নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : সরকারী অর্থায়নে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর এর মাধ্যমে বাস্তবায়িত বন্দরে সরকারী কদম রসুল কলেজ এর নব নির্মিত ভবনের উদ্বোধন করা হয়েছে। শনিবার বেলা ১১টায় নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান উক্ত ভবনটির শুভ উদ্বোধন করেন।
উদ্বোধন শেষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এমপি সেলিম ওসমান বলেন, গত ১৬ মাসে অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে। এই ক্ষতি কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকাদেরকেই পূরণ করতে হবে। সরকারী কলেজে ইচ্ছা করলেই কিছু করা যায়না। ভবনটি উদ্বোধন করেও কষ্ট পেয়েছি। কম্পিউটার ল্যাব ও টোল টেবিল ছাড়াই ভবনটির উদ্বোধন করা হয়েছে। আমার কাছে কম্পিউটার ল্যাব এর জন্য লিখিত আবেদন দিবেন আমি কিভাবে এনে দিবো এটা আমার ব্যাপার। এই কলেজটি প্রথমে সাবেক এমপি কালাম ভাই শুরু করে ছিলেন। পরবর্তীতে আমার বড় ভাই প্রয়াত নাসিম ওসমান কলেজের উন্নয়নে হাত দিয়েছেন। উনার মৃত্যুর পর আমি যখন কলেজে আসি তখন কলেজ কমিটির কাছ থেকে আগে কলেজ নিয়ে নাসিম ওসমানের স্বপ্নের কথা জেনেছি এরপর সবাইকে সাথে নিয়ে কলেজটি উন্নয়নে সম্মিলিত ভাবে কাজ করেছি।
শিক্ষক-শিক্ষিকাদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, কলেজের শিক্ষার্থীদের ভাল ফলাফল করতে হবে। সে জন্য আপনাদেরকেই দায়িত্ব নিয়ে তাদের যতœসহকারে পাঠদান করতে হবে। দু:খ জনক হলেও সত্য শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মাঝেও কিছু দুর্বলতা আছে। দেখা যায় কোন শিক্ষক ছাত্রদের ইংরেজি পড়ান। কিন্তু উনাকের ইংরেজিতে বক্তব্য দিতে বললে উনি পারেন না। এমনটা হলে তো চলবে না। হয়তো প্রশিক্ষন নিয়ে নিজেদের যোগ্যতা বৃদ্ধি করেন নয়তো দায়িত্ব ছেড়ে দেন।
এর আগে বন্দর উপজেলার নির্বার্হী কর্মকর্তা শুক্লা সরকার এবং সাবেক চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মুকুল এমপি সেলিম ওসমানের কাছে কলেজের শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য দুটি বাস বরাদ্দ দেওয়ার অনুরোধ করেন। পরিপ্রেক্ষিতে এমপি সেলিম ওসমান বলেন, বাসের জন্য কলেজ থেকে আমাকে বিস্তারিত উল্লেখ করে লিখিত আবেদন দিবেন। আমি আশা করছি এই আবেদন আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠালে উনি অবশ্যই বাসের ব্যবস্থা করে দিবেন।
তিনি আরো বলেন, অচীরেই হয়তো নারায়ণগঞ্জ কলেজ এবং সরকারী কদম রসুল কলেজ বিশ্ব বিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হবে। এছাড়াও আগামী ১৫ থেকে ২০ তারিখের মধ্য নবীগঞ্জ গালর্স স্কুলের জন্য নব নির্মিত মিসেস নাসরিন ওসমান ভবনটির উদ্বোধন করা হবে।
সামনে আসন্ন নির্বাচন সম্পর্কে তিনি বলেন, সামনে নির্বাচন আসছে। ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারীর যে কোন সময় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আমি কাউরে নমিশেন দিতে পারবোনা। কারো জন্য বলতে পারবো না। আপনারা সাধারণ মানুষের জন্য কাজে নেমে যান। আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্ম তারা যেন ঠিকমত স্কুল কলেজ করতে পারে তার জন্য আপনারা বলেন্টিয়ার বাহিনী বানান। কোন বাচ্চা যেন মাস্ক ছাড়া স্কুলে না যায়। হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করে। সাধারণ মানুষের উপকারে নেমে যান। আপনাদের ভোট চাইতে হবে না। আপনারা যদি কাজগুলো ভাল করে করতে পারেন আপনাদের বিপরীতে কোনো ক্যান্ডিডেট থাকবে না। কিন্তু এমন যেন না হয় যখন নাকি নতুন করে জীবন শুরু হলো তখন কেউ কেউ যদি কক্সবাজারে বেড়াতে যান এলাকা রেখে এটা কিন্তু ভাল হবে না। আপনি আমার যত ভাল মানুষই হন না কেন আপনাকে প্রশ্রয় দিব না। এটাকে সম্পূর্ণ প্রতিষ্ঠিত করার পরে তার পরে আপনি বেড়াতে যাবেন। তারপর আপনি দুবাই কক্সবাজার যাইয়েন। ১৬ মাস আপনি হয়রান হয়ে গেছেন?
আপনাকে কক্সবাজারে গিয়ে সমুদ্রের পানি খাইতে হবে। আমি এটা অ্যালাউ করবো না। আজকের পর থেকে প্রত্যেকটা চেয়ারম্যান প্রত্যেকটা কমিশনার যে যেই দলেরই হোক না কেন এলাকার মানুষের জন্য যারা করবে তাদেরকে আমরা নির্বাচিত করবো আগামীতে। অতীতের ইতিহাস চেয়ারম্যান কাউন্সিলর মেম্বারদের আমার মনে হয় না বাংলাদেশের কোথাও এত ভাল সার্ভিস কেউ দিয়েছে। তার জন্য তারা যেন এটা মনে না করে আমরা তো ভাল সার্ভিস দিয়েছি আমরাই তো ভোট পাবো। শেষ সময়ে মানুষের উপকারে আসেন ভবিষ্যত প্রজন্মের উপকারে আসেন। আপনাদের নির্বাচন দরকার হলে আমি করবো। আমি জনগণের কাছে গিয়ে ভোট চাইবো। কে কোন মার্কায় করবেন এটা আমার কাছে কোনো বিষয় না। আজকের এই অনুষ্ঠান কোনো আওয়ামী লীগ জাতীয় পার্টি বিএনপির না। এটা ৫ হাজার ভবিষ্যত প্রজন্মের সভা। তারা যেন মানুষ হতে পারে।
বন্দর থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও বন্দর উপজেলার চেয়ারম্যান এম এ রশিদ বলেন, এমপি সেলিম ওসমানের কল্যাণে কদম রসুল কলেজটা পুনরায় ঘুরে দাড়িয়েছে। শিক্ষা খাতের উন্নয়নে তিনি ব্যক্তিগত তহবিল থেকে ৭টি ইউনিয়নে ৭টি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছেন। উনার কারনেই কদম রসুল কলেজ সরকারী হয়েছে শিক্ষার্থীরা কম খরচে লেখাপড়া করতে পারছে। শিক্ষাখাতে উনি নজির বিহীন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।
আলোচনা অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন বন্দর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান ও জেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক সানাউল্লাহ সানু, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ২৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আফজাল হোসেন, ২৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাইফুদ্দিন আহম্মেদ দুলাল প্রধান, বন্দর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এহসান উদ্দিন। আরো উপস্থিত ছিলেন মুছাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেন, ধামগড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাসুম আহম্মেদ, কলাগাছিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন প্রধান সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ ও এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিরা।