জাপা একজন কর্মীও দল ছাড়েনি বরং অন্যদল থেকে জাপায় এসেছে : খোকা

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : গত ৪ বছরে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান তাঁর নির্বাচনী এলাকায় ব্যক্তিগত অর্থায়ন পাশাপাশি সরকারীভাবে ব্যাপক উন্নয়ন কাজ সম্পন্ন করেছেন। এছাড়াও বড় বড় বেশ কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। এমপি সেলিম ওসমান কর্তৃক এসব উন্নয়ন কর্মকান্ডের কথা সাধারণ মানুষের কাছে পৌছাতে না পারার ব্যর্থতা নিজের এবং দলীয় নেতাদের বলে দায় স্বীকার করেছেন জাতীয় পার্টির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ও নারায়ণগঞ্জ-৩(সোনারগাঁ) আসনের সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা।

রোববার ১০ জুন বিকেল ৩টায় নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের শীতলক্ষ্যা কমিউনিটি সেন্টারে জেলা ও মহানগর জাতীয় পার্টির উদ্যোগে, আয়োজিত এমপি সেলিম ওসমানের উন্নয়ন কর্মকান্ড নিয়ে মতবিনিময় ও দোয়া অনুষ্ঠানের পূর্বে এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা এসব কথা বলেন। বক্তব্যের শুরুতে তিনি তাঁর রাজনৈতিক গুরু প্রয়াত সাংসদ নাসিম ওসমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে জাতীয় পার্টির সকল নেতাকর্মীকে একটি পরিবারের সদস্য বলে দাবী করেন।
এর আগে মহানগর জাতীয় পার্টির সদস্য সচিব আকরাম আলী শাহীন তাঁর বক্তব্যে গত ৪ বছরে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসন এলাকায় এমপি সেলিম ওসমানের ব্যক্তিগত অর্থায়ন এবং তাঁর মধ্যে সরকারী ভাবে যেসব উন্নয়ন কাজ সম্পন্ন হয়েছে সেগুলোর সংক্ষিপ্ত ফিরিস্তি তুলে ধরেন।

সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা তাঁর বক্তব্যের শুরুতে নিজেদের ব্যর্থতার কথা স্বীকার করে বলেন, নারায়ণগঞ্জে আমরা নাসিম ওসমানের হাত ধরে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা একটি পরিবার। সেই হিসেবে আমরা সবাই এই পরিবারের আরেক সদস্য এমপি সেলিম ওসমানেরও কর্মী। আজকে কেন আমাদের পরিবারের সদস্যদের মাঝে উনার উন্নয়ন কর্মকান্ডের কথা জানাতে হবে। এগুলো তো আমাদের নিজেদের থেকেই জানার এবং সাধারণ মানুষের কাছে পৌছে দেওয়ার কথা। আজকে যারা বিভিন্ন ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড এলাকা থেকে এখানে উপস্থিত হয়েছেন সেই সকল এলাকায় যখন উন্নয়ন কাজ গুলো হয় সেই সময়েই সকল মানুষের এ বিষয় গুলো জানার কথা আমাদের নেতা কোথায় কি করছে। আজকে কেন আমরা জানি না। কারন আমরা সংগঠনটা ভাল ভাবে করছি না। এটা আমরা যারা দলে বিভিন্ন পদপদবী নিয়ে বসে আছি এটা আমাদের সবার ব্যর্থতা। আমাদের নেতার কোন ব্যর্থতা নেই। উনি উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছেন। আজকে যদি কেউ আমাদের প্রশ্ন করেন তোমাদের এমপি কেমন। উত্তরে আমরা বলবো ভাল। নারায়ণগঞ্জের সকল স্তরে জনগন বলবেন উনি ভাল।

