নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( ডেস্ক রিপোর্ট ) : জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট -আইএস বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গে হামলা চালানোর পরিকল্পনা করছে বলে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। আইএসপন্থী একটি টেলিগ্রাম চ্যানেলে প্রকাশিত বাংলায় লেখা একটি পোস্টারের সূত্রে এই হামলা পরিকল্পনা সম্পর্কে ধারণা পাওয়ার কথা জানিয়েছে তারা। পোস্টারে বাংলায় লেখা হয়েছে শিগগিরই আসছি ইনশাল্লাহ।
শ্রীলঙ্কায় ভয়াবহ সিরিজ বোমা হামলার কয়েকদিনের মাথায় এই কথিত হুমকির খবর সামনে এলো। ভারতীয় গোয়েন্দারা ওই পোস্টারের বিষয়টি খতিয়ে দেখছে বলে জানিয়েছে টাইমস অব ইন্ডিয়া।
পোস্টারে শিগগিরই আসছি ইনশাল্লাহ লেখার পাশাপাশি আল-মুরসালাত নামে একটি গ্রুপের লোগো সংযুক্ত রয়েছে। সেখান থেকেই ধারণা করা হচ্ছে এটি পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশে হামলার ইঙ্গিত। প্রতিবেদনে ওই পোস্টারের কোনো ছবি যুক্ত করা হয়নি।
বিশ্লেষক ও গোয়েন্দা সূত্রে টাইমস অব ইন্ডিয়া দাবি করছে, আইএসের কেন্দ্রীয় অনুমোদনপ্রাপ্ত স্থানীয় জঙ্গি সংগঠন জামাআতুল মুজাহিদীন-নব্য জেএমবির মাধ্যমে বাংলাদেশে অবস্থান জোরালো করেছে জঙ্গিগোষ্ঠীটি। জেএমবি কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ এবং প্রতিবেশি কয়েকটি রাজ্যে সদস্য নিয়োগ ও আস্তানা তৈরি করেছে।
শ্রীলঙ্কায় ভায়াবহ সিরিজ বোমা হামলার পর এই পোস্টার প্রকাশকে গুরুত্বের সঙ্গে নেয়া হয়েছে বলে দাবি ভারতীয় গোয়েন্দাদের।
বাংলায় লেখা ওই পোস্টারে আল-মুরসালাত নামে আইএসের একটি শাখা সংগঠনের লোগো আছে। শ্রীলঙ্কায় তওহিদ জামাত নামে একটি স্থানীয় সংগঠনের মাধ্যমে ভয়াবহ হামলার পর গোয়েন্দা সংস্থাগুলো পোস্টারটিকে যথেষ্ট গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে। তবে টাইমস অব ইন্ডিয়া আইএসের বাংলায় লেখা পোস্টারটি তাদের প্রতিবেদনে প্রকাশ করেনি। তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে আইএসের মজবুত ভিত্তি রয়েছে। দেশটিতে জামাতুল মুজাহিদিন (নব্য-জেএমবি) নামে একটি সংগঠনের সঙ্গে আইএসের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। নব্য-জেএমবিকে তাদের দলে সদস্য নিয়োগের জন্য কলকাতা ও পশ্চিমবঙ্গে মাঝে মাঝেই তৎপর হতে দেখা যায়।
উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও গত শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে সতর্ক করে দিয়ে বলেন, সন্ত্রাসীরা হামলার পরিকল্পনা করছে।
জঙ্গিবাদ সংকট হিসেবে অভিহিত করে শ্রীলঙ্কায় গত সপ্তাহের নারকীয় হত্যাযজ্ঞের পর এ সতর্কবাণী উচ্চারণ করেন তিনি।
টাইমস অব ইন্ডিয়া জানায়, চলতি বছর ফেব্রুয়ারিতে কলকাতার বাবুঘাট এলাকা থেকে আরিফুল ইসলাম নামে এক জেএমবি সদস্যকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আরিফুল ২০১৮ সালের বুদ্ধগয়া বিস্ফোরণের অন্যতম অভিযুক্ত। এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা জানান, এই বিস্ফোরণ ঘটানোর আগে গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা ভারতের আসামের চিরাঙ জেলায় স্থাপিত একটি জঙ্গি প্রশিক্ষণ শিবিরে প্রশিক্ষণ নেয়ার কথা স্বীকার করে।
গত বছরের জুলাইতে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থাও (এফবিআই) পশ্চিমবঙ্গের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) হাতে গ্রেপ্তার হওয়া আইএস-জেএমবির সদস্য মোহাম্মদ মুসিরউদ্দিন ওরফে মুসার বিষয়ে তদন্ত করে। মুসিরউদ্দিন দীর্ঘদিন ভারতের তামিলনাড়– রাজ্যের ত্রিপুর জেলায় আত্মগোপনে ছিলেন। গ্রেপ্তারের পর জানা যায়, জেএমবি নেতা আমজাদ শেখের সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। ২০১৪ সালে বর্ধমান বিস্ফোরণের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। সূত্র : দেশ টিভি