নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( স্টাফ রিপোর্টার ) : শহরের কালিরবাজার এলাকায় তাবলীগ জামায়াতের মাওলানা সাদপন্থীদের উপর হেফাজতে ইসলাম নেতা আব্দুল আউয়াল পন্থী লোকজনের অতর্কিত হামলার অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার (৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় আমলাপাড়া মারকাজ মসজিদ সংলগ্নে এ ঘটনা ঘটে। এসময় আউয়ালপন্থীদের হামলায় তাবলিগ জামায়াতের মাওলানা সাদপন্থী মসুল্লিরা মসজিদের ভিতরেই অবরুদ্ধ হয়ে থাকে। পরে পুলিশ উভয় পক্ষের মধ্যে অবস্থান নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
সূত্র জানায়, প্রতি মঙ্গলবার তাবলীগ জামায়াতের মশয়ারা (পরার্মশ) ও সুরা ইয়াছিনের পর দোয়া করার দিন তারিখ ধার্য থাকলে এতে বাঁধা দিতে মসজিদের সামনে অবস্থান নেয় আউয়াল পন্থী লোকজন। এসময় তাবলীগ জামায়াত লোকজনেরা মসজিদের দরজা লাগিয়ে দেয়ার চেষ্টা করলে আউয়াল পন্থী লোকজনের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। আমলাপাড়া মসজিদে থাকা কয়েকজন জানায়, এনায়েত নগরের সানাউল্লাহ ও ভূইগড়ের মাওলানা উমর ফারুকের নেতৃত্বে মাহাবুব, মোক্তার হোসেন, ইব্রাহীম, খোরশেদ সহ অর্ধশত লোক আমাদের অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে। আমাদের আমলকে বন্ধ করতে বলে। এছাড়াও এই মসজিদে আমাদেরকে কোন আমল করতে দিবে না বলে জুতো নিক্ষেপ করে।
এরপর ঘটনাস্থলে সদর থানার ওসি মো. কামরুল ইসলাম উভয়পক্ষকে বিভক্ত করে সরিয়ে দেয়। পরে মসজিদে প্রবেশ করে তাবলীগ জামায়াতের লোকদের সাথে কথা বলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন আনে। তাছাড়াও মসজিদ কমিটিকে পরিবেশ শান্ত রাখার দায়িত্ব নিতে বলেন। এরপর শুধুমাত্র আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য আগামী শুক্রবারের মধ্যে উভয়পক্ষকে কোনধরনের কর্মসূচী না করার জন্য অনুরোধ করে।
উল্লেখ্য, দীর্ঘ ৫০ বছর ধরেই নারায়ণগঞ্জে তাবলীগ জামায়াত পরিচালনা ও বিভিন্ন আমল হয়ে থাকে আমলাপাড়া মারকাজ মসজিদটিতে। এরআগের বৃহস্পতিবারও তাদের সকলের (মঙ্গলবারের মশয়ারা) পরার্মশ অনুযায়ী উল্লেখিত মসজিদের ইমাম মাওলানা খোরশেদ সাহেব বয়ান করছিলেন। ওই দিন এশা নামাজের আগ মুহুর্ত অনৈতিকভাবে আউয়াল পন্থী লোকজন চিৎকার করে বলতে থাকে মাওলানা খোরশেদ সাহেবের বয়ান বন্ধ করে আউয়াল সাহেবকে বয়ান করতে দেয়ার জন্য। এমন দাবীতে স্থানীয় মুসল্লীরা নামাজের প্রস্তুতী নিতে বললে, আউয়াল পন্থীরা উত্তেজিত হয়ে যায়। একপর্যায়ে দুই পন্থীর মধ্যে বাগবিতন্ডা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এসময় প্রশাসনিক দয়িত্বে থাকা ডিএসবি’র মো. শরিফকেও আউয়ালপন্থী লোকজন হামলা’র চেষ্টা করে। পরে এক সমাবেশ করে তার অপসারণের দাবিও জানায় আউয়াল সাহেব।
জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরেই নারায়ণগঞ্জে তাবলীগ জামায়াতকে কেন্দ্র করে সাদপন্থী ও আউয়াল পন্থীদের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছিলো। পরে শুক্রবার এর প্রতিবাদের ও সাদপন্থীদের নিষিদ্ধের দাবিতে আউয়াল অনুসারিরা শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে। এদিকে এ ঘটনায় উভয় পক্ষের মধ্যেই টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছিলো। এমন পরিস্থিতিতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে এরআগেও উভয় পক্ষকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছিলো সোমবার। কিন্তু প্রশাসনের সতর্কবার্তার পরও মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে।