টাকা না দেয়ায় আমাকে মাদক মামলায় ফাঁসানো হয়েছিল : কাউন্সিলর দুলাল

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( স্টাফ রিপোর্টার ) : নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ২৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা সাইফুদ্দিন আহমেদ দুলাল বলেছেন, পুলিশের দাবিকৃত ৫ কোটি টাকা চাঁদা না দেয়ায় মাদক মামলায় ফাঁসানো হয়েছিল। আমাকে মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে অনেকেই আখ্যায়িত করেছেন। বিগত দিনে আমাকে পুলিশ ধরে নিয়েছিল সেখানে সিসি ফুটেজ থাকলে আমি নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে পারতাম। মিথ্যা মামলার হিড়িক পড়েছে নারায়ণগঞ্জে। ওটাও একটা সাজানো মামলা ছিল। পুলিশ বিশাল অঙ্কের একটি টাকা দাবি করেছিল। টাকা না দেয়ায় তারা আমাকে মাদকের সাথে জড়িত করেছিল। বুধবার (২০ নভেম্বর) বিকেলে বন্দরের চিতাশাল এলাকায় কাউন্সিলরের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

কাউন্সিলর দুলাল বলেন, আপনারা পত্রিকায় দেখছেন নারায়ণগঞ্জের পুলিশের যে উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ছিলেন তার বিরুদ্ধে যে সত্য ঘটনাগুলো আসছে সেরকমই একটার শিকার আমি হয়েছিলাম। আমার কাছে ৫ কোটি টাকা চেয়েছিল। পুলিশের যে কর্মকর্তারা আমার কাছে চেয়েছিল তারা বলেছে, উপরের নির্দেশেই টাকা চাচ্ছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি আমার উকিলের সাথে বলেছি। আমি শীঘ্রই এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থায় যাবো।

এদিকে আওয়ামী লীগের সদস্য ফরম না পাওয়ার বিষয়ে মহানগর অওয়ামী লীগের সভাপতির বিরুদ্ধে দেয়া বক্তব্যের প্রতিবাদে মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) শহরের দুই নম্বর রেলগেইট এলাকায় জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। এই সভায় মহানগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি শেখ হায়দার আলী পুতুল, যুগ্ম সম্পাদক জিএম আরমান, আহসান হাবীবসহ মহানগর আওয়ামী লীগ ২৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। ওই সভায় দুলাল প্রধানের বহিষ্কার ও সাংগঠনিক ব্যবস্থার দাবি তোলা হয়।

এই সভা প্রসঙ্গে সাংবাদিক সম্মেলনে দুলাল প্রধান বলেন, গত পরশুদিন পত্রিকায় আনোয়ার ভাইকে আমার যে বক্তব্য ছাপা হয়েছে সেই বক্তব্য আমার না। আমাকে জনৈক সাংবাদিক ফোনে জিজ্ঞেস করেছিল, আপনি সদস্য ফরম পান নাই, কেন? আমি তাকে বলেছি, আমি হুমায়ন ভাইয়ের অফিসে জামান ভাইকে সাথে নিয়ে প্রশ্ন করেছিলাম, আমাদের কেন ফরম দিবেন না। তিনি বলেন, আনোয়ার সাহেব না করছে। এতটুকুই আমি বলেছিলাম।

তিনি আরও বলেন, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার ভাই প্রবীণ রাজনীতিবিদ, আমার নেতা শামীম ওসমানের রাজনৈতিক গুরু। তাকে নিয়ে কটুক্তি করার কোন প্রশ্নই আসে না। আসলে আনোয়ার ভাইকে নিয়ে যেসব কথাগুলো বলা হইছে সেগুলো বানোয়াট। আমি এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই।

দুলাল বলেন, আমি অনুপ্রবেশকারী না। ১৯৯৩ সাল থেকে তোলারাম কলেজে বাদল-হেলাল পরিষদের ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যুক্ত ছিলাম। পরে আমি বিদেশে যাই। বিদেশ থেকে ফিরে আমি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত হয়েছি। আনোয়ার ভাই আমাকে ২৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের বিলুপ্ত কমিটির সাধারণ সম্পাদক বানিয়েছিলেন। এখন আমি মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক। আসলে যাদের সদস্য ফরম বিতরণের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে শামসুজ্জামান সাহেব তাদের প্রধান। উনি বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে এসব বিতরণ করছে। এদের মধ্যে অনেক অনুপ্রবেশকারী রয়েছে। চাইলে আমি এর প্রমাণও দিতে পারবো।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, স্থানীয় পঞ্চায়েত কমিটির নেতা আনসার আলী, হাজী মাইনুদ্দীন, বীর মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম, দীনেশ চন্দ্র নাসির সরদার প্রমুখ।

উল্লেখ্য, গত ১ আগস্ট বন্দরের নবীগঞ্জ এলাকা থেকে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের হাতে ফেন্সিডিলসহ গ্রেফতার হন কাউন্সিলর সাইফুদ্দিন আহমেদ দুলাল প্রধান। এ ঘটনায় কারাবাস করতে হয় তাকে। পরে জামিনে বেরিয়ে আসেন তিনি। বর্তমানে কিছু গণমাধ্যমে তাকে জড়িয়ে নানা সংবাদ প্রকাশের কারনে এ সংবাদ সম্মেলন করেন দুলাল প্রধান।

add-content

আরও খবর

পঠিত