নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : স্বামী মারা গেছে বাংলাদেশ স্বাধীনের ৭ দিন পর। অনাহারে অর্ধাহারে এতিম ছেলে মেয়েদের মানুষ করতে মানুষের বাড়ী বাড়ী কাজ করেছি কিন্তু ভিক্ষা করিনী কোন দিন। আজ আমার সন্তানেরা যার যার মত সংসারী হয়ে গেছে কিন্তু আমি অসহায়। আসমানে মেঘ করলে আমার ডর লাগে, বৃষ্টি শুরু হলে নিজের ছাবড়া ঘর ছেড়ে মানুষের ঘরে দৌড়ে গিয়ে আশ্রয় নিতে হয়। এভাবেই করুন আকুতিতে কথা গুলো বলছিলেন রুপগঞ্জ থানার বিরাব গ্রামের আতসী বেগম (৮২), স্বামী মরহুম ইউসছ (আইডি কার্ডে) ওরফে ইয়ানুছ।
প্রতিবেশীদের কাছে খোজ নিয়ে জানা যায়, স্বামী মারা গেছে ১৯৭১ সালের স্বাধীনতার ঠিক সাত দিন পর ৩ ছেলে ১ মেয়ে নিয়ে জীবন যুদ্ধ করে কোন মত সময় পার করছিলেন আতসি। তখন তারা নাবালেগ, কেউ কর্মক্ষম ছিলনা। এখন ছেলেরা সব কর্মক্ষম তারা তাদের নিজেদের সংসার নিয়ে ব্যস্ত, একমাত্র মেয়েও বিয়ে হয়েছে দুরে। তাই অর্ধাহারে অনাহারে দিন কাটছে আতসি বেগমের। স্বামীর রেখে যাওয়া ভিটেতে কোন মতে চারখান টিন দিয়ে ছাবড়া করে আতসির বসবাস। শরীর এখন আর আগের মত নেই, প্রায়ই অসুস্থ হয়ে পড়ে। ঔষধ এনে দেয়ারও লোক নেই। এক সময় গ্রামেরই এক জুট মিলে পাটায় মরিচ, হলুদ পিশে জীবিকা নির্বাহ করতো আতসি। এখন শারিরীক অক্ষমতা তাকে গ্রাস করছে, তবুও থেমে নেই। কারো কাছে হাত পাতে না চক্ষু লজ্জায়।
বর্তমান সরকারকে আতসি অসংখ্য ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, বঙ্গবন্ধুর কন্য আমাগো শেখ হাসিনার বদৌলতে আমি এখন বয়স্ক ভাতা পাই। তা দিয়েই আমার সংসার চলে, এখনও সুযোগ পেলে শরীর ভাল থাকলে অন্যের কাজ করে দু-মুঠো খাবার জোগার করেন আতসি। বিরাব গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসবাস করেন আতসি। বিলের মাঝখানে তার ছোট্র ৪ টিনের কুড়ে ঘর। বর্ষা মৌসুম এলে সবচেয়ে সমস্যায় পড়েন আতসি এমনটাই বলেছেন তার প্রতিবেশীরা। বর্ষা মৌসুমে প্রায় সব সময়ই বৃষ্টি হয় তাই তার চিলে কোঠায় থাকতে পারেনা আতসী বেগম, একটু বৃষ্টি হলেই ঘরে পানি ঢুকে যায়। কোন মতে চার টিনের নিচে পলিথিন দিয়ে জীবন যাপন করে তিনি।
প্রতিবেদন করতে গেলে তিনি বলেন, গ্রামের মেম্বার , চেয়ারম্যান এমন কি মাসনকো গ্রুপের চেয়ারম্যান এর কাছেও গেছি আমারে একখান ঘর দেয়ার জন্য পাইনি, গ্রামে যারা স্বচ্ছল তারা অনেকে পাইছে। মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর কাছে একটি ঘরের জন্য আকুতি জানান, মরার আগে যেন বৃষ্টি থেকে বাচঁতে একখান বৃষ্টি ছাড়া ঘরে মরতে পারি এমনই আকুতি আতসীর।