নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( বন্দর প্রতিনিধি ) : ডিবি পুলিশের দারোগা পরিচয়দনকারীর কবল থেকে রক্ষা পেতে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপারের নিকট লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন হাজী লোকমান হোসেন নামে বন্দরের এক নিরীহ ব্যাক্তি। সম্প্রতি সুবিচার প্রার্থণা চেয়ে ঐঅভিযোগটি দাখিল করা হয়।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, বন্দর উপজেলাধীন তিনগগাঁও এলাকার মৃত ইজ্জত আলী প্রধাণের ছেলে হাজী লোকমান হোসেনকে গত ৬ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৬টা ৪০মিনিটে তার ব্যবহৃত (০১৯১৬৪২৭২০১ নম্বরের) মোবাইল ফোনে অজ্ঞাত ব্যাক্তি (০১৯১২২১৬৫৮৩ নম্বরের) মোবাইল ফোন থেকে কল দিয়ে তাকে ভালো হয়ে চলতে নির্দেশ করে অন্যথায় বড় রকমের বিপদ হবে বলে হুমকি প্রদান করে। হাজী লোকমান তার পরিচয় জানতে চাইলে সে নিজেকে নারায়ণগঞ্জ ডিবি পুলিশের দারোগা পরিচয় দেয়। লোকমান তার বিস্তারিত জানতে চাইলে সে মোবাইল ফোনটি বন্ধ করে দেয়। এর দুই দিন পর ৮ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ১১টায় (০১৭১৩৯২৮৭২২ নম্বরের) মোবাইল ফোন থেকে পূণরায় কল দিয়ে ২টার মধ্যে ঢাকা ডিবি অফিসে দেখা করতে বলে।
এ সময় হাজী লোকমান শারীরিক অসুস্থতার কথা বললে তাকে এ্যাম্বুলেন্স দিয়ে হলেও ডিবি অফিসে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেয় আর নয়তো তার বড় রকমের বিপদ হবে বলে দ্বিতীয় দফা হুমকি দেয়। উপায়ন্তর না পেয়ে ভয়ে হাজী লোকমান তার স্ত্রী উম্মে হানি বেগমকে নিয়ে ঐ দিন দ্রুত ঢাকা পুলিশ হেড কোয়ার্টারের সামনে গেলে স্বাামী-স্ত্রীকে ঐ প্রাইভেটকারে তুলে একটি নির্জণস্থানে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে তারে কাছে ৩ লাখ টাকা দাবি করা হয়। হাজী লোকমান টাকা কেন দিবে জানতে চাইলে তাকে টাকা না দিলে তাকে জেএমবি মামলায় গ্রেফতার করা হবে বলে ভয়ভীতি প্রদর্শণ করে। দারোগা পরিচয়দানকারীর হুমকিতে স্বামী-স্ত্রী কান্নকাটি করলে তাদেরকে ধমক দিয়ে বলেন, আগামী শুক্রবারের মধ্যে ৩ লাখ টাকা দেয়া না হলে পরিনাম অত্যন্ত ভয়াবহ হবে। হাজী লোকমান তার নাম জানতে চাইলে সে এড়িয়ে যায়। বিষয়টি মোবাইল ফোনে বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যাক্তিবর্গকে অবহিত করেন।
এরপর কথিত ঐ দারোগা শুক্রবার বেলা ২টা ১০মিনিটে তার ব্যবহৃত (০১৭১৩৯২৮৭২২ নম্বরের) মোবাইল ফোন থেকে তাকে একাধিকবার ফোন করলে হাজী লোকমান তা রিসিভ করেননি। এর কিছুক্ষণ পর কথিত দারোগা (নম্বরের) মোবাইল ফোন থেকে ফের কল করেন। মোবাইল ফোনটি হাজী লোকমানের স্ত্রী রিসিভ করলে এ সময় হাজী লোকমানের স্ত্রী উম্মেহানিকে জানায় শনিবারের মধ্যে ৩ লাখ টাকা না দিলে তার স্বামীকে বড় ধরনের মামলা দিয়ে তাকে শেষ করে দেয়া হবে। ডিবি পরিচয়ে অজ্ঞাত ব্যাক্তির হুমকি-ধামকিসহ নানা প্রকার ভয়ভীতি প্রর্দশণ করায় হাজী লোকমানের পরিবারে চরম সংশয় দেখা দেয়। উপায়ন্তর না পেয়ে নিরীহ লোকমান হাজী জীবনের নিরাপত্তা এবং কথিত ডিবি দারোগার বিরুদ্ধে সুবিচার চেয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপারের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন। জেলা পুলিশ সুপার বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য পুলিশ সুপার নারায়ণগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ইনাসপেক্টর মাহমুদুল হাসানকে নির্দেশ দিলে ওসি মাহমুদুল হাসান দারোগা পরিচয়দানকারীর বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করে হাজী লোকমানকে ভয় না পাওয়ার জন্য আশ্বস্থ করেন। শুধুমাত্র জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের তৎপরতার কারণে ভয়ানক অপহরণ থেকে রক্ষা পেয়েছেন লোকমান হোসেন।