নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( বন্দর সংবাদ দাতা ) : বন্দর থানা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খান মাসুদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন গণমাধ্যমে অপপ্রচারের প্রতিবাদ জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২৪ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৫ টায় বন্দর খানবাড়ীস্থ খান মাসুদ এর বাস ভবনে বন্দর থানা ও সকল ইউনিয়ন ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ, ছাত্রলীগ এবং যুবলীগ কমিটির নেতৃবৃন্দরা এ সংবাদ সম্মেলন করেন।
সম্মেলনে গণমাধ্যমকর্মীদেরকে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন শোনান জেলা ছাত্রলীগ এর সাবেক সহ-সভাপতি এ্যাড. মো. জাহাঙ্গীর আলম।
লিখিত বক্তব্যটি প্রকাশ করা হলো :
প্রিয় সাংবাদিক ভাই
আসসালামু আলাইকুম
গণমাধ্যম দেশের চতুর্থ স্তম্ভ। দেশ পরিচালনায় গণমধ্যমের ভূমিকা অপরিসীম। সত্য সংবাদের মধ্যমে দেশের উন্নয়ন, সঠিক ইতিহাস, ন্যায় বিচারসহ দেশ ও দশের উন্নয়ন করে চলেছে গণমাধ্যম। আর এ পেশার কর্মী আপনারা সাংবাদিক ভাইয়েরা। আজ আপনাদের সামনে আমরা হাজির হয়েছি অনেক দু:খ ভারাক্রান্ত হৃদয় নিয়ে।
আপনারা জানেন নারায়ণগঞ্জ বন্দরের ঐতিহ্যবাহী খান পরিবারের কথা। ১৯৭১ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ডাকে খান পরিবারের কৃতি সন্তান মরহুম বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহাবুদ্দিন খান সবুজ মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ে ছিলেন। তিনি যুদ্ধকালীন কমান্ডারও ছিলেন। খান পরিবারের আরেক কৃতি সন্তান মরহুম জয়নাল আবেদীন খান অত্র এলাকার আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন, তিনি সুনামের সাথে অত্র এলাকার কমিশনারের দায়িত্ব পালন করেন।
আপনারা আরো জানেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু হত্যার পর এদেশে কেউ তার নাম বা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নাম মুখে নিতে পারত না। যারা আওয়ামী লীগের নাম মুখে নিত তাদের মামলা হামলা দিয়ে এলাকা ছাড়া করেছিলো। আজ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ রাষ্ট্র ক্ষমতায় আমরা তৃণমূল আওয়ামী লীগ একটু প্রশান্তিতে থাকবো। কিন্তু দু:খের বিষয় জামাত বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশ করে তৃণমূল আওয়ামী লীগকে নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে যা দু:খজনক।
আপনারা জানেন, বন্দরের ঐতিহ্য খান পরিবারের কৃতি সন্তান ছাত্রলীগ নেতা খান মাসুদের কথা। জামাত বিএনপি থেকে আগত একটি চক্র ছাত্র লীগ নেতা নেতা খান মাসুদকে নিয়ে আবারো গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। বিভিন্নভাবে অপপ্রচার চালিয়ে তাকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে নানা কুট-কৌশল করছে। খান মাসুদ দলের দু:সময়ে আন্দোলন সংগ্রামের প্রতিটি কর্মসূচিতে রাজপথে সদলবলে সক্রিয় ভাবে দায়িত্ব পালন করেছেন এখনো করছেন। তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জন্য একজন নিবেদিত প্রাণ। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ সৈনিক। