নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( সৈয়দ সিফাত লিংকন ) : শহরের বাজারগুলোতে ওজন স্কেলের ফাঁদে ঠকছেন ক্রেতারা। প্রতি স্কেলে কেজি প্রতি ১০০-২০০ গ্রাম কম। এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজিতে বাজারে প্রতারণার ছাপ পড়েছে। অধিক মুনাফা লোভী অসৎ ব্যবসায়ী চক্র ওজনে কম দিয়ে ক্রেতা সাধারণদের সাথে প্রতারণা করছে। বিশেষ করে মাছ, মুরগি, মাংস ও ফলের দোকানগুলোতেই চলছে ওজনে ঠকানোর কারবার, ক্রেতারা পণ্য ক্রয়ের পর বিশ্বস্ত কোনো দোকানে তা পুনরায় ওজন করলে দেখা যায় পরিমাণ কম থাকে। এ নিয়ে ক্ষোভ থাকলেও বিক্রেতাদের কাছে অসহায় ক্রেতারা। প্রতিবাদ করতে গেলে বিক্রেতাদের নানা যুক্তির পর অনেক ক্রেতারাই হয় নাজেহালের শিকার।
শহরের দিগু বাবুর ও কালির বাজারে কয়েকজন ভুক্তভোগীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, এক শ্রেণীর অসাধু মুরগী ব্যবসায়ী চক্র বিভিন্নভাবে ক্রেতাদের প্রতারিত করছে। যারা মুরগীর ওজন বৃদ্ধির অশুভ প্রতিযোগিতায় নেমেছে। মুরগীর ওজন বৃদ্ধির লক্ষে মাত্রাতিরিক্ত খাদ্য খাওয়াচ্ছে। কৃত্রিমভাবে সিরিঞ্জের মাধ্যমে খাদ্য খাওয়ানো কখনও কখনও এক কেজি মুরগীর ওজন এক কেজি চারশত গ্রাম পর্যন্ত পৌঁছায়।
ভুক্তভোগী ক্রেতাদের অভিযোগ এসব বাজার থেকে ক্রয় করা কৃত্রিম ভাবে খাদ্য খাওয়ানো মুরগী বাড়ীতে নিয়ে জবাই করলে রক্ত অপেক্ষা কৃত্রিম খাদ্য গড়িয়ে পড়ার দৃশ্য প্রতারক চক্রদের অভিশাপ দিয়ে চলেছে। ওজন বৃদ্ধির পাশাপাশি ওজনে ঠকানোর প্রতিযোগিতায় নেমেছে অসাধু মুরগী ব্যবসায়ীরা। এই অসাধু মুরগী ব্যবসায়ী চক্র পাকিস্তানী, সোনালী এবং অস্ট্রেলিয়ান মুরগীকে দেশী মুরগী হিসেবে বিক্রি করে ক্রেতা সাধারণের সাথে প্রতারণা করছে। ক্রেতা সাধারণকে ঠকানোর ক্ষেত্রে কথিত অসাধু ব্যবসায়ীদের অশুভ কর্মকান্ড এবং প্রতারণায় ক্রেতা সাধারণ প্রতিনিয়ত প্রতারিত হচ্ছে। আর এর প্রতিকার চেয়ে বাজার ও দোকানগুলিতে অবিলম্বে ক্রেতা বেশে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনার দাবি জানিয়েছে তারা।
জানা গেছে, মুরগী ও মাছের দোকানগুলোতে ডিজিটাল স্কেলে ওজনে কম দেওয়ার সুযোগের মূল কারণ হচ্ছে, এসব ভোগ্যপণ্য ওজনের পর বিক্রেতা নিজেই তা জবাই করে কেটে-কুটে পরিষ্কার-করে দিচ্ছে। ফলে ওজনে কম দেওয়ার বিষয়টি অধিকাংশ ক্ষেত্রে যাচাই করার সুযোগ পাচ্ছেন না ক্রেতারা। ওজন করার পর বিনে পয়সায় মাংস কুটে দিচ্ছে কতিপয় বিক্রেতারা। এ সুবাদে পঁচা-বাসী মাংসও মিশিয়ে দিচ্ছে। ফলের দোকান, তরিতরকারির দোকানের প্রতিটি স্কেলেও ওজনে চলছে কৌশলী কারচুপি।
এই বিষয়ে এক মুরগী ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ভাই প্রতিটি ব্যবসার একটি গোমড় থাকে। সব কি বলে দেয়া যায়। আপনি পরিচিত তাই মুরগি গুলি কমেই পাইসেন। এগুলি আপনি দেইখা ১কেজি তিনশত গ্রাম হইসে। অন্য কাস্টমার নিলে আরো বেশী ওজন হইত দাম হইতো অনেক বেশী।
এদিকে এক ফল বিক্রেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ব্যবসা করি লাভের আশায়। কিন্তু ফল তো পচনশীল জিনিস। সবমিলিয়ে টিকে থাকতে হলে ওজনে কম দিতেই হবে। তা নাহলে কেউ ফলের ব্যবসা করতে পারবে না। ডিজিটাল স্কেলে কম দেওয়ার পদ্ধতি কি জানতে চাইলে তিনি বলেন, কেন স্কেলের ভেতরে ওজনের স্প্রিংয়ের সাথে ১৫০-২০০ গ্রাম ওজনের কোনো কিছু লাগিয়ে দিলে তো হয়।