খোকা আরো বলেন, এমপি সেলিম ওসমান নারায়ণগঞ্জে শিক্ষাখাতে উন্নয়ন করেছেন, স্বাস্থ্য সেবার মানোন্নয়ন করেছেন, সাধারণ মানুষের কল্যাণে কাজ করেছেন। উনি আমাদের যে ভাল জিনিস উপহার দিয়েছেন এটাই আমাদের সব থেকে বড় গর্ব। এই গর্ব নিয়েই আমরা জনগনের সাথে কথা বলবো। আমরা জনগনকে বলতে পারবো আমাদের এমপি ভাল। আমাদের নেতা জনগনের কল্যানে কাজ করেছেন। এই কথা গুলো জনগনের কাছে বলার কথা আজকে এই মজলিসে বলার কথা না। সেজন্যই আমি বলি এর পেছনে আমারো ব্যর্থতা আছে। আমিও দলে বিরাট পদ নিয়ে বসে আছি। সেই দিক থেকে এই ব্যর্থতার সকল দায় দায়িত্ব আমার। ব্যর্থতার দায় আমি বহন করে নিলাম তবুও আমাদের মাঝে যেন কোন অনৈক্যের সৃষ্টি না হয়। আগামীতে কিভাবে আমরা পথ চলবো সেই ভাবে আমাদের হাটতে হবে। আমরা মানুষ ভুল হতেই পারে, সেজন্য সবার কাছে আমি ক্ষমা চেয়ে নিলাম। কিন্তু এই মুহুর্ত থেকে আমরা যারা জাতীয় পার্টি পরিবারের সদস্য যারা বিভিন্ন এলাকায় কাজ করে যাচ্ছি আমরা জেলা ও মহানগর জাতীয় পার্টির কাছে অনুরোধ করবো আগামী ১ থেকে ২ মাসের মধ্যে প্রত্যেক ওয়ার্ড ও থানা কমিটি সম্পূর্ন করে আমরা একটি টিম আকারে কাজ করবো। যার মধ্যে জাতীয় পার্র্টি, যুবসংহতি, ছাত্রসমাজ, মহিলা পার্টি সহ প্রত্যেকটি অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মী থাকবে। এভাবে কাজ করতে পারলে আমার মনে হয় এটি কোন অসম্ভবের ব্যাপার না।

জাতীয় পার্টি নিয়ে সমালোচনাকারীদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, নিন্দুকের বলেন জাতীয় পার্টি নাকি শেষ হয়ে গেছে। আমি বলতে চাই জাতীয় পার্টি শেষ হয় নাই। জাতীয় পার্টি আগের জায়গাতেই আছে। জাতীয় পার্টির একটা নেতাকর্মী দল ছেড়ে আওয়ামীলীগ কিংবা বিএনপিতে যোগ দেয়নি। বরং সেলিম ওসমানকে ভালোবেসে, তাঁর কর্মকান্ড ও আদর্শকে ভালোবেসে অনেকে আওয়ামীলীগ, বিএনপি থেকে জাতীয় পার্টিতে এসেছে। এই ভালোবাসাকে আমরা শক্তিতে রূপান্তরিত করে আগামী ২ মাসের মধ্যে প্রতিটি ওয়ার্ড সহ জেলা ও মহানগর কমিটি সম্প্রসারন করবো। পাশাপাশি আমাদের নেতার নেতৃত্ব ও পরামর্শে অতীতের মত ভবিষ্যতেও জনগনের মাঝে থেকে তাদের সেবা করে যাবো।

মহানগর জাতীয় পার্টির সদস্য সচিব আকরাম আলী শাহীন এর সঞ্চালনা ও জেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক আবুল জাহের এর সভাপতিত্বে  মতবিনিময় সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন, জেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম আহবায়ক আফজাল হোসেন, মহানগর জাতীয় পার্টির আহবায়ক সানাউল্লাহ সানু, মহানগর শ্রমিক পার্টির আহবায়ক আবুল খায়ের ভূইয়া, জেলা সেচ্ছাসেবক পার্টির আহবায়ক কুতুবউদ্দিন, জেলা মহিলা পার্টির সভাপতি আঞ্জুমান আরা ভূইয়া, জেলা যুব সংহতির আহবায়ক রাজা হোসেন রাজু সহ জেলা ও মহানগর জাতীয় পার্টি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের প্রায় ১৫শ নেতাকর্মী।

add-content

আরও খবর

পঠিত