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করার লক্ষে নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলীগের অভিভাবক জননেতা এ.কে.এম শামীম ওসমান ভাইয়ের নেতৃত্বে দলের নিয়ম নীতি মেনেই খান মাসুদ রাজনীতি করে আসছেন। তৎকালীন জামায়াত বিএনপি জোট সরকারের নিপীড়ন নির্যাতনের প্রতিবাদে হরতালের মতো কর্মসূচিতে লাঠি চার্জ টিয়ারসেলসহ পুলিশের নানা বাধা উপেক্ষা করে নিজ কর্মী নিয়ে সামনে থেকে শহরে মিছিলের নেতৃত্বে ছিলেন খান মাসুদ। জামাত বিএনপি জোট আমলে এলকায় আওয়ামীলীগের নাম নিতে যখন মানুষ ভয় পেত সে সময়ে খান মাসুদের মতো ত্যাগী নেতারাই জামায়াত বিএনপি জোট সরকারের অন্যায়ের বিরুদ্ধে রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম করেছিলেন। ২০০১ সালে জননেত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে জামায়াত বিএনপি জোটের করা মামলার প্রতিবাদে সর্বপ্রথম বন্দরে রাজপথে বিক্ষোভ মিছিল করেন খান মাসুদ। সে সময় আন্দোলন সংগ্রামে রাজপথে সাহসী ভূমিকা দেখে একের পর বিপদের সম্মুখীন হতে হয়েছিল তৎকালীন উদয়ীমান ছাত্র নেতা খান মাসুদ। রাজপথ থেকে দুরে রাখতে ২০০৩ সালে নারায়ণগঞ্জ ৫-আসনের তৎকালীন বিএনপির এমপির নির্দেশে গ্রেফতার হন। নারায়ণগঞ্জে যুদ্ধাপরাধীদের নিষিদ্ধের দাবী নিয়ে ২০০৪ সালে রাজাকার দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর বন্দরে আগমনে বাধা সৃষ্টি করার দলীয় কর্মসূচিতে আওয়ামীলীগের নেতা কর্মীদের উপর পুলিশ বাহীনির বর্বর হামলায় অসংখ্য নেতা কর্মীসহ সেদিন গুরুতর আহত হয়েছিলেন খান মাসুদ। সে সময় হামলা মামলার ভয় উপেক্ষা করে শত শত কর্মী নিয়ে রাজপথে সাহসী ভূমিকা রাখায় সিনিয়র নেতাদের নজর কারেন খান মাসুদ। দলের দুঃসময়ে তাঁর সাংগঠনিক দক্ষতা দেখে ২০০৪ সালে কাউন্সিলর মাধ্যমে তিনি ছাত্রলীগের সাংগঠনিক পদ লাভ করেন। ছাত্রলীগের পদ পেয়ে তাঁর রাজনীতির গতি আরও বেড়ে যায়। বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ২০০৪ সালের ২১ আগষ্ট বর্বর গ্রেনেড হামলার প্রতিবাদে খান মাসুদের নেতৃত্বে কাফনের কাপর মাথায় বেধে রাজপথে বিশাল কর্মী সমর্থকদের নিয়ে বন্দরে ইতিহাসের সেরা হরতাল পালন করেন। পুলিশের হামলা মামলা উপেক্ষা করে রাজপথে প্রতিটি কর্মসূচিতে বিশাল কর্মীবাহিনী নিয়ে অংশগ্রহন ছিল চোখে পড়ার মতো। এছাড়াও জামাত বিএনপি জোটের পেটুয়া বাহীনির অত্যাচারে দিনের পর দিন পরিবার ছেড়ে ফেরারী জীবন কাটাতে হয়েছে খান মাসুদকে। ছাত্রলীগের রাজনীতির পাশাপাশি তরুন বয়স থেকেই তিনি জনগণের সেবায় সব সময় নিজেকে নিয়োজিত রাখতেন।
২০০৮ এর ১/১১ তে জামাতের বিএনপি কিছু অসাধু ব্যাবসায়ী বন্দর ১নং খেয়াঘাট পারাপারের টোল জন প্রতি ৫০ পয়সা থেকে বৃদ্ধি করে ১ টাকা করার পায়তারা করে। অসহায় গার্মেন্টস হোসিয়ারী শ্রমিকদের অনুরোধে টোল বৃদ্ধির প্রতিবাদে সেদিন খান মাসুদ তার নিজস্ব কর্মীদের নিয়ে র্যাব পুলিশের প্রচন্ড বাধা উপেক্ষা করে প্রতিবাদী কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলেন এবং সে আন্দোলনে সফল হন খান মাসুদ। কিন্তু বন্দর বাসীর দাবী আদায়ের সে আন্দোলনের চরম খেসারত দিতে হয়েছিল খান মাসুদকে। সে সময় রমজান মাসে রোজা রাখা অবস্থায় র্যাব ১১ কালী বাজার পুরান কোর্টস্থ র্যাব কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে নির্যাতন করা হয় খান মাসুদকে।
