নারায়ণগঞ্জে বার্তা ২৪ (সৈয়দ সিফাত লিংকন) : নারায়ণগঞ্জে শারদীয় দুর্গোউৎসবের মহাদশমীতে ব্যস্ত সময় পার করছে পুরোহীত ও ভক্তরা। শেষ মুহুর্তে দেবীকে বিদায় জানাতে ঢাক ঢোলের শব্দ, পুজো, অর্চনা আর উলু ধ্বনিতে মুখরিত প্রতিটি মন্ডপ। দর্শনার্থীদের আগমনেও নেয়া হয়েছে করোনা প্রতিরোধে সচেতনতামূলক নানা ব্যবস্থাও। শুধু তাই নয়, করোনা সতর্কে দেবীর হাতে ত্রিশূল এর পরিবর্তে এবারে দেখা গেছে সিরিঞ্জ ও নানা স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী। নারায়ণগঞ্জে শারদীয় দুর্গোৎউসবের জন্য পুরো জেলায় ১৯৯টি পূজা মন্ডপ স্থাপন করা হয়েছিল।
আজ সোমবার (২৬ অক্টোবর) বেলা ২টা থেকেই নারায়ণগঞ্জ ৫নং ঘাট এলাকায় শীতলক্ষা নদীতে সীমীত আনুষ্ঠানিকতায় শহরের নিকটবর্তী মন্ডপের প্রতিমা বির্সজন শুরু করেছে আয়োজকরা। প্রতি বছর দুষ্টের দমন ও সৃষ্টের পালনে মর্ত্যে নেমে আসেন দেবী। এ বছর করোনা-ই অসুর। প্রাণঘাতী এই ভাইরাস থেকে সৃষ্টিকে রক্ষা করতেই এসছিলেন দেবী । দেবীর ত্রিশুল দিয়ে ভেদ করে করোনাকে বিনষ্ট করে আবার ফিরে যাবেন তিনি। এমনটাই বিশ্বাসের কথা জানিয়েছেন দেবীর ভক্তগণ।
মহা ষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপূজাতে এবারে বাদ দেয়া হয়েছে অনেক আয়োজন। করোনা পরিস্থিতিতে উৎসবের চেয়ে অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে পূজাকেই। আজ মহালয়া দশমীতে অঞ্জলি, রং খেলা, পূজা আর অর্চনার মধ্য দিয়ে অশ্রু জলে এবার দেবীর বিদায়ের পালা। প্রতিবছর প্রসাদ হিসেবে খিচুড়ি বিতরণ করা হলেও এবার এই আয়োজনও অনেকস্থানে বাদ পড়েছে। সীমিত আকারে আনা হয়েছে দশমীর সিঁদুর খেলা। তবে এতে করে মোটেও অখুশি নন আয়োজক ও দর্শনার্থীরা।
সাধারণ মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধিতে স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতেই এমন উদ্যোগের কথা জানালেন বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ এর নারায়ণগঞ্জ জেলা সাধারণ সম্পাদক শিখন সরকার শিপন। তিনি বলেন, আজকে মহাদশমী, এজন্য শেষমুহুর্তে সকল প্রস্তুতী আমরা সম্পন্ন করেছি। আজ বিকালে নারায়ণগঞ্জের ৫নং ঘাটে প্রতিমা বির্সজন দেয়া হবে। এবারে করোনার প্রভাবে সবকিছু সীমীত হয়েছে, তবে আগামীতে করোনার প্রভাব না থাকলে প্রতিবারের মত আরো আনন্দঘন পরিবেশে হবে বলে আশাবাদি।
শহরের নগর খাঁনপুর এলাকার পূজা মন্ডপের আয়োজক উত্তম সাহা জানান, আমরা খুব সুন্দরভাবেই উৎসবটি পালন করতে পেরেছি। এতে কোন বাধা বিপত্তি হয়নি। কোথাও কোন ধরণের অপ্রিতীকর ঘটনা হয়নি। এছাড়াও আমরা বাংলাদেশ পূজা উদযাপন কেন্দ্রিয় কমিটির নির্দেশনায় জেলা উপজেলায় সকল পূজা মন্ডপ পরির্দশন করেছি। এবারে সীমীত পরিসরে উৎসবটি পালন করলেও আমরা খুবই আনন্দিত।