নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( নিজস্ব প্রতিবেদক ) : নারায়ণগঞ্জ ৪ (ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনের আওয়ামীলীগ দলীয় সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান বলেছেন, এক খসড়া চার্জশীটের কথা বার বার বলা হচ্ছে। কিন্তু এটা আদৌ আইনে বলতে কিছু নাই। যারা ওই সময়ে র্যাবের কর্মকর্তারা এটা তদন্ত করেছিল তাদের প্রধান সাত খুন মামলায় এখন কারাগারে। মেজর আরিফ কার সঙ্গে কথা বলেছিল কার সঙ্গে কন্ট্রাক করেছিল সবই আমি জানি। কিছু বলি না যে আল্লাহর পথে চলে গেছি। ক্ষমাও করতাছি, ধৈর্য ধরতাছি। আল্লাহ এও বলেছেন, নাকের বদলে নাক, চোখের বদলে চোখ। যদি আগেরটা বেছে নেই তাহলে নারায়ণগঞ্জে কেউ ৫ মিনিটও দাঁড়াতে পারবে না। আমার কিছু করতে হবে না। জনগণই জবাব দিবে। কারণ জনগণের উপরে কারো কোন শক্তি নাই। ১০শে ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার বেলা ৩ টার দিকে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড সংলগ্ন ফতুল্লার লামাপাড়ায় এলাকায় নাসিম ওসমান মেমোরিয়াল (নম) পার্কে নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের সাথে সৌজন্য সাক্ষাত এবং মতবিনিময় সভায় তিনি এসকল কথা বলেন।
শামীম ওসমান আরও বলেন, রাস্তার পাশে ১০ বক্তব্য দিয়ে আমার চৌদ্দ গোষ্ঠী উদ্ধার করা হচ্ছে। নারায়ণগঞ্জের ত্বকী হত্যা নিয়ে দোকানদারি করা হচ্ছে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে তথ্য প্রমাণ সহ যতটুকু আমি জানি সংবাদ সম্মেলন করবো। আমি দাবী করবো হত্যাকান্ডের বিচার যেন ত্বরিৎ গতিতে হয়। আর যারা মানুষের জমি দখল করে খায়, ভূমিদস্যু, ইনকাম ট্যাক্সের ফাইলে নাই টাকা দুর্নীতি করে বাড়ি বানান আর মহারাণী হয়ে সাজেন, পেছন থেকে চানি দেন তাদের বলছি ধৈর্যের একটি সীমা আছে।
এমপি বলেন, আমি সকল হত্যার বিচার চাই। আমার ২০ হত্যা করেছে বিচার পাই নাই। আমার পারভেজ ও মাকসুদকে যারা হত্যা করেছে সেটা আমি জানতে চাইবো। তাই বলবো অত বেশী বাড়াবাড়ি করবেন না। যাতে জনগণ ক্ষেপে না যায়। জনগণ ক্ষেপে গেলে সুখকর হবে না। একটা রাজাকারের বাচ্চা আরেকটা লিপিস্টিক দিয়ে লুইচ্চামানি করছেন। ব্যাংক থেকে শুরু করে মেয়ে মানুষকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে কি করেছে, বাবুরাইলে জুতার বাড়ি খেয়ে কানে ধরে উঠবস করেছে তাদের মুখোশও সবাই জানে। এরা এখন সমাজপতি হওয়ার চেষ্টা করছে। আমি অচিরেই মূল তথ্য প্রমাণ সহ দ্রুত সকলকে জানাবো। আমাদের কর্মীরা সকলে ক্ষেপে আছেন, তাদের রাগ উঠে গেছে। তারা উত্তেজিত। বিভিন্ন সময়ে খারাপ কথা বলা হচ্ছে। আমাদের লোকজন প্রচন্ড রাগান্বিত তাদের বলছি ধৈর্য ধরে থাকেন। আগে সংবাদ সম্মেলনটি করি। তখন সব বলে দিব।
শামীম ওসমান বলেন, আমাদের নেক্সট জেনারেশনের জন্য আমাদের এখন থেকেই কাজ করতে হবে। প্রত্যেক এলাকার চেয়ারম্যান, মেম্বার সহ জনপ্রতিনিধি ও সকল দলের ভালো মানুষদের নিয়ে পঞ্চায়েত ব্যবস্থা করতে হবে। এমন ব্যবস্থা করা হবে যাবে থানার ওসি পুলিশকে অনেকটা বেকার থাকতে হয়। যাতে পঞ্চায়েতেই সকল শালিস ও এলাকার সবকিছু নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে।
তিনি বলেন, যখনই আপনি ভালো কাজ শুরু করবেন। অনেকের সাপোর্ট পাবেন। আবার দেখবেন নারায়ণগঞ্জের দুই একটি পত্রিকায়, সোশ্যাল মিডিয়াতে উল্টাপাল্টা মন্তব্য লেখা হবে। যখনই ভালো কাজ করবেন তখনই আপনাদের বিরুদ্ধে লেখা হবে। তাই ভালো কাজে বাধা আসবেই। মনে রাখবেন আপনাদের ভাই শামীম ওসমান আপনাদের সাথে থাকবে। ধাক্কা তো দূরের কথা একটি ফুলের পাপড়িও পড়তে দিব না। আগে আমার গায়ে পড়বে পরে আপনাদের গায়ে পড়বে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য আপনারা দোয়া করবেন। আল্লাহ যেন তাকে বেহেশত নসিব করেন বক্তব্যে যোগ করেন শামীম ওসমান।
কবরের মাটিতে শশ্মানের মাটি ফেলার বিষয়টি স্মরণ করে এমপি শামীম ওসমান বলেন, আমার বাবা মা ভাইয়ের কবর নিয়ে একটি ঘটনা ঘটেছিল। সেই কষ্টের কারণে আমি অসুস্থ। আমি তখন বলেছিলাম গোপনেও যেন আল্লাহর কাছে মাফ চেয়ে নেয়। কিন্তু করেনি। সে জিনিসটি এখনো মানতে পারি নাই। এ কারণেই আমি মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ি। নিজের জিদ উঠে যায়। নিজেকে কন্ট্রোল করি।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বিশ্বাস, নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রিফাত ফেরদৌস, ফতুল্লা থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ রকিবুজ্জামান, সদর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান নাজিমউদ্দিন আহমেদ, মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ নিজাম, নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন সাজনু, নারায়ণগঞ্জ মহানগর কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান লিটন, কাশিপুর ইউপি চেয়ারম্যান এম সাইফউল্লাহ বাদল, বক্তাবলী ইউপি চেয়ারম্যান এম শওকত আলী, এনায়েতনগর ইউপি চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান, গোগনগর ইউপি চেয়ারম্যান ফজর আলী, ফতুল্লা ইউপি চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান, কুতুবপুর ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুল আলম সেন্টু, জেলা পরিষদের সদস্য জাহাঙ্গীর আলমসহ সদর উপজেলার বিভিন্ন ওয়ার্ডের মেম্বার ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দরা।