রাজনীতির নানা চড়াই-উৎরাই পার হয়ে আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় এসেও বার বার ষড়যন্ত্রের স্বীকার হতে হয়েছে দলের দুঃসময়ে রাজপথ কাপানো খান মাসুদকে। রাজনীতি থেকে সড়িয়ে দিতে ২০১৭ সালে পুনরায় নিল নকশার ষড়যন্ত্র শুরু হয়। ষড়যন্ত্রকারীদের মিশনে নিজ বাসভবন থেকে ঘুমন্ত অবস্থায় গ্রেফতার হয়ে নির্মম নির্যাতনের স্বীকার হয়ে মিথ্যা মামলায় কারাভোগ করেন খান মাসুদ। একই বছরের ১৪ই ফেব্রুয়ারী খান মাসুদের ভাগিনাদের সুন্নাতে খাতনা অনুষ্ঠানে নারায়ণগঞ্জের সুনামধন্য নেতৃবৃন্দের উপস্থিতি দেখে ঈর্ষান্বিত হয়ে কারাভোগের ৬ মাস না যেতেই আবারও ষড়যন্ত্রকারীদের সাজানো নাটকে র্যাবের এক সোর্সের মাধ্যমে পরিত্যক্ত ভবনের ৬তলার ছাদের উপরে অস্ত্র রেখে র্যাবকে খবর দিয়ে খান মাসুদকে গ্রেফতার করিয়ে মরন খেলায় মেতেছিলেন স্বার্থন্বেষী মহলটি। ষড়যন্ত্রকারীরা এখনো থেমে নেই।
সর্বশেষ চলতি মাসের ৬ সেপ্টেম্বর বন্দরে ঐতিহ্যবাহী খান বাড়িতে হামলা চালিয়ে বাড়িঘর ভাংচুর সহ ৩ জন আহত হন। এমপি সেলিম ওসমান ও শামীম ওসমান ভাইয়ের নির্দেশনায় বন্দর থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধ এম.এ রশিদ ভাইয়ের সমন্বয়ে বিষয়টি মিমাংসা হয়। কিন্তু মিমাংসার দু’দিন না যেতেই উল্টো খান মাসুদকে রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন্ করতে তাদের কতিপয় সাংবাদিকের মাধ্যমে মিথ্যা মনগড়া সংবাদ প্রকাশ করে আসছে যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বানোয়াট। এমন বানোয়ট একপেশি ধারাবাহিক সংবাদ প্রকাশ সত্যিই দুঃখজনক। আপনাদের মতো পেশাদার সাংবাদিক ভাইদের মাধ্যমে আমরা এধরনের অপপ্রচারের তীব্র নিন্দা প্রতিবাদ জানাই। সাংবাদিকরা হচ্ছে জাতির বিবেক কিন্তু কতিপয় অসাধু কয়েক সাংবাদিকের জন্য এমন এক মহান পেশার সুনাম ক্ষুন্ন হচ্ছে। আমরা আপনাদের বস্তুনিষ্ট সংবাদ প্রকাশের আশাবাদী। যেভাবে জামাত বিএনপির সন্ত্রাসীরা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশ করে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর দলকে ধংস করার ষড়যন্ত্র করছে তাদের চিহ্নিত করে সংবাদ প্রকাশ করলে আমরা তৃণমূল আওয়ামী লীগ প্রানে রক্ষা পাব নতুবা তৃণমূল আওয়ামী লীগ বলে কিছুই থাকবেনা। ফলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে রক্ষা করতে হলে তৃণমূল আওয়ামী লীগকে রক্ষা করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, বন্দর থানা যুবলীগ এর সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সাইদুল ইসলাম জুয়েল, কলাগাছিয়া ইউনিয়ন যুবলীগ’র সভাপতি মো. রুহুল আমিন, বন্দর থানা ছাত্রলীগ এর সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মুজাহিদুল ইসলাম বিপ্লব, বন্দর ইউনিয়ন ছাত্রলীগ এর সাবেক সভাপতি মো. ফয়সাল কবির, কলাগাছিয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শোয়েব মোহাম্মদ লিটন, মো. জামান, মো. আনোয়ার হোসেন, সাইদুল ইসলাম সাইদ, মাসুম আহাম্মোদ, শেখ মোমেন, মো. হোসেন, মো. মাকসুদ, মো. সুমন, জামান, মো. শাহ আলম, হাফেজ পাভেজ, সাইদুল ও হীরাসহ থানা ও সকল ইউনিয়ন, ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ নেতৃবৃন্দ।