১০ বছরে শূন্য থেকে কোটিপতি হয়েছেন সেই প্রশ্ন তুলছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ সচেতন রাজনৈতিকমহল।