নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ (বিশেষ প্রতিনিধি) : মুসলিম উম্মাহর বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব ঈদ। নতুন কাপড় ছাড়া যেন ঈদের আনন্দটাই মাটি। হোক খুব দামি কিংবা স্বল্প দামি। এই খুশিকে ভাগাভাগি করে নিতে সকলের মাঝেই যেন ভিন্ন এক আমেজ। ছোট সোনামনি সহ সকলেরই এ ঈদে প্রধান চাহিদা নতুন পোশাকের উপর। আর তাই ঈদকে সামনে রেখে জমকালো পোশাক ও থান কাপড়ের পসরা সাজিয়েছেন শহরের অন্যতম বৃহত্তর বিপনি বিতান ফ্রেন্ডস মার্কেট দোকানিরা। তবে রমজানের প্রথম শুক্রবার ছুটির দিন পেরিয়ে গেলেও এখনো জমে উঠেনি ঈদের বাজার। ঈদুল ফিতরের তুলনায় বিপনি বিতানগুলোতে এখনো ব্যবসায় অনেক মন্দা চলছে বলে দাবি করলেন ব্যবসায়ীরা।
তারাঁ জানায়, সপ্তাহ জুড়ে বৈরী আবহাওয়ায় তেমন একটা চাপ নেই গ্রাহকদের। এছাড়াও বিভিন্ন এলাকায় এখনো কমেনি জলাবদ্ধতা। যে কারণে মার্কেটের দোকানিরা বেচাঁকেনার সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহন করলেও, গ্রাহক সংকটের দেখা দিয়েছে। যেখানে বেচাঁকেনায় ব্যস্ত সময় পার করার কথা সেখানে অনেকটাই স্বস্তিতে সময় পার হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ঈদের কেনাকাটায় শহরের রেডিমেট মার্কেটে কিছুটা ভিড় হলেও বিপণী বিতানগুলো এখনো সরগরম নেই বললেই চলে। কিছু ক্রেতা পাওয়া গেলেও দেনন্দিনের বিত্তবান পরিবার ছাড়া ঈদের কেনাকাটায় সাধারণ মানুষের উপস্থিতি তুলনামূলকভাবে অনেকাংশেই কম। তবে এখন না হলেও এই সপ্তাহ মাঝামাঝি থেকে বেচাকেনার ধুম পড়বে বলে ব্যবসায়ীরা আশাবাদী।
ক্রেতাদের চাহিদা মিটাতে দোকানগুলিতে নিয়ে আসা হয়েছে রং বেরংয়ের কারুকাজের নানা পোশাকের কাপড়। নারী ক্রেতাদের জন্য রয়েছে নানা ডিজাইনের টু-পিস, থ্রি-পিস, শাড়ি, লেহেঙ্গা সহ ভারতীয় বাহারী নামের পোশাক ও থান কাপড়। এছাড়াও ছেলেদের জন্য রয়েছে পাঞ্জাবী কাপড়ের বিপুল সমাহার, রয়েছে শার্ট, পেন্টের কাপড়ও। জানা গেছে এসব বিপনি বিতানগুলোতে ভারতীয় বিভিন্ন কাপড় নিতেই ক্রেতাদের চাহিদা বেশী রয়েছে।
এ ব্যপারে শহরের অন্যতম বৃহত্তর বিপনি বিতান ফ্রেন্ডস মার্কেট এর একজন ব্যবসায়ী বলেন, আমাদের ব্যবসা একেবারেই মন্দা চলছে। যেটা অন্যান্য ঈদের বাজারে হয় না। কারণ আমাদের কাপড়ের মার্কেটে প্রথম রোজা থেকেই গ্রাহকরা ভিড় জমায়। আর এজন্য রমজানের আগেই সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করে ফেলি। যেন গ্রাহকরা পছন্দ মত কাপড় কিনে নিয়ে দর্জির দোকনে দিয়ে অন্যান্য জিনিস কেনার জন্য অফুরুন্ত সময় পায়। কিন্তু এখন ক্রেতা কম হলেও যদি আবহাওয়া ভালো থাকে আগামী দুই একদিন পর থেকে পুরোপুরি জমজমাট হবে ঈদ বাজার।
এদিকে নাম জানাতে অনিচ্ছুক একজন নারী ক্রেতা বলেন, ঈদ ঘনিয়ে আসলেও ঈদের কেনাকাটায় আমরা তেমন একটা উৎসাহী না। প্রাকৃতিক দৃর্যোগ অতিবৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা সহ দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির ফলে আমাদের মত সাধারণ মানুষের মধ্যে ঈদের আমেজ তেমন নেই। তাছাড়া ঈদকে কেন্দ্র করে রেডিমেট পোশাকের দাম বেশী হওয়ায় ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। শুধুমাত্র ছেলে মেয়ের জন্য পাঞ্জাবী ও কামিস-পাজামার কাপড় নিয়ে নিচ্ছি দর্জি দোকানে বানাতে দিবো।
ফ্রেন্ডস মার্কেটের ব্যবসায়ী আশরাফ হাসান রুবেল বলেন, ঈদের জন্য ১৫ লাখ টাকার মাল কিনে রেখেছি। কিন্তু বেচাঁকেনার মন্দা অবস্থা দেখে অনেকটা দুশ্চিন্তায় আছি।
এছাড়াও শহরের অভিজাত রেডিমেট মার্কেটের পোশাক বিক্রেতা ইমন জানায়, এখন এমনিতেই বেচাঁকেনা তেমন একটা নেই। তবে ঈদুল ফিতরের চেয়ে অন্যান্য দিনের মত কম দামেই পোশাক বিক্রি করছি। তবে আমাদের মূল বেচাঁকেনা আগামী সপ্তাহ থেকে চালু হবে।